খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) ওরশ আজ শুরু

খাজা ইউনুস আলী এনায়েতপুরী (রঃ) ওরশ আজ শুরু

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি

উপমহাদেশের প্রখ্যাত ইসলাম প্রচারক শাহান সাহে তরিকত, ওলিয়ে-কামেল হযরত শাহ সুফি খাজা বাবা ইউনুছ আলী এনায়েতপুরী (রঃ)-এর ২০২৩ সালের ওরশ আজ (১ মার্চ ১৬ ফাল্গুন) বুধবার সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে শুরু হচ্ছে। এদিন বাদ জোহর দরবারের সাজ্জাদ্দানিশীন পীর হযরত খাজা কামাল উদ্দিন নুহু মিয়ার হাত ধরে মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) এর সত্য তরিকার ‘আল্লাহু আকবার’ আরবি হরফে লেখা ঝান্ডা (নিশান) সুউচ্চ টাওয়ারে উড়িয়ে ১০৮ তম ৩ দিন ব্যাপী বাৎসরিক ওরশ শরীফের ধর্মীয় মহাসমাবেশ শুরু হবে। এজন্য গত ২ মাস আগে থেকেই নেওয়া প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। পুরো দরবার নানা ফুলে সাজানো হয়েছে। এতে ভারতের আসাম, এ দেশীয় বসবাসরত ইউরোপ, মধ্যপ্রাচ্য অন্যান্য দেশ সহ সারা দেশের ধর্মপ্রাণ লাখো মুসুল্লী অংশ নেবেন বলে আশা প্রকাশ করা হচ্ছে। মহাসমাবেশ সফল করতে জেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করছে। দরবার শরীফ কর্তৃপক্ষ লাখো ভক্ত মুরিদান মুসুল্লীদের থাকা-খাওয়া, ওজু গোসল সহ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠান পালনের ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। এছাড়া জেলা পুলিশের পাশাপাশি বিশেষ নিরাপত্তায় দরবারের প্রশিক্ষিত হাজারো মোজাদ্দেদিয়া আনসার নিয়োজিত থাকবেন। এদিকে ওরশ শরীফের আয়োজন বর্ণাঢ্য করতে খাজা ইউনুস আলী মেডিকেল কলেজ এন্ড হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদ্যোগে এনায়েতপুর-সিরাজগঞ্জ ২০ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন স্থানে তৈরি করা হয়েছে সুবিশাল দৃষ্টিনন্দন তোরণ ও আড়াই কিলোমিটার জুড়ে আলোকসজ্জা।

জানা যায়, ভারতের প্রখ্যাত সুফি পীর খাজা সৈয়দ ওয়াজেদ আলী (রঃ) এর ইসলাম ও সুফিবাদের দর্শনে দিক্ষিত ভারতের আসাম সহ সারা বাংলায় ২৪ লাখ মুরিদ ও খেলাফত প্রাপ্ত ৫৬ জন খলিফা নিয়ে আসেন ইসলাম প্রচারের জন্য। খাজা ইউনুস আলী (রঃ) সর্বশ্রেষ্ঠ খেতাব প্রাপ্ত হন। কিছু দিনপর সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুরে খানকা স্থাপন করে মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর শান্তির তরিকা ও সুফী বাদের প্রচার শুরু করেন। পাশাপাশি সমাজসেবা মুলক কাজেও রেখেছিলেন অনন্য অবদান। এরপর ১৯১৬ সালে এনায়েতপুর পাক দরবার শরীফে তার পীর খাজা সৈয়দ ওয়াজেদ আলী মেহেদী বাগী (রঃ) এর নির্দেশে অনুসারীদের নিয়ে ধর্মীয় ঝিকির-আজগার, আলোচনা, হাম্দ-নাত, গজল পরিবেশনের মধ্যে দিয়ে ইসলামের আদর্শে জীবন পরিচালনার আহবানের ওরশ মোবারক শুরু করেন। এক পর্যায়ে খাজা এনায়েতপুরী (রঃ) সংস্পর্শে এসে আদর্শিক আলোর পথের দিশারী হিসেবে ১ হাজার ২৫০ জন পীর আওলিয়া তার খেলাফত প্রাপ্ত হন। মহান মুর্শিদ খাজা বাবা ইউনুছ আলী (রঃ) বাংলা ১৩৫৮ সনের ১৮ ফাল্গুন ইন্তেকাল করেন। এখন থেকে প্রতি বছর এই দিনে ওরশ পালিত হচ্ছে।

আগামী ১৮ ফাল্গুন ৩ মার্চ শুক্রবার সকাল ৯টায় দরবার শরীফের বর্তমান গদ্দিনিশীন হুজুর পাক হযরত খাজা কামাল উদ্দিন নুহু মিয়ার আখেরী মোনাজাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব মানবতার মঙ্গল কামনা করে এবারের ঐতিহ্যের এই ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সমাপ্ত হবে।

সারাদেশ