বাংলাদেশকে রুট হিসেবে ব্যবহার করে বিদেশ থেকে বন্য প্রাণী পাচার হয়ে আসার ঘটনা ঘটেই চলেছে। আকাশপথে এসে সড়কপথে প্রাণীগুলো চলে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। সেখান থেকে চলে যাচ্ছে ভারত, থাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুরের মতো দেশে।
গত ছয় বছরে পাচার হয়ে আসা ৮ হাজার ২৪৭টি বন্য প্রাণী ধরা পড়েছে। গত সাত মাসে দুটি পাচারের ঘটনায় সিংহ ও চিতাবাঘের শাবক এবং জেব্রা জব্দ করেছে পুলিশ। এ ছাড়া ৬ আগস্ট বিমানবন্দরের কার্গো এলাকা থেকে বানর, লাভ বার্ডসহ ৭৬৯টি বন্য প্রাণী জব্দ করা হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজধানী ঢাকা, সীমান্ত ঘেঁষা জেলা কিংবা দেশের মধ্যাঞ্চলে চিতাবাঘ, সিংহ, কুমির, জেব্রা, বানর, ছোট লাভ বার্ড হরহামেশাই ধরা পড়ছে। কিন্তু পাচারকারীরা থেকে যাচ্ছে আড়ালে। ধরা পড়লেও দ্রুত জামিনে বের হয়ে যায়।
গত বছরের ১৩ নভেম্বর এবং চলতি বছরের ৮ মে দুটি আলাদা ঘটনায় যশোর জেলায় নয়টি জেব্রা, দুটি সিংহ ও দুটি চিতা বাঘের শাবক জব্দ করে পুলিশ। কিন্তু এখন পর্যন্ত পাচারকারীদের শনাক্ত করা যায়নি। তবে এই ১৩টি প্রাণী পাচারের ঘটনা তদন্তে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এসব প্রাণীর মধ্যে বর্তমানে ১০টি বেঁচে আছে বলে জানা গেছে। ইতিমধ্যে একটি জেব্রা ও চিতাবাঘের দুটি শাবক মারা গেছে।
বন সংরক্ষক মো. জাহিদুল কবিরকে (বন্য প্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষক অঞ্চল) আহ্বায়ক করে ছয় সদস্যের ওই কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিতে বন মন্ত্রণালয়ের একজন উপসচিব, শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের একজন, যশোর জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপারসহ বন অধিদপ্তরের দুই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে সদস্য করা হয়েছে। গত ৬ জুলাই গঠিত এই কমিটিকে সরেজমিন তদন্ত করে দায়ী ব্যক্তি, গোষ্ঠী ও প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করে সুপারিশসহ প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।