জুড়ী, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি
দ্বিতীয় শ্রেণির প্রথম প্রান্তিক মূল্যায়ন পরীক্ষা শুরু হয় সকাল ১০টায়। শিক্ষকেরা অনুপস্থিত থাকায় পরীক্ষা গ্রহণ শুরু করেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি। দুই ঘণ্টার পরীক্ষায় খাতা, প্রশ্নপত্র বিতরণসহ সব একাই সামলান। এমন অবস্থা দেখে বিদ্যালয় থেকে ফেসবুকে লাইভ শুরু করেন এক অভিভাবক। এরপর বিদ্যালয়ে হাজির হন দুই শিক্ষক।
গতকাল বুধবার মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার গোয়ালবাড়ী ইউনিয়নে অবস্থিত কচুরগুল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ ঘটনা ঘটে। মস্তফা উদ্দীন নামের ওই অভিভাবকের করা ২ মিনিট ১১ সেকেন্ডের লাইভের ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ফেসবুকে। এ নিয়ে চলছে সমালোচনা।
ভিডিওতে দেখা গেছে, কচুরগুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে কোনো শিক্ষক নেই। একটি শ্রেণিকক্ষে দ্বিতীয় শ্রেণির বাংলা বিষয়ের পরীক্ষা চলছে। পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৩০-৪০। পরীক্ষার্থীরা হইচই করছে। বিদ্যালয়ের দপ্তরি তারেকুল ইসলাম তাদের শান্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছেন।
মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে অভিভাবক মস্তফা উদ্দীন বলেন, বিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষক রয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জেসমিন আক্তার কিছুদিন ধরে মাতৃত্বকালীন ছুটিতে। গতকাল বেলা ১১টার দিকে তিনিসহ কয়েক অভিভাবক বিদ্যালয়ে গিয়ে বাকি তিন শিক্ষকের কাউকেই পাননি। এ সময় দপ্তরি তারেকুলকে একা পরীক্ষা নিতে দেখেন। তাঁর একার পক্ষে শিক্ষার্থীদের নিয়ন্ত্রণ করা কষ্ট হচ্ছিল। এরপর তিনি ঘটনাটি ফেসবুকে লাইভ করেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে দুই সহকারী শিক্ষক বিদ্যালয়ে গিয়ে পৌঁছান।
মস্তফা উদ্দীন অভিযোগ করেন, এ বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা সময়মতো আসা-যাওয়া করেন না। ইচ্ছামতো ছুটি দিয়ে চলে যান। এতে বিদ্যালয়ে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হয়।
দপ্তরি তারেকুল ইসলাম বলেন, প্রধান শিক্ষক ছুটিতে থাকায় সহকারী শিক্ষক সামছুল ইসলাম দায়িত্বে রয়েছেন। সকালে সামছুল ইসলাম তাঁকে মুঠোফোনে পরীক্ষা শুরু করে দিতে বলেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে যথাসময়ে পরীক্ষা শুরু করেন।
জানতে চাইলে সহকারী শিক্ষক সামছুল ইসলাম মুঠোফোনে বলেন, বিদ্যালয়ের একটি কাজে তিনি গতকাল সকালে উপজেলা পরিষদ কার্যালয়ে রওনা দেন। বৃষ্টির কারণে অপর দুই শিক্ষকের যেতে বিলম্ব হওয়ায় দপ্তরিকে পরীক্ষা শুরু করে দিতে বলেন। তাঁরা প্রতিদিন সময়মতো বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া করেন বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলার ভারপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমদ ভূঁইয়া গতকাল রাতে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, কচুরগুল প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরিকে দিয়ে পরীক্ষা গ্রহণের বিষয়টি এক অভিভাবক তাঁকে জানিয়েছেন। শিক্ষকদের কারণ দর্শানোর চিঠি প্রদানসহ এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।