বেসরকারি একটি প্রতিষ্ঠানে সেলস ম্যানেজার হিসেবে কাজ করেন সিয়াম আহমেদ। সকাল সাড়ে ৯টায় অফিসের উদ্দেশে বেরিয়েছেন। গন্তব্য রাজধানীর মহাখালীর টিবি গেট। বাসাবো থেকে ৯টা ৪০ মিনিটে নূরে মক্কা নামের একটি বাসে উঠেছেন। এরপর মালিবাগ পৌঁছানোর পরই সড়কে অস্বাভাবিক যানজটের কবলে পড়েন। এরপর থেকে বাস থেমে থেমে কচ্ছপ গতিতে চলছিলো। এতে দুর্ভোগে পড়েন এই যাত্রী। মালিবাগ থেকে রামপুরা ব্রিজ ১০ মিনিটের রাস্তা পেরোতে তার সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা! সিয়াম জানান, রাস্তা ফাঁকা থাকলে রামপুরা ব্রিজ আসতে ১০ মিনিট সময় লাগে। হঠাৎ যানজটের কারণে আজ এত সময় লেগেছে। নির্দিষ্ট সময়ে অফিসে যেতে না পারায় জরিমানাও গুণতে হবে তাকে
সড়কের এই অস্বাভাবিক যানজটের কারণে অতিষ্ট তিনি।
সজিব আহমেদ নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, প্রতিদিনই যানজটের ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের। কিন্তু আজ অতিরিক্ত যানজট লেগেছে। মালিবাগের পর থেকে গাড়িই চলতে পারেনি। বাস থেকে নেমে হেঁটেও তাড়াতাড়ি যাওয়া যেত।
সকালে ৮টার পর থেকেই রাজধানীর মালিবাগ, রামপুরা, বাড্ডা, নতুন বাজার ও যমুনা ফিউচার পার্কের রোডে যানজট লেগেই থাকে। এই রাস্তা পেরোতে যাত্রীদের ঘন্টার পর ঘন্টা বাসে বসে থাকতে হয়। এতে অফিসগামী যাত্রীরা নিয়মিত ভোগান্তির মধ্যে পড়েন। শিক্ষার্থীরাও সময়মতো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হতে পারেন না। নগরীর সড়কে এই তীব্র যানজটে অতিষ্ট মানুষ। এরমধ্যে মাঝেমধ্যে অস্বাভাবিক যানজট সৃষ্টি হলে ভোগান্তির মাত্রা কয়েকগুণ বেড়ে যায়।
জুলফিকার আলি নামের এক যাত্রী জানান, প্রতিদিন মালিবাগ, রামপুরা আর বাড্ডা এলাকায় যানজটের মধ্যে পড়তে হয়। বাসাবো থেকে তার যমুনা ফিউচার পার্ক যেতে দুই ঘন্টার মতো লেগে যায়। অথচ ছুটির দিনে মাত্র ৩০ মিনিটেই গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন তিনি। এরমধ্যে অস্বাভাবিক যানজট সৃষ্টি হলে ৩/৪ ঘন্টাও লেগে যায় বলে জানান তিনি। জুলফিকার বলেন, রাস্তায় জ্যামের জন্য এত সময় নষ্ট হওয়াতে আমাদের কর্মঘণ্টা কমে যাচ্ছে। জীবন থেকে বড় একটা সময় অযথা চলে যাচ্ছে।
একই ভোগান্তির কথা জানান সোহাগ মিয়া। তিনি মোটরসাইকেলে একটি প্রতিষ্ঠানের পণ্য ডেলিভারি করেন। সোহাগ বলেন, আজ রাস্তায় অনেক যানজট। বাইক নিয়েও যাওয়ার উপায় নেই। রোদের মধ্যে যানজট লাগলে খুব সমস্যা হয়। আমরা সময় মতো পণ্য ডেলিভারি দিতে পারি না। কাস্টমার রিভিউ খারাপ দেয়।
হঠাৎ অস্বাভাবিক যানজটের বিষয়ে বাড্ডায় দায়িত্বরত সার্জেন্ট নাজমুল হক বলেন, আজকে পুরো শহরে গাড়ির চাপ বেশি। বিজয় সরণীর দিকে চাপ ছিলো অনেক। বাড্ডা লিংক রোড থেকে গুলশানের দিকে গাড়ি যেতে পারছে না। এজন্য আজ রামপুরা রুটে যানজট বেশি লেগেছে। তবে ধীরে ধীরে সব স্বাভাবিক হচ্ছে।