সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি রাসায়নিকের তথ্য গোপনে এত প্রাণহানি

সীতাকুণ্ড ট্রাজেডি রাসায়নিকের তথ্য গোপনে এত প্রাণহানি

কাপড় ও কেমিকেল কন্টেইনার পাশাপাশি রাখার কারণে সীতাকুণ্ডের বিএম ডিপোর আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এরপর তা হাইড্রোজেন পার অক্সাইড ভর্তি কন্টেইনার পর্যন্ত পৌঁছালে ঘটে ভয়াবহ বিস্ফোরণ।

কাপড়ের কন্টেইনারে আগুনের কথা বলে ডাকা হয় ফায়ার সার্ভিসকে। ঘটনাস্থলে পৌছানোর পরও জানানো হয় নি কেমিকেলের কথা। সেখানে ছিল না পানির মজুদ কিংবা নিজস্ব অগ্নিনির্বাপন ব্যবস্থাও।

ফায়ার সার্ভিস জানায়, তাদের প্রথমে জানান হয় কাপড়ের কন্টেইনারে আগুন লেগেছে। তাই তারা কেমিকেলের আগুন নেভানোর জ্যাকেট-হেলমেটসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি সঙ্গে আনেন নি।

তথ্যে গরমিল থাকায় কেমিকেলের আগুন নেভাতে ৪৫ মিটার দূরে থাকার নিয়মও মানেন নি ফায়ার কর্মীরা।

১৯৮১ সালে অধিদফতর করার পর একসঙ্গে এতো বড় প্রাণহানি দেখলো ফায়ার সার্ভিস। আগুন নেভাতে গিয়ে গত ৪১ বছরে প্রাণ গেছে ১৭ জনের। আর বিএম ডিপোর এক আগুনেই এ পর্যন্ত নিহত ১২ জন। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন আরও দুই জন।

এফএসসিডি মিডিয়া সেলের ইনচার্জ শাহজাহান সিকদার বলেন, ডিপোটিতে মজুদের নিয়ম-কানুনও মানা হয়নি। কেমিকেল মজুদের মূল তিনটি নিয়ম- সেপারেশন, সেগ্রিগেশন ও আইসোলেশন কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করা হয়নি।

সেখানে চারটি কন্টেইনারে রাসায়নিক ছিল বলে সোমবার (৬ জুন) শনাক্ত করেছে সেনাবাহিনীর বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ দল। ডিপোটি রাসায়নিক রাখার কোনও অনুমতি নেয়নি বলে আগেই জানিয়েছিল বিস্ফোরক অধিদফতর।

শনিবার (৪ জুন) রাতে বিএম কনটেইনার ডিপোতে আগুন লাগলে তা নেভাতে কাজ শুরু করেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এক পর্যায়ে আগুন ছড়িয়ে রাসায়নিক থাকা কনটেইনারে বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। এতে মুহূর্তেই ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয় ডিপো এলাকা। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর বিষয়ে নিশ্চিত করেছে স্থানীয় প্রশাসন। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তিন শতাধিক মানুষ।

আগুনে দগ্ধ ৭১ জন চিকিৎসা নিচ্ছেন বার্ন ইউনিটে। চট্টগ্রাম মেডিকেলে বার্ণ ইউনিটে ভর্তি ৫৬ জনের মধ্যে ১৭ জনের শ্বাসনালী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তার মধ্যে সংকটাপন্ন ৪ জন।

শেখ হাসিনা বার্নে ভর্তি ১৫ জনের ১০ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

২ বছর আগে ঝুঁকি ভাতা চালু হওয়ায় নিহত ফায়ারকর্মীর পরিবার ৮ লাখ টাকা পাবে। আর আহতরা পাবেন ৫ লাখ টাকা। বিশেষ বরাদ্ধ আছে প্রধানমন্ত্রী তহবিল থেকেও।

সারাদেশ