রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি

রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সর্বশেষ পরিস্থিতি

তিনি জানিয়েছেন, রাশিয়ার সেনারা ক্রমশ শহরের ভেতরে ঢুকে পড়ছে। এই শহরটিও তারা দখল করে নিয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি। এর আগে এই অঞ্চলে আরো বেশ কিছু এলাকা রাশিয়া দখল করে নিয়েছিল।

তবে শহরটির প্রতিবেশী অঞ্চলগুলো এখনো ইউক্রেনের দখলে আছে বলে জানিয়েছেন গভর্নর। সেখান থেকে বেসামরিক মানুষদের দ্রুত অন্যত্র পাঠানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তিনি। একইসঙ্গে ইউক্রেনের এই পরিস্থিতির জন্য জার্মানি এবং হাঙ্গেরিকে দায়ী করেছেন তিনি। তার বক্তব্য, তারা সময় মতো অস্ত্র সরবরাহ করলে তাদের এভাবে রাশিয়ার হাতে নিজেদের শহর ছেড়ে দিতে হতো না।

 

জেলেনস্কির আবেদন

ব্রাসেলসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সভায় গতকাল সোমবার ভিডিও বক্তৃতা দিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। তার বক্তৃতা দিয়েই এদিনের অধিবেশন শুরু হয়েছে। সেখানে ইউরোপীয় নেতাদের কাছে কাতর আর্জি জানিয়েছেন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট।

তার বক্তব্য, ইউরোপ যদি ঐক্যবদ্ধভাবে রাশিয়ার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেয়, রাশিয়া তাহলে তা নিজেদের জয় হিসেবে দেখবে। বস্তুত, রাশিয়ার বিরুদ্ধে এখনো পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধভাবেই ব্যবস্থা নিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। কিন্তু ষষ্ঠ নিষেধাজ্ঞার প্যাকেজ নিয়ে মতানৈক্য শুরু হয়েছে। এই প্যাকেজেই তেলের ওপর এমবার্গো বা নিষেধাজ্ঞার কথা বলা হয়েছে।

হাঙ্গেরির নেতৃত্বে স্লোভাকিয়া, চেক রিপাবলিক, বুলগেরিয়ার মতো দেশগুলো ওই নিষেধাজ্ঞা মানতে রাজি হচ্ছে না। জেলেনস্কির বক্তব্য, এখন নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাশিয়ার ওপর ইউরোপের চাপ দেওয়ার সময়। কিন্তু ইউরোপ যদি নিজেরাই ঐক্যবদ্ধ হতে না পারে, তাহলে রাশিয়া তা জয় হিসেবে ধরে নেবে।

রাশিয়ার গ্যাস বন্ধ নেদারল্যান্ডসে

৩১ মে থেকে রাশিয়ার গ্যাস আর নেওয়া হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছে নেদারল্যান্ডসের গ্যাস কোম্পানি। দেশের প্রশাসন জানিয়েছে, তাদের কাছে যথেষ্ট পরিমাণ গ্যাস মজুত আছে। নেদারল্যান্ডসের গ্যাস কোম্পানি জানিয়েছে, তাদের গ্যাস নেওয়ার জন্য রাশিয়ার গ্যাস কোম্পানি গ্যাজপ্রোম যে শর্ত দিয়েছিল, নেদারল্যান্ডসের পক্ষে তা মেনে নেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণেই ৩১ মে থেকে তারা আর গ্যাস নেবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে।

রাশিয়ার শর্ত ছিল, রুবলে নেদারল্যান্ডসকে গ্যাস কিনতে হবে। কিন্তু নেদারল্যান্ডস তা মানতে চায়নি।

ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মিসাইল নয়

ইউক্রেনকে দূরপাল্লার মিসাইল দেওয়া হবে না জানিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। হোয়াইট হাউসে তিনি বলেছেন, ইউক্রেনের হাতে এমন মিসাইল দেওয়া হবে না যা রাশিয়ার শহর ধ্বংস করতে পারে। বস্তুত, কিছুদিন আগেই দূরপাল্লার মিসাইল চেয়েছিল ইউক্রেন। মাল্টিপল লঞ্চ রকেট সিস্টেম বা এমএলআর চেয়েছিল তারা। এই রকেটের সাহায্যে একশ কিলোমিটার দূরত্বের লক্ষ্যে আঘাত করা যায়। অর্থাৎ, ইউক্রেন এই অস্ত্রের সাহায্যে রাশিয়ার ভেতরে আঘাত হানতে পারে। সে জন্যই তাদের এই অস্ত্র দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন বাইডেন।

এর আগে একাধিক ইউরোপের দেশও জানিয়েছিল, রাশিয়ার ভেতরে আঘাত হানা যায়, এমন অস্ত্র ইউক্রেনের হাতে তুলে দেওয়া উচিত হবে না। বাইডেনের এই বক্তব্যকে স্বাগত জানিয়েছে রাশিয়া।

দক্ষিণ ওশেটিয়ার ভোলবদল

জর্জিয়ার অন্তর্গত দক্ষিণ ওশেটিয়া অনেকদিন আগেই নিজেদের স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে। বস্তুত, ২০০৮ সালে জর্জিয়ার সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধে ওশেটিয়া নিজেদের স্বাধীন বলে ঘোষণা করে এবং রাশিয়া তাদের স্বাধীনতা স্বীকার করে। জর্জিয়া অবশ্য ওশেটিয়ার স্বাধীনতা স্বীকার করেনি।

সম্প্রতি সেই দক্ষিণ ওশেটিয়ায় গণভোট হওয়ার কথা ছিল। তারা রাশিয়ার অংশ হবে কি না, তা নিয়ে ভোট হওয়ার কথা ছিল। প্রাথমিকভাবে মে মাসে ভোট হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেই ভোট যিনি ঘোষণা করেছিলেন, কিছুদিন আগে তাকে ক্ষমতা থেকে সরে যেতে হয়। বর্তমান নেতা ভোট পিছিয়ে দিয়ে জুলাই মাসে করেছিলেন।

কিন্তু এখন প্রশ্ন উঠেছে, আদৌ ভোট হবে কি না তাই নিয়েই। রাশিয়ার বিরুদ্ধে গোটা বিশ্ব এতো ব্যবস্থা নিচ্ছে যে, এই পরিস্থিতিতে তারা গণভোটে যাবে কি না এবং রাশিয়ার অন্তর্গত হওয়ার সিদ্ধান্ত নেবে কি না, তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। আপাতত সেখানে ভোট হবে না বলেই মনে করা হচ্ছে।

আন্তর্জাতিক