২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানি হচ্ছে ভারতে

২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানি হচ্ছে ভারতে

আসন্ন দুর্গাপূজা উপলক্ষে বাংলাদেশের ইলিশ রফতানি হচ্ছে ভারতে। গত ৪ সেপ্টেম্বর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের রফতানি-২ শাখার উপ-সচিব তানিয়া ইসলাম সাক্ষরিত এক চিঠিতে শর্ত সাপেক্ষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের ৪৯টি মৎস্যজাত প্রতিষ্ঠানকে ৫০ মেট্রিক টন করে মোট ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির অনুমতি দেয়া হয়েছে।

অনুমতি পাওয়ার পর গতকাল সোমবার প্রথম দিন বরিশাল থেকে ২টি ট্রাকে ভারতে গেছে ৭ মেট্রিক টন ইলিশ। দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবারও প্রায় ৮ টন ইলিশ পাঠানোর প্রস্তুতি দেখা গেছে অনুমতিপ্রাপ্ত ৩ প্রতিষ্ঠানের।দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার পর ভারতে ইলিশ রফতানির সুযোগ পেয়ে খুশি ব্যবসায়ীরা। সারা বছর সব দেশে ইলিশ রফতানির অনুমতির দাবি জানিয়েছেন তারা।

২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর দুর্গাপূজা উপলক্ষে ভারতে রফতানি হচ্ছে বাংলাদেশের রূপালি ইলিশ। বন্ধু প্রতিম প্রতিবেশী ভারতের মানুষকে বাংলাদেশের ইলিশের স্বাদ দিতে গত ৪ সেপ্টেম্বর দেশের ৪৯টি প্রতিষ্ঠানকে ইলিশ রফতানির অনুমতি দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

এর মধ্যে বরিশালের ৩টি প্রতিষ্ঠান পেয়েছে রফতানির অনুমতি। আগামী ৩০ সেপ্টেম্বরের মধ্যে প্রতিষ্ঠান প্রতি ৫০ টন করে মোট ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রফতানির সুযোগ পাবে ৪৯টি প্রতিষ্ঠান। ৫০০ গ্রাম থেকে ১ হাজার ২০০ গ্রাম সাইজের ইলিশ রফতানি করা হচ্ছে।

অনুমতিপ্রাপ্ত ইলিশ রফতানিকারক ও বরিশাল জেলা মৎস্য আড়তদার মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক নিরব হোসেন টুটুল জানান, গত ৫ সেপ্টেম্বর প্রথমদিন দুপুরে বরিশাল থেকে দুটি ট্রাকে ৭ টন ইলিশের প্রথম চালান ভারতের কলকাতার উদ্দেশে রওয়ানা হয়েছে।

মঙ্গলবার দ্বিতীয় দিন বিকেলেও বরিশাল থেকে ৮ টন ইলিশ ভারতে রফতানির প্রস্তুতি প্রস্তুতি রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। তবে বর্তমানে কলকাতায় ইলিশের বাজার আশানুরূপ না বলে জানিয়েছেন তিনি।

জেলা মৎস্য আড়তদার অ্যাসোসিয়েশের সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর সিকদার জানান, চোরাই পথে বিদেশে পাচার হচ্ছে বাংলাদেশের ইলিশ। এতে রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। সারা বছর সব দেশে ইলিশ রফতানির সুযোগ পেলে চোরাই পথে আর ইলিশ পাচার হতো না।

এতে সরকারের রাজস্ব আয়ও বাড়তো। দেশে ইলিশের বাজারও থাকতো চাঙ্গা। অবৈধ পাচার ঠেকাতে সারা বছর সব দেশে ইলিশ রফতানির অনুমতি দাবি করেছেন এই ব্যবসায়ী নেতা।

ভারতে ২৬ দিনের জন্য ইলিশ রফতানি শুরু হওয়ায় বরিশালের পোর্ট রোড ইলিশ মোকামে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে মৎস্য শ্রমিকদের। প্রক্রিয়াজাত থেকে শুরু করে ট্রাকে তোলা পর্যন্ত প্রতিটি স্তর নিপুণ হাতে সম্পন্ন করছে বরিশালে মৎস্য শ্রমিকরা। রফতানিকে কেন্দ্র করে কাজের ক্ষেত্র তৈরি হওয়ায় খুশি বরিশালের মৎস্য শ্রমিকরা। তারাও সারা বছর রফতানি চালু রাখার দাবি জানিয়েছেন। সবশেষ ২০১০ সালে বাংলাদেশ থেকে ইলিশ রফতানি করেছিলেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু দেশীয় বাজারে ইলিশের দাম চড়া হওয়ায় সাধারণ জনগণের সুবিধার্থে তখন ইলিশ রফতানি বন্ধ করে সরকার। তবে দুর্গাপূজা উপলক্ষে ২০১৯ সাল থেকে সাময়িক সময়ের জন্য ভারতে ইলিশ রফতানির অনুমতি দিচ্ছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। 

আন্তর্জাতিক