সিরাজগঞ্জের কাজীপুরে যমুনার তীর সংরক্ষণ বাঁধের অন্তত ১৫০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ অবৈধভাবে যমুনা নদীর তীরে স্তূপ করে রেখে বালু ব্যবসা চালিয়ে যাওয়ায় এই ধস দেখা দিয়েছে। এর আগে গত ৭ জুলাই কাজীপুর মেঘাই স্পার বাঁধের ৩০ মিটার এলাকা নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়।
বুধবার ভোরে কাজীপুর উপজেলার মেঘাই ১ নম্বর স্পারের উজানে এই ধস দেখা দেয়। খবর পেয়ে ধস ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড ভোর থেকেই জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে।
স্থানীয়রা জানান, রাতে হঠাৎ করেই ধসে যেতে থাকে নদীর তীররক্ষা বাঁধ। এ সময় বাঁধের পাশে নোঙর করে রাখা জেলেদের ৩০টি নৌকা মাটিচাপা পড়ে। অন্যদিকে বালু ব্যবসায়ীদের স্তূপ করে রাখা বালুর একটি বড় অংশও নদীগর্ভে চলে যায়। ধসের কারণে হুমকির মুখে পড়েছে কাজীপুর থানা, খাদ্যগুদাম, মডেল মসজিদ, স্কুল-কলেজ, মাদরাসাসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ভাঙনের ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এলাকাবাসীর দাবি, কয়েক জন ব্যবসায়ী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিয়ম না মেনে নদী তীরের ১০ ফুটের মধ্যে বালু স্তূপ করে রেখে ব্যবসা করার কারণেই এই ধস দেখা দিয়েছে। গত ২০ জুন ঐ বালুর পয়েন্ট অপসারণের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বরাবর লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও বালুর স্তূপ সরানো হয়নি।
কাজীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) কাজী মো. অনিক ইসলাম এসব তথ্য নিশ্চিত করে জানান, রাত সাড়ে ৩টার দিকে ইউপি চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান বিপ্লব আমাকে ভাঙনের বিষয়টি জানালে তখনই উপজেলা চেয়ারম্যানকে সঙ্গে নিয়ে সেখানে যাই এবং পাউবোর কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলি। সকাল ৬টা থেকে পাউবো জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছে। রাতে ভাঙনটা বেশি ছিল। এখন একটু কম।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী রনজিত কুমার সরকার জানান, ওখানে আমাদের প্রটেকটিভ বাঁধ ছিল। ভোরে সেখানে ধস শুরু হয়। সকাল পর্যন্ত অন্তত ১৫০ মিটার নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। খবর পেয়ে আমরা ভোর থেকেই সেখানে জিওব্যাগ ডাম্পিং শুরু করেছি। এখন ভাঙন নিয়ন্ত্রণে। তিনি বলেন, বালু ব্যবসায়ীদের ড্রেজারের ভাইব্রেশনের কারণে বাঁধ দুর্বল হয়ে থাকতে পারে। এছাড়া গত কয়েক দিন ধরে ব্যাপকভাবে নদীর পানি বাড়াতে তীব্র স্রোতের সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণেই ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পানি উন্নয়ন বোর্ড সিরাজগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান জানান, বুধবার ভোরে কাজীপুরের মেঘাই সলিড স্পারের উজানে পানি বৃদ্ধির ফলে তীব্র স্রোতের কারণে নদীর তলদেশ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ১৫০ মিটার ধসে গেছে। সংবাদ পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে ডাম্পিং শুরু হয়েছে। বর্তমানে ভাঙন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।