টানা ৬১ ঘণ্টা পর চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডের বিএম কনটেইনার ডিপোর আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে। যদিও কয়েকটি কনটেইনারে এখনও জ্বলছে আগুন। সেখান থেকে আর বড় বিস্ফোরণের সম্ভাবনা নেই। এছাড়া ঘটনাস্থল থেকে আরও ২ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। ফলে নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে। তবে লাশের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
মঙ্গলবার (৭ জুন) বেলা সাড়ে ১১টায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের ১৮ ব্রিগেডের কমান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট কর্নেল আরিফুল ইসলাম হিমেল আগুন নিয়ন্ত্রণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, গত রোববার সকাল থেকে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ পদাতিক ডিভিশনের প্রায় দুই শতাধিক সদস্য বিস্ফোরণের ঘটনাস্থল ও হাসপাতালে কাজ করছেন। ডিপোতে এসে আমরা ফায়ার সার্ভিসকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করার চেষ্টা করেছি। এখন যে আগুনটা আছে তা প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে। আগুন নিয়ন্ত্রণ করতে আমাদের কিছুটা সময় বেশি লেগেছে। কারণ, এলাকাটা অনেক বড়।
প্রায় ২৬ একর জায়গায় ডিপোটি। এখানে কনটেইনারের সংখ্যা ৪ হাজারের বেশি। কনটেইনারগুলো একটির পর আরেকটি লাগানো ছিল। কনটেইনারগুলো নিচে নামিয়ে কাজ করতে সময় লাগে।
সেনাবাহিনীর এই কর্মকর্তা বলেন, জ্বলন্ত কনটেইনারের পাশে কিছু ভালো কনটেইনার ছিল। সেগুলো আমরা পৃথক করে রেখেছি। যাতে আগুনটা আর না বাড়ে এবং ক্ষয়ক্ষতি না হয়। আগুন প্রায় পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে। এখান থেকে আর কোনোভাবে আগুন ছড়ানোর সুযোগ নেই।
এদিকে ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা যায়, আগুন নিয়ন্ত্রণের পর মূল অগ্নিকাণ্ডের স্থান থেকে দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া বেশ কয়েকটি হাড়ের খণ্ড শনাক্ত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর একটা কনটেইনারে রাত সাড়ে ৯টার দিকে আগুন লাগে। সঙ্গে সঙ্গে ডিপো কর্তৃপক্ষ ফায়ার সার্ভিসকে খবর দেয়। ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে এসে স্বাভাবিক নিয়মে পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছিল। এরপর ৪০ মিনিটের মাথায় বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এই বিস্ফোরণের তীব্রতা এতোই বেশি ছিল যে, আশপাশের কয়েক কিলোমিটার এলাকা তীব্রভাবে কেঁপে ওঠে।
এই ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ৪১ জনের লাশ পাওয়ার তথ্য জানিয়েছেন প্রশাসন। আজ আরও দুটি লাশ উদ্ধার হওয়ায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪৩ জনে।