বাংলাদেশে গত ১৩ বছরে খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়েছে ছয় গুণের বেশি। ২০০৯ সালে বাংলাদেশে খেলাপি ঋণের আকার প্রায় ২২ হাজার কোটি টাকা থাকলেও এখন সেটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা। যদিও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের হিসাবে এই পরিমাণ প্রায় তিন লাখ কোটি টাকা। কারণ সন্দেহজনক ঋণ, আদালতের আদেশে খেলাপি স্থগিতাদেশ থাকা ঋণ, পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন করা ঋণকেও তারা খেলাপি দেখানোর পক্ষে। বর্তমানে দেশের আদালতগুলোতেই খেলাপি ঋণের প্রায় পৌনে এক লাখ মামলা ঝুলে রয়েছে, যাতে এক লাখ ৬৬ হাজার কোটি টাকা আটকে রয়েছে। আর খেলাপি ঋণ দীর্ঘদিন থেকে দেশের ব্যাংকিং খাত তথা সামগ্রিক অর্থনীতির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। এমনকি এই ঋণকে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের নীরব ঘাতকও বলা হয়ে থাকে। বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের তৃতীয় মেয়াদে নতুন অর্থমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নিয়েই অর্থনীতিতে গতি ফেরাতে এই নীরব ঘাতক দূরীকরণে নজর দেন আ হ ম মুস্তফা কামাল। খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে বিশেষ সুবিধা প্রদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। ইচ্ছাকৃত নয়, নানাবিধ কারণে মন্দ ও ক্ষতি জনিত মানে শ্রেণিকৃত খেলাপি হয়ে যাওয়া এবং ব্যবসা থমকে যাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোকে আবার সচল করার উদ্যোগ নেন। চিন্তা ছিল নগদ অর্থ ব্যাংকে আসবে। ক্ষতিগ্রস্ত ব্যবসায়ীরা নতুন করে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ পাবে, বন্ধ কলকারখানার চাকা সচল হবে এবং বাড়বে কর্মসংস্থান। এ জন্য ২০১৯ সালের মে মাসে জারি করা এক সার্কুলারে বলা হয়, ঋণ খেলাপিরা ডিসেম্বর ২০১৮ পর্যন্ত স্থিতির ওপর মাত্র ২ শতাংশ ডাউনপেমেন্ট প্রদান করে ঋণ পুনঃতফসিলের সুযোগ পাবেন। পরবর্তীতে নানা কারণে এই সময় বৃদ্ধি পেয়ে ২০২০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। খেলাপি ঋণ নিয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের এ যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত সঠিক তদারকির অভাবে প্রায় ৫ বছরেও সামনে আগায়নি। এমনকি এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে পরবর্তীতে অর্থমন্ত্রী, আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ ও বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো ধরনের উদ্যোগও চোখে পড়েনি। এই নিয়ে বিভিন্ন সময়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে সবাই সভা-সেমিনারে ব্যস্ত বলে জানিয়েছেন। অথচ এই সুবিধা নেয়ার জন্য যারা অবেদন করেছেন অধিকাংশেরই দীর্ঘদিন থেকে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। বিস্তারিত