সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনের নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত রোদ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট প্রদান করেন ভোটাররা। নির্বাচনের ফলে দুই সিটিতেই মেয়র পদে বিপুল ভোটে নৌকার প্রার্থীরা জয় লাভ করেন। রাজশাহীতে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তিনি পান ১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৯৭ ভোট আর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আগেই নির্বাচন বর্জন করা ইসলামী আন্দোলনের মুরশিদ আলাম পান ১৩ হাজার ৩৯৩ ভোট। লিটন ১ লাখ ৪৬ হাজার ৪০৪ ভোট বেশি পেয়ে নির্বাচিত হন। সিলেটে ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৪ ভোট পেয়ে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির নজরুল ইসলাম বাবুল পান ৫০ হাজার ৩২১ ভোট। তবে জাতীয় পার্টি এ ফল প্রত্যাখ্যান করেছে।
সকাল থেকেই সিলেট ও রাজশাহীতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে কেন্দ্রে কেন্দ্রে ভোটাররা লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট প্রদান করেন। এ সময় নারী-পুরুষ ভোটারদের সরব উপস্থিতিতে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করে। তবে রাজশাহীতে ভোটগ্রহণকালে এক পর্যায়ে বৃষ্টি হওয়ায় কিছু সময়ের জন্য ভোটার উপস্থিতি কমলেও পরে আবার বাড়ে। প্রথমবারের মতো ইভিএমে (ইলেক্ট্রনিক ভোর্টিং মেশিন) ভোট দিয়ে খুশি ভোটাররা। তবে সবচেয়ে বেশি খুশি হয় তরুণ ভোটাররা। রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে বসে সিসি ক্যামেরায় সার্বক্ষণিক ভোট পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। অবাধ সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ ভোট হওয়ায় জাতীয় নির্বাচনের আগে আবারও পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয় ইসি। এ কারণে সন্তোষ প্রকাশ করে তারা। সেই সঙ্গে সর্বমহল থেকে স্বস্তি প্রকাশ করা হয়।
সিলেট ও রাজশাহী সিটি করপোরেশনে ভোটগ্রহণকালে কোনো ধরনের সহিংস ঘটনা ঘটেনি। কোনো প্রার্থীই ভোটগ্রহণের অনিয়ম নিয়ে তেমন অভিযোগ করতে পারেনি। তবে দু’একটি ওয়ার্ডে কাউন্সিলর প্রার্থী-সমর্থকদের মধ্যে ছোটখাটো দু’একটি বাকবিত-ার ঘটনা ঘটেছে। শান্তিপূর্ণ পরিবেশে ভোট হওয়ায় স্বস্তি প্রকাশ করেছে দুই সিটির সর্বস্তরের মানুষ। সিসি ক্যামেরায় নির্বাচন পর্যবেক্ষণকালে কোনো অনিয়মের প্রমাণ পায়নি ইসি। এর ফলে ৩ ধাপে অনুষ্ঠিত ৫ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শেষ ধাপে অনুষ্ঠিত সিলেট ও রাজশাহীতেও সুষ্ঠু নির্বাচনের অনন্য দৃষ্টান্ত স্থাপন করলো ইসি।
সিটি করপোরেশন নির্বাচনের আগে বিভিন্ন মহল থেকে যে আশঙ্কার কথা বলা হয়েছিল তা উড়িয়ে দিয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হওয়ায় সর্বমহলের প্রশংসা অর্জন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর ফলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে নিরপেক্ষ ভোটের উদাহরণ সৃষ্টি করে নিজেদের ইমেজ ও গ্রহণযোগ্যতা বৃদ্ধির পাশাপাশি সর্বমহলের কাছে নিরপেক্ষতার পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হতে সক্ষম হয় ইসি। এ নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ায় বর্তমান সরকারেরও ইমেজ বৃদ্ধি পায়। দলীয় সরকারের অধীনেও যে সুষ্ঠু নির্বাচন হতে পারে ৫ সিটি করপোরেশনের শান্তিপূর্ণ ভোট তা প্রমাণ করেছে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করছেন।
সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার জন্য স্থানীয় প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর তৎপরতাও ছিল চোখে পড়ার মতো। নির্বাচনী এলাকায় সর্বত্র ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ত্রিস্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনী। তাই নির্বাচনের সার্বিক পরিবেশ ছিল শান্তিপূর্ণ। ইভিএমে ধীরগতি, বৃষ্টি ও কেউ কেউ কাজকর্ম সেরে শেষের দিকে আসায় কোনো কোনো কেন্দ্রে ভোটারদের ভিড় থাকায় বিকেল ৪টার পরও ভোটগ্রহণ করা হয়। ভোট শেষে কেন্দ্র কেন্দ্রে গণনার পর ফল ঘোষণা করা হয়। পরে সব কেন্দ্রের ভোটের হিসাব যোগ করে রিটার্নিং কর্মকর্তা মেয়র ও কাউন্সিলর পদে চূড়ান্ত ফল ঘোষণা করেন। ভোটগ্রহণ ও ফল ঘোষণার সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর নিরাপত্তা নিশ্চিত করে।
দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটের অনিয়ম প্রতিরোধে কেন্দ্রে কেন্দ্রে স্থাপন করা হয় সিটি ক্যামেরা। প্রতিটি ভোটকেন্দ্রের ভেতরে ও বাইরে একাধিক সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হয়। এই সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে বড় পর্দায় সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন নির্বাচন কমিশনার ও ইসির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সাংবাদিকদেরও স্ক্রিনে ভোটের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করার সুযোগ দেওয়া হয়।
বিএনপি ও জামায়াত দুই সিটির মেয়র পদে নির্বাচন না করলেও কাউন্সিলর পদে ওই দুই দলের অর্ধশতাধিক স্থানীয় নেতা নির্বাচনে অংশ নেন। আর ইসলামী আন্দোলন প্রার্থী দিয়েও আগেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দেওয়ায় সিলেট ও রাজশাহীতে মেয়র পদে জাতীয় পার্টি ছাড়া আর কোনো দলের উল্লেখযোগ্য কোনো প্রার্থী ছিল না। মেয়র পদে স্বতন্ত্র প্রার্থীদেরও ভোটারদের কাছে তেমন পরিচিতি ছিল না। তাই মেয়র পদে ভোট দিতে ভোটারদের আগ্রহ কম ছিল বলে ভোটার উপস্থিতি তুলনামূলক কম হয়।
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে যে ৪ জন নির্বাচন করেছেন। তারা হলেন আওয়ামী লীগের এ এইচ এম খায়রুজ্জামান, জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন, জাকের পার্টির এ কে এম আনোয়ার হোসেন ও ইসলামী আন্দোলনের মুরশিদ আলম।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে লড়েছেন ৮ জন। এ ছাড়া ৪২টি ওয়ার্ডে সাধারণ কাউন্সিলর পদে ২৭৩ জন ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ৮৭ জন নির্বাচন করেছেন। সিলেট সিটি করপোরেশনে এবার ভোটার ছিল ৪ লাখ ৮৭ হাজার ৭৫৩ জন। এর মধ্যে ২০ শতাংশই ছিল নতুন ভোটার। তাই এই তরুণ ভোটাররা উৎসবমুখর পরিবেশে কেন্দ্রে গিয়ে প্রথমবারের মতো ভোট প্রদান করেছেন। সিলেট সিটিতে ভোট কেন্দ্র ছিল ১৯০টি এবং ভোটকক্ষ ছিল ১ হাজার ৩৬৪টি।
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে নির্বাচন করেছেন ৮ জন। আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এছাড়া জাতীয় পার্টির প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল, জাকের পার্টির মো. জহিরুল আলম এবং স্বতন্ত্র মো. আবদুল হানিফ কুটু, মো. শাহ জামান মিয়া, মো. ছালাহ উদ্দিন রিমন, মোশতাক আহমেদ রউফ মোস্তফা ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মাহমুদুল হাসান। যদিও ইসলামী আন্দোলন আগেই নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে। বিএনপি ও জামায়াত মেয়র পদে নির্বাচন না করলেও কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করেছেন এ দুই দলের ৬৩ জন স্থানীয় নেতা। এর মধ্যে বিএনপির ৪৩ জন ও জামায়াতের ২০ জন।
চাচা-ভাতিজার কোলাকুলি ॥ রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী এএইচ এম খায়রুজ্জামান লিটন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন সম্পর্কে চাচা-ভাতিজা। দুজনই নিজ নিজ দলের প্রেসিডিয়াম মেম্বার।
ভোট না দিয়ে দাদা বাড়িতে সিলেটের মেয়র আরিফ ॥ দলের সিদ্ধান্ত মেনে ভোটে অংশগ্রহণ ও ভোট প্রদানে বিরত থাকেন সিলেটের বর্তমান মেয়র আরিফুল হক। বুধবার ভোটগ্রহণকালে তিনি সিলেটে অবস্থান না করে দাদা সুনামগঞ্জে দাদা বাড়িতে চলে যান। সেখানে তিনি গাছ থেকে পাড়া আম কুড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্নভাবে সময় কাটান।
ভোট প্রদানকালে প্রার্থীরা যা বলেন ॥ সকাল ৮টায় নগরীর পাঠানটুলায় শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে সপরিবারে গিয়ে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন সিলেট সিটি করপোরেশনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী। এর পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি বলেন, বিশাল ব্যবধানে নৌকার জয় নিশ্চিত। তবে ফলাফল যাই হোক মেনে নেব। সকাল সাড়ে ৯টায় নগরীর সাগরদীঘিরপারের আনন্দ নিকেতন স্কুলে ভোট দেওয়ার পর জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল অভিযোগ করেন, কোনো কোনো কেন্দ্র থেকে লাঙলের এজেন্টদের বের করে দেওয়া হয়েছে। তবে কোনো কোনো কেন্দ্র থেকে এজেন্ট বের করা হয়েছে তা সুনির্দিষ্ট করে তিনি বলতে পারেননি।
সিসি ক্যামেরায় ভোট পর্যবেক্ষণ ॥ রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবন থেকে রাজশাহী ও সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোট পর্যবেক্ষণ করে নির্বাচন কমিশন। সকাল ৮টায় থেকে শুরু করে বিকেল ৪টায় ভোটগ্রহণের শেষ পর্যন্ত তারা সিসি ক্যামেরায় পর্যবেক্ষণ করেন।
সিলেটে বিজয়ী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ॥ সিলেট অফিস থেকে সালাম মশরুর জানান, বিপুল ভোটের ব্যবধানে আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র পদপ্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছেন। আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ১৯০টি কেন্দ্রে পেয়েছেন ১ লাখ ১৮ হাজার ৬১৪ ভোট। আর তার নিকতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল পেয়েছেন ৫০ হাজার ৩২১ ভোট। সিলেট সিটি নির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪৭ শতাংশ।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোটগ্রহণে ভোটারদের ছিল স্বতঃস্ফূর্ত উপস্থিতি। ইভিএম নিয়ে ভোটারদের মধ্যে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া থাকলেও কোনো ধরনের জটিলতা ছাড়াই নির্দ্বিধায় ভোট দিতে পেরেছেন ভোটাররা। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট দিয়ে খুশি ভোটাররা। আওয়ামী লীগ মনোনীত মেয়র প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী নিজের ভোট প্রদান করেন সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে নগরীর ৮নং ওয়ার্ডের পাঠানটুলা শাহজালাল জামেয়া ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে। ভোট প্রদান শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে নির্বাচনী পরিবেশে সন্তুষ্টি প্রকাশ করে নগরবাসীকে ভোটকেন্দ্রে এসে ভোটাধিকার প্রয়োগ করে নৌকা মার্কাকে বিজয়ী করার আহ্বান জানান।
এ সময় নিজের জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদ ব্যক্ত করে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেন, নির্বাচনে জয়-পরাজয় আছে, আমি জয়ের বিষয়ে শতভাগ আশাবাদী, যদি কোনো কারণে বিজয়ী হতে না পারি, যিনি বিজয়ী হবেন আমি তার বাড়িতে ফুল নিয়ে যাব। এ সময় আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সহধর্মিণী হলি চৌধুরীসহ দলীয় নেতাকর্মীরা সঙ্গে ছিলেন। এর আগে, সকালে আনোযারুজ্জামান চৌধুরী তার বৃদ্ধ মায়ের দোয়া নিয়ে বাসা থেকে বের হন। ভোট দেওয়ার পর তিনি বিভিন্ন কেন্দ্র পরিদর্শনে যান।
১০ বছর পর সিলেট নগর ভবন পুনরুদ্ধার করেছে আওয়ামী লীগ। ২০১৩ সালের নির্বাচনে বর্তমান মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন অকাল প্রয়াত সাবেক মেয়র বদর উদ্দিন আহমদ কামরান। জনপ্রিয়তার কারণে ফখরুদ্দিন-মঈন উদ্দিন সরকারের আমলে ২০০৮ সালের নির্বাচনে কারাগারে থেকেও বিশাল ভোটের ব্যবধানে জয়ী হয়েছিলেন বদর উদ্দিন কামরান।
বুধবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়া সিলেটে চলে ভোটগ্রহণ। ভোটগ্রহণের সময় বিকেল ৪টা পর্যন্ত থাকলেও কয়েকটি কেন্দ্রের ভেতরে ভোটারদের লাইন থাকায় ৪টার পরেও কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হয়। ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-এর মাধ্যমে সিলেটে ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ভোটগ্রহণ শুরুর আগে- সকাল ৭টা থেকেই লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন ভোটাররা। ইভিএমে ভোট দেওয়া নিয়ে এক ধরনের কৌতূহল কাজ করে তরুণ ভোটারদের মধ্যে। বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনায় নারী-পুরুষ ভোটাররা ভোট দিতে শুরু করেন। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রে পুরুষদের চাইতে নারী ভোটারের ছিল দীর্ঘ লাইন। তাদের মাঝেও ছিল বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা। ইভিএম ভোট দিয়ে খুশি নারীরাও। কেন্দ্রগুলোতে নারীদের দীর্ঘ লাইন দেখা গেছে।
৬নং ওয়ার্ডের ভোটার ইফফাত লামমীম জানান, প্রথম ভোট ইভিএমে দেব বলে অনেক এক্সাইটেড ছিলাম। জটিলতা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছি। মনে হচ্ছে ভোটের জন্য ইভিএম পদ্ধতি ভালো। ভোট দিতে সময়ও কম লেগেছে।
৪নং ওয়ার্ডের ভোটার স্কুল শিক্ষক রোমানা জানান, ইভিএমে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। ইভিএমের মাধ্যমে ভোট দিতে পারে বেশ আনন্দ লাগছে। কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই ভোট দিতে পেরেছি। ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি ভোট ব্যালট পেপারে হয়। কিন্তু এবার ভোট দিয়েছি ব্যালট সিল ছাড়া। বিষয়টা অন্য রকম লাগছে।
মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুলের অভিযোগ ॥ ৯নং ওয়ার্ডের আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে ভোট দিয়ে জাতীয় পার্টির মনোনীত মেয়র প্রার্থী নজরুল ইসলাম বাবুল সাংবাদিকদের বলেন আমি ভোট দিতে এসে দেখি আনন্দ নিকেতন কেন্দ্রে নৌকার প্রার্থীর পক্ষে পেশিশক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। কেন্দ্রের ভেতরে এজেন্ট ও ভোটারদের হুমকি-ধমকি দেওয়া হচ্ছে।
ভোটারদের উপস্থিতি ॥ সিলেট সিটি করপোরেশনের ভোটে ভোটার উপস্থিতি নিয়ে শঙ্কা ছিল। ভোটার উপস্থিতি নিয়ে আওয়ামী লীগের যেমন চ্যালেঞ্জ ছিল, তেমনি নির্বাচন কমিশনেরও ছিল। বৈরী আবহাওয়া এবং বিএনপি-জামায়াত ভোট বর্জন করায় এ শঙ্কা প্রকট হয়েছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত চিত্র অনেকটা ভিন্ন লক্ষ্য করা গেছে। প্রায় প্রতিটি কেন্দ্রেই ভোটারদের দীর্ঘ লাইন সৃষ্টি হয়। বিশেষ করে নতুন ১৫টি ওয়ার্ডের ভোট কেন্দ্রে উপস্থিতি ছিল লক্ষণীয়। সব কেন্দ্রে নারী ভোটারদের উপস্থিতিও ছিল চোখে পড়ার মতো। অনুকূল আবহাওয়ার কারণেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে দেখা গেছে ভোটারদের উপস্থিতি।
দুই কাউন্সিলর প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষ ॥ দুই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় এক পক্ষ আরেক পক্ষের নির্বাচনী ক্যাম্প ভাঙচুর করেছে। এতে উভয় পক্ষের কয়েকজন আহত হয়েছেন। বুধবার দুপুর ১২টার দিকে নগরীর ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কেশবপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভোটকেন্দ্রের বাইরে সংঘর্ষের এ ঘটনা ঘটে।