গ্রীষ্মকালে স্বাভাবিকভাবে এক গ্লাস ঠান্ডা পানির জন্য সবসময় মন ছটফট করতে থাকে। তৃষ্ণা পেলেই কোথায় ফ্রিজের পানি পাওয়া যায়, সেদিকে দৃষ্টি সবার। এছাড়াও বিভিন্ন সময় নানা কারণেই ফ্রিজের পানি পান করা হয়।
বিশেষজ্ঞদের মতামত, ফ্রিজের অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি কখনোই পান করা উচিত নয়। ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রাখা পানির সঙ্গে কিছুটা ফ্রিজের পানি মিশিয়ে এরপর পান করা যেতে পারে।
এছাড়া অনেকেই জানেন, অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা হার্টের জন্য মোটেও ভালো নয়। কিন্তু এ কথা আদতে কতটুকু সত্য, এবার তাহলে তা জেনে নেয়া যাক।
সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভারতের গুরুগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের প্রধান পরিচালক ডা. মনজিন্দর সান্ধু (কর্ণেল) বলেন, হঠাৎ প্রচুর ঠান্ডা পানি বা পানীয় পান করলে ধমনীতে ভ্যাসোম্পাজম সৃষ্টি হওয়ায় বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। এ জন্য হার্টের রোগীদের সতর্ক থাকা উচিত।
যাদের হার্টের সমস্যা রয়েছে তাদের অতিরিক্ত ঠান্ডা পানি পান করা উচিত নয়। এতে বরং ক্ষতিকর প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা থাকে। ঠান্ডা পানি হার্ট অ্যারিথমিয়াকে ট্রিগার করতে পারে। এছাড়া ভ্যাসোম্পাজমও হতে পারে। যা কখনো কখনো হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
এবার তাহলে ভ্যাসোম্পাজম কী, সেটা জেনে নেয়া যাক। এটি হচ্ছে এমন একটি অবস্থা যেখানে রক্তনালিগুলো সরু হয় ও রক্তের প্রবাহকে বাঁধা প্রদান করে। আর এটি হয় কিনা, তার ওপর নির্ভর করে নানা ধরনের ভ্যাসোম্পাজম যেমন, সেরিব্রাল ভ্যাসোম্পাজম, করোনারি ভ্যাসোম্পাজম, স্তনবৃন্ত ভ্যাসোম্পাজম এবং হাতের বা পায়ের আঙুলের ভ্যাসোম্পাজম।
প্রায় সব ধরনের ভ্যাসোম্পাজমই অধিকাংশই ঠান্ডার জন্য হয় এবং এটি কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট, এনজাইনা বা বুকে ব্যথা ও তীব্র করোনারি সিনড্রোমের মতো লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে।
ঠান্ডাজনিত কারণে হাত-পার আঙুলের মধ্যে হওয়া ভ্যাসোম্পাজম থেকে ত্বকের রঙে পরিবর্তন হয়ে থাকে। কখনো কখনো আঙুল কাঁপা কিংবা ঝাঁঝালো সংবেদনও হয়ে থাকে।
বিশেষজ্ঞরা পানি পানের ক্ষেত্রে পরামর্শ দিয়ে বলে থাকেন, ঘরের তাপমাত্রায় রাখা পানি পান করা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো। এছাড়া পানির বাইরে শরীর ভালো রাখতে রকমারি ফলমূল ও শাকসবজিও খেতে বলেন।