সাভারের আশুলিয়ার চিত্রশাইল এলাকায় হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজে দশম শ্রেণির ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতুর প্রহারে গুরুতর আহত শিক্ষক উৎপল কুমার সরকার (৩৫) মারা গেছেন।
গত শনিবার বেলা ২টার দিকে বিদ্যালয়ের খেলার মাঠে শিক্ষক উৎপল সরকারকে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে প্রকাশে বেধড়ক মারধর করে জিতু।
হামলার পর আহত শিক্ষককে স্থানীয় নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।
সেখানে আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার ভোর ৫টার দিকে তিনি মারা যান বলে সমকালকে জানান এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী।
অভিযুক্ত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম জিতু চিত্রশালার উজ্জ্বল হাজীর ছেলে এবং ওই বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণির ছাত্র।
হাজী ইউনুস আলী স্কুল অ্যান্ড কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক উৎপল সরকার একইসঙ্গে ওই প্রতিষ্ঠানের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি।
প্রায় ১০ বছর ধরে তিনি এ কলেজে অধ্যাপনা করে আসছিলেন। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর শেষ করে তিনি এই কলেজে শিক্ষকতা শুরু করেন। তার গ্রামের বাড়ি সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া থানার এঙ্গেলদানি গ্রামে। পরিবার নিয়ে তিনি ঢাকার মিরপুরে বসবাস করতেন।
উৎপলের বড় ভাই অসীম কুমার সরকার বলেন, মেয়েদের ইভটিজিং করত জিতু। তাকে শৃঙ্খলা কমিটিতে ডেকে নিয়ে শাসন করেছিলেন শিক্ষকরা। সেই ক্ষোভ থেকে উৎপলের ওপর হামলা করেছে জিতু।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ সাইফুল হাসান বলেন, উৎপল স্যার স্কুলের শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি ছিলেন। তিনি ছাত্রদের বিভিন্ন সময় চুল কাটতে বলাসহ বিভিন্ন আচরণগত সমস্যা নিয়ে কাউন্সেলিং করেন। বিভিন্ন অপরাধের বিচারও করেন তিনি। হয়ত কোনো কারণে সেই শিক্ষকের ওপর ছাত্রটির ক্ষোভ ছিল।
বিদ্যালয়ের এক কর্মী গণমাধ্যমকে জানান, হামলার আগে বিদ্যুতের মেইন সুইস অফ করে দিয়েছিল জিতু যাতে সিসিটিভি ক্যামেরায় ভিডিও দেখা না যায়।
মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা ও আশুলিয়া থানার এস আই এমদাদুল হক বলেন, অভিযুক্ত জিতুসহ অজ্ঞাত আরও কয়েকজনকে আসামিকে মামলা দায়ের করা হয়েছে। অভিযুক্ত জিতুকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।