ভয়াবহ যানজটে অচল রাজধানী

ভয়াবহ যানজটে অচল রাজধানী

নিজস্ব প্রতিবেদক

টানা তিন দিন ছুটির পর গতকাল প্রথম কার্যদিবসেই ভয়াবহ যানজটে অচল ছিল রাজধানী। সকালে তৈরি হওয়া এ যানজট ছিল রাত পর্যন্ত। বিশেষ করে বিকাল ৩টায় অফিস ছুটি হওয়ার পর থেকে ইফতারির আগের মুহূর্ত পর্যন্ত রাজধানীজুড়ে ছিল তীব্র যানজটে। অনেকেই বাসায় পৌঁছতে না পেরে রাস্তায় ইফতার করেন।

অফিসমুখী মানুষের চাপে সকালে নগরীতে যানজট তৈরি হয়। মূল সড়ক থেকে অলিগলি পর্যন্ত ছিল যানবাহনের চাপ। সকালে তৈরি হওয়া যানজটে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাতে হয় অফিসগামীদের। বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে সড়কে যানবাহনের চাপ বাড়তে থাকে।

আর বিকালে অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষের চাপে পুরো নগরীতে নেমে আসে স্থবিরতা। ঢাকায় এমন কোনো সড়ক বা অলিগলি খুঁজে পাওয়া মুশকিল যেখানে যানজট ছিল না। ঘরমুখো মানুষকে সড়কে আটকে থাকতে হয়েছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা।
মোহাম্মদ ইবরাহীম নামে এক ঘরমুখো যাত্রী বলেন, ‘পল্টন থেকে বের হয়েছিলাম বিকাল ৩টায়। বাড্ডা পর্যন্ত পৌঁছতে পারিনি। এর মধ্যেই করতে হয়েছে ইফতার।’ বাসায় যেতে না পেরে রাস্তায় ইফতার করা ইফাত জাহান বলেন, মতিঝিল থেকে বিকাল ৪টায় বাসে উঠি। ফার্মগেট আসতেই আড়াই ঘণ্টা লেগে গেছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে বাসার সবার সঙ্গে ইফতার করার ইচ্ছা ছিল। বাধ্য হয়ে রাস্তায় ইফতার করতে হলো। বাংলামোটরে যানজটে আটকে পড়া বাসের যাত্রী মাধবী বলেন, ‘আধা ঘণ্টার বেশি সময় দাঁড়িয়েছিলাম বাসের অপেক্ষায়। এরপর যে বাসটি পেয়েছি, সেটিও প্রায় এক ঘণ্টা লেগেছে শাহবাগ থেকে বাংলামোটর আসতে। ভীষণ যানজট। বাস নড়ছে না। বাসায় ফিরতে অনেক রাত হবে মনে হচ্ছে।’ ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকা পড়ে থাকায় মেজাজ হারিয়ে ফেলেন স্বাধীন পরিবহনের বাসচালক রহমতুল্লাহ। বাংলামোটর মোড়ে তিনি বলেন, ‘আজকে রাস্তায় ঠাডা পড়েছে। গাড়ির চাক্কাই ঘোরে না।’ রাস্তার পাশের রেস্তোরাঁগুলোতেও ইফতারের সময় ব্যাপক ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। ইফতারির পসরা সাজিয়ে থাকা ছোট ছোট দোকানগুলোর পাশে দাঁড়িয়েও অনেকে ইফতার করেছেন। ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) ট্রাফিক বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর বিমানবন্দর, কুড়িল, বনানী, বাড্ডা, মহাখালী, হাতিরঝিল, রামপুরা, কারওয়ান বাজার, পান্থপথ, ধানমন্ডি, যাত্রাবাড়ী ও কালশী এলাকায় ব্যাপক যানজট ছিল।

ট্রাফিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মহাখালী-গুলশান সড়কে মহাখালীর আমতলী থেকে গাউসুল আজম মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার একটি অংশ কাটা রয়েছে। সে কারণে ওই সড়কে গাড়ি চলাচল করতে সমস্যা হয়েছে। এর প্রভাব পড়েছে রাজধানীর অন্য সড়কগুলোতে। এ ছাড়া গতকাল ছিল রমজান শুরুর পর প্রথম কার্যদিবস। অফিস শেষে ঘরমুখো মানুষের অতিরিক্ত চাপ থাকায় যানজটের মাত্রা তীব্র হয়েছে।

ট্রাফিক মহাখালী জোনের সহকারী কমিশনার আবুল হোসেন বলেন, ‘আমতলী থেকে গাউসুল আজম মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা কাটা। আমরা গাড়িগুলো বের করে দেওয়ার চেষ্টা করছি। কিন্তু সড়কে অতিরিক্ত যানবাহনের চাপ থাকায় তা সম্ভব হচ্ছে না।’ এই সড়কে যানজটের প্রভাবে রমনা এলাকায়ও গাড়ি চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল বলে জানান রমনা ট্রাফিক জোনের সহকারী কমিশনার মো. সাকিব হোসাইন।

জাতীয়