রোজায় ক্রেতার হাঁসফাঁস সংসারের ফর্দে কাটছাঁট

রোজায় ক্রেতার হাঁসফাঁস সংসারের ফর্দে কাটছাঁট

রোজা শুরুর আগমুহূর্তে নিত্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো আগুন লেগেছে। গতকাল বুধবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে সবজিসহ কয়েকটি পণ্য চড়া দামে বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে কিছু পণ্যের দাম কারণ ছাড়াই এক লাফে দ্বিগুণ হয়েছে। আবার কিছু পণ্য কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা দাম বৃদ্ধির জন্য আমদানি বন্ধকে ঢাল বানাচ্ছেন, দাঁড় করাচ্ছেন নানা যুক্তি। তবে তেতে থাকা নিত্যপণ্যের আরেক দফা বৃদ্ধিতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। তাঁদের কেউ কেউ নির্দিষ্ট টাকায় বাজার করতে গিয়ে গৃহিণীর দেওয়া ফর্দে করছেন কাটছাঁট। এতে খুচরা পর্যায়ে অন্যান্য রমজান শুরুর আগের তুলনায় এবার প্রায় ২০ শতাংশ বিক্রি কমে গেছে বলে জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

ভোক্তা অধিকার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আমদানি নির্ভরতা বলা হলেও রমজান উপলক্ষে দেশে উৎপাদিত পণ্যের দামও অস্বাভাবিক বেড়েছে। দাম বাড়ানোর অপকৌশল ব্যবসায়ীরা বরাবরের মতোই অতি মুনাফার লোভে নিয়েছেন।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে রোজার সদাই কিনতে আসা কাঁঠালবাগানের বাসিন্দা সত্তরোর্ধ্ব অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা আবদুস সালাম বাবলা সমকালকে বলেন, গতবার যে খেজুরের কার্টন (৫ কেজি) ২ হাজার ৮০০ টাকা ছিল, এবার নিতে হচ্ছে ৪ হাজারে। শুধু খেজুরেই তো ১ হাজার ২০০ টাকা বেশি লাগছে। বাকিগুলোর কথা নাই বা বললাম। পেনশন তো বাড়েনি, বাড়তি খরচ মিটবে কীভাবে?

 

 

রাজধানীর হাতিরপুল কাঁচাবাজার থেকে ২৫০ টাকা দরে দুই কেজি তেলাপিয়া কিনে ক্ষোভে ফুঁসছেন সেলিনা আক্তার। তিনি বলেন, ‘ব্রয়লার ২৮০ টাকা হয়েছে। কমের আশায় বাজারে এসে তেলাপিয়া মাছও কিনতে হচ্ছে আড়াইশ টাকা কেজি। সব মাছেরই দাম বেশি। এবার রোজা ডাল-ভাত খেয়ে পার করতে হবে।’

রাজধানীর আফতাবনগর থেকে কারওয়ান বাজারে সদাই করতে আসা আবু বকর বলেন, ‘দুই পয়সা কম পাব বলে এখানে এসেছি। কিন্তু যে দাম দেখছি, কম টাকায় কিছু খাওয়ার আর সুযোগ নেই। বছরখানেক আগেও ৫ হাজার টাকায় যে পরিমাণ বাজার কিনতে পারতাম, এখন তা ৮-১০ হাজারেও মিলছে না। বাধ্য হয়ে অনেক কিছুতে ছাড় দিতে হচ্ছে।’

বাবলা, সেলিনা ও আবু বকরের মতো ‘দামের বিপদ’ সঙ্গী করেই কমবেশি সবাই বাজারে আসছেন। কী কিনবেন, তার চেয়ে কোনটি কিনবেন না– তা নিয়েই বেশি ভাবছেন তাঁরা। হিসাবি হয়ে ওঠা ক্রেতাদের বাজারের তালিকা ছোট হওয়ায় বিক্রি কমেছে খুচরা ব্যবসায়ীদের। গতবার রোজা শুরুর আগের তুলনায় এ বছর প্রায় ২০ শতাংশ বিক্রি কমেছে বলে দাবি করেছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের ভাষ্য, এক বছর ধরে ধাপে ধাপে কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়লেও আয় স্থির রয়েছে। ফলে একই টাকায় এবার পণ্য কেনায় কাটছাঁট করছেন।বিস্তারিত

সারাদেশ