নিজস্ব প্রতিবেদক
ব্যাংকের কিছু অসাধু কর্মকর্তার যোগসাজশে দীর্ঘদিন ধরে জাল টাকা সরবরাহ করে আসছিল একটি চক্র। এই চক্রের প্রধান সাবেক পুলিশ সদস্য হুমায়ুন কবির গ্রেফতারের পর এমনি সব তথ্য পেয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
বৃহস্পতিবার (২৮ জুলাই) দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টার এসব কথা জানান, ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশিদ। তিনি বলেন, আসন্ন পূজাকে কেন্দ্র করে জাল টাকা বানিয়ে আসছিল এ চক্রটি। প্রতিমাসে ৬০ লাখ জাল টাকা ছাপানো কাজ করতো হুমায়ুন কবিরের এই চক্র। পুলিশ জানায়, হুমায়ুন কবিরের বিরুদ্ধে ইতিপূর্বে ৪টি জাল টাকার মামলা রয়েছে। অভিযানে ১৬ লাখ জাল টাকা সহ জাল টাকা তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জামাদি উদ্ধার করা হয়েছে বলেও জানান গোয়েন্দা পুলিশের এই কর্মকর্তা। আর এই চক্রে বাকি সদস্য ইমাম হোসেন আলাউদ্দিন সাইফুল মজিবর ও আলাউদ্দিনকে গ্রেফতারে অভিযান চলছে বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।
ঘটনার বিস্তারিত জানাতে গিয়ে ডিবি প্রধান হারুন অর রশিদ বলেন, ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা উত্তরা বিভাগের বিমান বন্দর জোনাল টিম বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ সিন্ডিকেটের মূলহোতা হুমায়ুন কবিরকে গ্রেফতার করে। গত বুধবার (২৭ জুলাই) দিনগত রাতে মোহাম্মদপুর থানাধীন চাঁদ উদ্যান হাউজিং, রোড নং-৪, বাসা নং- ১১, ৫ম তলা, ফ্ল্যাট নং-৫/৬ এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতের নাম- মো. হুমায়ন কবির (৪৮)। গ্রেফতারের সময় তার হেফাজত হতে জাল ১৬ লাখ টাকা, ১ টি ল্যাপটপ, ১টি প্রিন্টার, ১ টি লেমিনেশন মেশিন, ১টি পেস্টিং গামের কৌটা, ৩ টি টাকা তৈরির ডাইস, ২ বান্ডেল ফয়েল পেপার, ২ প্যাকেট টাকা তৈরির কাগজ, ১ টি কাটার ও ২টি মোবাইল সেট উদ্ধার করা হয়।
উল্লেখ্য, গত ২৭ জুলাই গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানা যায়, সংঘবদ্ধ অবৈধ জাল টাকা কারবারি চক্র ঢাকার মোহাম্মদপুর থানাধীন চাঁদ উদ্যান হাউজিং এলাকায় বিপুল পরিমাণ জাল টাকা তৈরি ও বিক্রি করে। চাঁদ উদ্যান হাউজিং সোসাইটির ভিতরে অভিযান পরিচালনা করে বিপুল পরিমাণ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির সরঞ্জামাদিসহ সিন্ডিকেটের মূলহোতা মোঃ হুমায়ন কবির (৪৮) কে জাল টাকা প্রস্তুত করার সময় গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃত আসামীর ভাড়া ফ্ল্যাটে তল্লাশী করে ফ্ল্যাটের ভিতর হতে ১৬ লক্ষ জাল টাকা ও জাল টাকা তৈরির ল্যাপটপ, প্রিন্টার, লেমিনেশন মেশিন, পেস্টিং গামের কৌটা, টাকা তৈরির ডাইস,ফয়েল পেপার, টাকা তৈরির কাগজ, মোবাইল সেট ইত্যাদি উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতারকৃত আসামীর ভাড়া নেওয়া বাসাকে জাল টাকা বানানোর কারখানা হিসেবে ব্যবহার করে জাল টাকা তৈরি করে আসছে এবং তার অন্যান্য সহযোগী পলাতক আসামি ইমাম হোসেন (৩০), মো. আলাউদ্দিন (৩৫), মো. সাইফুল (৩০), মোঃ মজিবর (৩২), আলাউদ্দিন (৪২) পরস্পর যোগসাজসে জাল টাকা প্রস্তুত এবং বিপণন করে আসছে। এছাড়াও গ্রেফতারকৃত আসামীর পিসিপিআর যাচাই করে জানা যায় তার বিরুদ্ধে ইতোপূর্বেও ০৪টি জাল টাকার মামলা রয়েছে।