দেশে বিদ্যুৎ খাতের মেগা প্রজেক্টগুলোর অন্যতম পটুয়াখালীর পায়রায় নির্মিত ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট সক্ষমতার কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র। ডলার সংকটে কয়লা আমদানি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি। আবার বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বিদেশী ঋণ পরিশোধের মেয়াদ শুরু হয়েছে। কিন্তু সেখানেও বাদ সাধছে ডলার সংকট। চলতি মাসের শুরুর দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রদেয় একটি ঋণের কিস্তি সময়মতো শোধ করা যায়নি। ডিসেম্বরের মধ্যেই বিদ্যুৎকেন্দ্রটিকে ডলারে এ কিস্তিসহ জরুরি ভিত্তিতে বড় অংকের অর্থ জোগাড় করতে হবে বলে জানা গিয়েছে।
দেশের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে এখন কমবেশি একই ধরনের সমস্যার মধ্য দিয়ে যেতে হচ্ছে। বিশেষ করে বেসরকারি খাতে এ সমস্যা অনুভূত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি। গত কয়েক বছরে বিদ্যুৎ খাতে বড় অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছেন বেসরকারি খাতের উদ্যোক্তারা। এসব বিনিয়োগের অর্থায়ন হয়েছে বিদেশী বিভিন্ন ব্যাংক ও প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে নেয়া ঋণের ভিত্তিতে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) তথ্য অনুযায়ী, দেশের বিদ্যুৎ খাতে চলমান প্রকল্পগুলোর মধ্যে ৫০ কোটি ডলার বা তার বেশি পরিমাণ বিনিয়োগ রয়েছে তিনটি প্রতিষ্ঠানের—এস আলম গ্রুপ, সামিট গ্রুপ ও ওরিয়ন গ্রুপের। এর মধ্যে এস আলম গ্রুপের বিনিয়োগ রয়েছে প্রায় ২৪৬ কোটি ডলার। সামিট গ্রুপের বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি ডলার। ওরিয়ন গ্রুপের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোয় বিনিয়োগ ও অর্থায়নের পরিমাণ ৭০ কোটি ডলার।
বিদেশী অর্থায়নে বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগে নির্মাণ হলেও জ্বালানি ও ডলার সংকটের মুখে সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলোকে সময়মতো উৎপাদনে আনা যাবে কিনা, সে বিষয়ে বড় ধরনের সংশয় রয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। তাদের আশঙ্কা, এসব ঋণের বেশির ভাগের উৎস চীনভিত্তিক ব্যাংকগুলো। এসব ব্যাংক ঋণের ওপর সুদহারও ধার্য করে অন্যান্য উৎসের চেয়ে বেশি। ডলার ও জ্বালানি সংকটের বর্তমান পরিস্থিতি চলমান থাকলে ভবিষ্যতে বিদেশী ঋণ নিয়ে বড় ধরনের বিপত্তিতে পড়তে পারে বিদ্যুৎ খাতের বৃহৎ বেসরকারি কোম্পানিগুলো।বিস্তারিতা