দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘনিয়ে আসার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট ও বিরোধী দলগুলোর রাজনৈতিক কর্মসূচি বাড়ছে। বড় ধরনের শোডাউনের মধ্য দিয়ে দু’পক্ষই ক্ষমতা প্রদর্শনের চেষ্টা করছে। প্রতিপক্ষের মুখোমুখি হলেই রক্ষক্ষয়ী সংঘর্ষে জড়াচ্ছে।
আন্দোলন কর্মসূচিতে কর্তৃত্ব জাহির করতে গিয়ে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যেও হামলা-পাল্টা হামলার ঘটনা ঘটছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ছয় মাসে ১৭৯টি রাজনৈতিক সহিংসতার ঘটনায় ২ হাজার ৪২২ জন আহত এবং ১৪ জন নিহত হয়েছেন। উত্তপ্ত রাজপথ সামলাতে র্যাব-পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী অন্যান্য বাহিনী প্রচণ্ড চাপের মুখে পড়েছে।
আন্দোলন কর্মসূচির নামে রাজপথে কেউ যাতে জ্বালাও-পোড়াও ও ভাঙচুরসহ কোনো ধরনের তাণ্ডব চালাতে না পারে সে জন্য আগাম গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহের পাশাপাশি টহল কার্যক্রম জোরদার রাখার প্রস্তুতি নিতে হচ্ছে। সভা-সমাবেশ, পদযাত্রা ও মিছিলে প্রতিপক্ষের আকস্মিক হামলা মোকাবিলায় প্রতিটি কর্মসূচির গুরুত্বপূর্ণ স্পটের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা র্যাব-পুলিশের বড় দায়িত্ব হয়ে দাঁড়িয়েছে। কর্মসূচি স্থলে আসা-যাওয়ার পথে তল্লাশি অভিযান চালাতে হচ্ছে। একই সঙ্গে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি চলাকালে দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা যাতে সংঘর্ষ জড়িয়ে পড়তে না পারে এ জন্য গড়ে তুলতে হচ্ছে শক্ত প্রতিরোধ দেয়াল।
অন্যদিকে রাজনৈতিক সহিংসতার নিত্য-নতুন ঘটনায় মামলা রুজু, তদন্ত এবং সংশ্লিষ্ট আসামিদের গ্রেপ্তারে পুলিশকে সর্বোচ্চ তৎপর থাকতে হচ্ছে। চোরাগোপ্তা হামলা, বোমাবাজি ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগের ঘটনা নতুন করে যাতে আর ঘটতে না পারে এজন্য চিহ্নিত নাশকতাকারীদের গতিবিধিও সার্বক্ষণিক নজরদারিতে রাখতে হচ্ছে। সব মিলিয়ে পুলিশের কাজের চাপ স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কয়েকগুণ বেড়েছে।
এ প্রসঙ্গে ঢাকা মহানগর পুলিশের এডিসি পদমর্যাদার একজন কর্মকর্তা বলেন, চুরি, ডাকাতি, খুন, ছিনতাই, চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড নিয়ন্ত্রণে মাঠপর্যায়ের প্রতিটি পুলিশ কর্মকর্তা-সদস্যকে সার্বক্ষণিক তৎপর থাকতে হয়। এছাড়া বিভিন্ন অপরাধের মামলা তদন্ত তাদের রুটিন ওয়ার্ক। অথচ গত কয়েক মাস ধরে আওয়ামী লীগ-বিএনপির একের পর এক পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি এবং এতে সৃষ্ট সংঘাত-সহিংসতা মোকাবিলা করতে পুলিশকে প্রায়ই ব্যস্ত থাকতে হচ্ছে। যা অপরাধ দমন ও মামলা তদন্ত কার্যক্রমকে ভীষণভাবে বাধাগ্রস্ত করছে।বিস্তারিত