‘২০৩১ সালের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলার রফতানির আয় সম্ভব’

‘২০৩১ সালের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলার রফতানির আয় সম্ভব’

সরকার, ইন্ডাস্ট্রি ও একাডেমিয়ার সমন্বয় ঘটলে ২০৩১ সাল নাগাদ ২০ বিলিয়ন ডলার রফতানি আয় সম্ভব বলে মনে করেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেস (বেসিস)-এর সভাপতি রাসেল টি আহমেদ। তার মতে, এই লক্ষ্য বাস্তবায়নে ধারাবাহিকভাবে স্মার্ট বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অগ্রসর হতে সহায়তা করবে।

২০ বিলিয়ন ডলার রফতানির লক্ষ্য অর্জনের জন্য বেসিস সভাপতি ‘থ্রি ইন্টো থ্রি’ (৩×৩) ফর্মুলার কথা বলেছেন। যার মাধ্যমে ২০৩১ সালের মধ্যে ২০ বিলিয়ন ডলারের আইটি রপ্তানি অর্জন করা যেতে পারে।

রাসেল টি আহমেদের জানান, ৩টি সেক্টর; পাবলিক বা সরকার, প্রাইভেট বা ইন্ডাস্ট্রি এবং একাডেমিয়াকে ৩টি প্রধান লক্ষ্য অর্জনের জন্য একসাথে কাজ করতে হবে, যা ২০ বিলিয়ন ডলার রপ্তানি আয়ের পথ পরিষ্কার করবে।

‘৩টি প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে- পণ্য উদ্ভাবন, প্রচার এবং মানব সম্পদ উন্নয়ন’। ১. স্থানীয় শিল্পের পণ্য বা পরিষেবার পোর্টফোলিও বাড়ানোর জন্য পণ্য উদ্ভাবন করতে হবে। ২. স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিকভাবে দেশীয় ব্র্যান্ডিং এবং শিল্পের প্রচার করতে হবে, এবং উন্নয়নের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ কাঁচামাল হিসেবে মানব সম্পদ উন্নয়ন করতে হবে।

রাজধানীর পূর্বাচলে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-চীন মৈত্রী প্রদর্শনী কেন্দ্রে বৃহস্পতিবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) থেকে চলছে ‘বেসিস সফটএক্সপো ২০২৩’।

মেলা সম্পর্কে রাসেল টি আহমেদ বলেন, ‘এবারের এক্সপোর মাধ্যমে সফটওয়্যার খাতকে একটি ঝাঁকুনি দিতে চাই। একই সঙ্গে সারা বিশ্বের মানুষের কাছে সফটওয়্যারে আমাদের বর্তমান অবস্থা ও সম্ভাবনা তুলে ধরতেও চাই। সরকার সহযোগিতা না করলে সফটওয়ার খাতকে এগিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্য বেসিস সদস্যরা যেমন কাজ করেছে, তেমনি স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তোলার জন্যও কাজ করবে।’

‘ওয়েলকাম টু স্মার্টভার্স’ স্লোগান নিয়ে চার দিনের বেসিস সফটএক্সপো চলবে ২৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। মেলায় ২০৪টি প্রতিষ্ঠান সফটওয়্যার ও তথ্যপ্রযুক্তি সেবা প্রদর্শন করছে। মেলার অংশ হিসেবে তথ্যপ্রযুক্তিতে বাংলাদেশের সক্ষমতা, সম্ভাবনা, উদ্ভাবন এবং নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ের ওপর ১৮টি গোলটেবিল বৈঠক, সেমিনার ও অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। মেলায় প্রতিদিনই থাকছে একাধিক সেমিনার।

এবারের আয়োজনে ব্যবসা সম্প্রসারণ কিংবা নতুন উদ্যোগকে এগিয়ে নেওয়ার জন্য বিজনেস লিডারস মিট ও সমাপনী অনুষ্ঠানে বিভিন্ন করপোরেট প্রতিষ্ঠানের আট শতাধিক কর্মকর্তা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এছাড়া বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূত ও প্রতিনিধিদের অংশগ্রহণে অ্যাম্বাসেডর নাইট, মন্ত্রীদের অংশগ্রহণে মিনিস্ট্রিয়াল কনফারেন্স, তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষ জনবল ও চাকরির খোঁজ দিতে আইটি জব ফেয়ার এবং ক্যারিয়ার ক্যাম্প, বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশন, ফ্রিল্যান্সিং কনফারেন্স, স্টার্টআপ কনফারেন্স, ডেভেলপার্স কনফারেন্স, উইমেন ইন আইটি প্রোগ্রাম, জাপান ডে’সহ নানা আয়োজন থাকছে।

প্রসঙ্গত, ২০২১ সালের মধ্যে আইসিটি খাতে রপ্তানির পরিমাণ ৫ বিলিয়ন ডলার করার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল বাংলাদেশ। কিন্তু দক্ষ মানবসম্পদ ও বাজারের অভাবে তা অর্জন করা সম্ভব হচ্ছে না। তথ্যপ্রযুক্তি খাত থেকে বর্তমানে ১ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডলার রফতানি হচ্ছে। বাংলাদেশের আইসিটি পণ্য ও সেবার প্রধান ক্রেতা যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সংযুক্ত আরব আমিরাত, সৌদি আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, মালয়েশিয়া ও সিঙ্গাপুর। সরকার এখন ২০২৫ সালের মধ্যে আইসিটি খাতের রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলার করতে চায়।

তথ্য প্রুযুক্তি