তৃণমূলে সদস্য সংগ্রহের নির্দেশ শেখ হাসিনার।

তৃণমূলে সদস্য সংগ্রহের নির্দেশ শেখ হাসিনার।

দেশব্যাপী তৃণমূলের সব ইউনিটে ব্যাপক হারে দলের সদস্য সংগ্রহের নির্দেশ দিয়েছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

রবিবার (১৪ আগস্ট) গণভবনে অনুষ্ঠিত দলটির আটটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের সভায় এ নির্দেশনা দেন তিনি। এ সময় ওয়ার্ড থেকে শুরু করে প্রতিটি ইউনিয়ন, থানা, পৌর, উপজেলা, মহানগর ও জেলার কমিটি ঢেলে সাজানোরও কঠোর নির্দেশনা দেন শেখ হাসিনা। প্রতিটি ইউনিটে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠনের পাশাপাশি এসব কমিটিতে কোনোভাবেই যেনো দুঃসময়ের ত্যাগীরা বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করারও নির্দেশা দেন। বৈঠকে উপস্থিত আওয়ামী লীগের কয়েকজন সাংগঠনিক সম্পাদক ভোরের কাগজকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেন।

আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বৈঠকে অংশ নেন সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, মির্জা আজম, অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন, এস এম কামাল হোসেন, সাখাওয়াত হোসেন শফিক ও শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। সাংগঠনিক সম্পাদকরা স্ব স্ব বিভাগের সাংগঠনিক রিপোর্ট লিখিত আকারে দলীয় সভাপতির কাছে উপস্থাপন করেন। সকাল সাড়ে ১০ টায় শুরু হওয়া এ বৈঠক চলে দুপুর একটা পর্যন্ত। বৈঠকে সাংগঠনিক সম্পাদকদের বক্তব্য শুনেন দলীয় প্রধান। তারা নিজ নিজ বিভাগের বিভিন্ন সমস্যার কথাও তুলে ধরেন। দলীয় সভাপতি এসব সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধানও দেন।

রবিবার গণভবনে অনুষ্ঠিত দলটির আটটি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদকদের সভায় বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিএমও
সূত্র অনুযায়ী, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে তৃণমূলে সব ধরনের দলীয় কোন্দল নিরসন করে সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা দেন। এ জন্য প্রতিটি ইউনিটে ব্যাপক হারে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু করতে বলেন। এক্ষেত্রে কোনো অনুপ্রবেশকারী যেন দলে ঠাঁই না পায়, তা নিশ্চিত করতে বলেন। পাশাপাশি কোনো পক্ষপাতিত্ব না করে দুর্দিনের ত্যাগী কর্মীরা যেন পূর্ণাঙ্গ কমিটি থেকে বাদ না যায়, তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ফলে বর্তমান যে পরিস্থিতি সারাবিশ্ব ব্যাপী সৃষ্টি হয়েছে, বাংলাদেশও তার বাইরে নয়। ফলে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে, ভবিষ্যতে দেশে যেন কোনো ধরণের সংকট তৈরী না হয়, সেজন্য এখন থেকে পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। জ্বালানি তেলের দাম সমন্বয় করায় বাংলাদেশেও তেলের দাম বেড়েছে। এটা সাময়িক। এই সুযোগে বিরোধী দল বিএনপি ও তাদের দোসররা বিভ্রান্ত ছড়াচ্ছে। তারা দেশে অরাজক পরিস্থিতি তৈরীর পায়তারা করছে। এই পরিস্থিতি ধৈর্য্য ও সহনশীলতার সঙ্গে মোকাবেলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। দলের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা, দলীয় জনপ্রতিনিধিসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদেরকে মানুষের কাছে যেতে বলা হয়েছে। গণসংযোগ বাড়াতে বলা হয়েছে। জনগণের সঙ্গে সম্পর্ক আরও বাড়াতে বলা হয়েছে। যে কোনো বিপদ-আপদে তাদের পাশে দাঁড়াতে বলা হয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগের জাতীয়র কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হবে। তার আগেই তৃণমূলকে ঢেলে সাজাতে হবে। জাতীয় কাউন্সিলের সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এই প্রস্তুতির অংশ হিসেবেই আমাদেরকে গণভবনে ডাকা হয়েছে। সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর করবেন। এরপরই জাতিসংঘ সাধারণ অধিবেশনে যোগে দেবেন। সেখান থেকে ফিরে অক্টোবর মাস থেকে আওয়ামী লীগ সভাপতি জেলা, মহানগর ও উপজেলা সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সিনিয়র নেতাদের সঙ্গে পর্যায়ক্রমে মিটিং করবেন। তৃণমূলের কথা শুনবেন। সংগঠনকে শক্তিশালী করার নির্দেশনা দেবেন।

রাজনীতি