ঢাকা, ৯ জুন, ২০১৮ : জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থায় (লিগ্যাল এইড অফিস) দ্ররিদ্র ও সুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের আইনগত সহায়তা দেয়া হচ্ছে।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থার সহকারি পরিচালক ও সিনিয়র সহকারি জজ কাজী ইয়াসিন হাবিব বাসস-এর সঙ্গে আলাপকালে বলেন, “দরিদ্র ও সসুবিধাবঞ্চিত শ্রমিকদের আইনগত অধিকার প্রতিষ্ঠায় জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা ২০১৩ সালে ঢাকার শ্রম আদালতে ও ২০১৬ সালে চট্রগ্রাম শ্রম আদালতে শ্রমিক আইন সহায়তা সেল স্থাপন করেছে। পর্যায়ক্রমে দেশে বিদ্যমান সকল শ্রম আদালতে শ্রমিক আইন সহায়তা সেল স্থাপিত হবে।”
তিনি বলেন, লিগ্যাল এইডে ২০১৭ সালের অক্টোবর পর্যন্ত ৮১১৩ জন শ্রমিককে আইনগত সহায়তা দেয়া হয়েছে। নোটিশের মাধ্যমে ৩৮৭টি বিরোধ নিস্পত্তি করে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রায় ৯৭ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা পক্ষসমূহের সম্মতির ভিত্তিতে লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তি হচ্ছে। মার্চ ২০১৮ পর্যন্ত প্রায় ২ হাজার ৬শ’ মামলা এডিআর’র মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা হয়েছে এবং বিরোধে প্রায় ৩ কোটি ৫৩ লাখ টাকা আদায় হয়েছে বলে বাসস’কে জানান
তিনি জানান, বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিস্পত্তির ফলে আদালতে মামলা জট হ্রাসে সহায়ক হচ্ছে। পক্ষসমূহ তথা বিচারপ্রার্থী মানুষও উপকৃত হচ্ছে। লিগ্যাল এইড অফিসে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিস্পত্তি শুরুর পর পক্ষসমূহ এখন মামলা নিস্পত্তিতে আগ্রহী হচ্ছে। দিনে দিনে বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিস্পত্তির জন্য লিগ্যাল এইড অফিসে বিচারপ্রার্থীদের ভিড় বাড়ছে।
দেশের দরিদ্র ও অসর্থ জনগোষ্ঠী, শ্রমিক, সহিংসতার শিকার নারী-শিশু এবং পাচারের শিকার মানুষের জন্য আইনি সেবা নিশ্চিতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকার ২০০০ সালে আইন প্রণয়নের মধ্যদিয়ে এর যাত্রা শুরু করে। পরে এই আইনের অধীনে বিভিন্ন বিধি প্রণীত হয়। বিধিতে কারা আইনি সহায়তা পাবেন তা নির্ধারণ করা হয়। দেশের ক’টি জেলা আদালত, চৌকি আদালত এবং সুপ্রিমকোর্টের লিগ্যাল এইড সার্ভিস চালু রয়েছে।
ইয়াসিন হাবিব জানান, গত ২৮ এপ্রিল দেশে ষষ্ঠবারের মতো ‘জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবস’ পালিত হয়। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য বিষয় ছিল- ‘উন্নয়ন আর আইনের শাসনে এগিয়ে চলছে দেশ/ লিগ্যাল এইডের সুফল পাচ্ছে সারা বাংলাদেশ।’ দিবসটি যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশব্যাপি পালিত হয়। তিনি জানান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসগুলোকে এখন শুধু আইনি সহায়তা প্রদানের কেন্দ্র হিসেবেই সীমাবদ্ধ রাখা হয়নি, মামলা জট কমানোর লক্ষ্যে এ অফিসগুলোকে ‘এডিআর কর্ণার’ বা বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির কেন্দ্রস্থল’ হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। প্রতিটি জেলায় লিগ্যাল এইড অফিসার নিয়োগ হচ্ছে। লিগ্যাল এইডের সুফল পৌঁছে দিতে এর কার্যক্রম জোড়দার করা হচ্ছে।