বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারতের কূটনৈতিক বার্তাকে দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বলছে বিএনপি। আর আওয়ামী লীগ বলছে, কোনও দেশের কোনও বার্তা নয় তারা তাকিয়ে আছেন জনগণের দিকে। বরং বিএনপিই যুক্তরাষ্ট্রের হস্তক্ষেপের আশায় বসে আছে বলে অভিযোগ আওয়ামী লীগের।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি সমর্থন জানিয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কূটনৈতিক বার্তা দিয়েছে ভারত এমন খবর জানিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের আনন্দবাজার পত্রিকা আর জার্মানির ডয়েচে ভেলে। প্রতিবেদনগুলো উল্লেখ করে, কূটনৈতিক বার্তায় বলা হয়েছে শেখ হাসিনা সরকার দুর্বল হলে জামাতের মত মৌলবাদী সংগঠন শক্তিশালী হয়ে উঠবে যা ভারত ও যুক্তরাষ্ট্র উভয়ের জন্যই ক্ষতির কারণ হবে বলে মনে করে ভারত।
বাংলাদেশের বিষয়ে ভারতের এমন মন্তব্যকে দুঃখজনক বলেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে জিয়াউর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন তিনি।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, মৌলবাদী শক্তি ক্ষমতা আসবে না। ভারত যদি তাদের পূর্বের অবস্থানে অনড় থাকে তবে তা এই অঞ্চলের জন্য শুভকর হবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের মানুষের গণতান্ত্রিক আকাঙ্ক্ষাকে ভারত মর্যাদা দেবে এবং এই দেশে সত্যিকার অর্থেই সব দলের অংশগ্রহণে, সবার সদিচ্ছায় একটি নিরপেক্ষ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের ব্যাপারে তারা পূর্ণ সমর্থন জ্ঞাপন করবে।
তিনি বলেন, ‘একথা আমরা কখনোই বলতাম না, আমরা দেখতে পাচ্ছি এটা যদি সত্য হয়ে থাকে, তাহলে তারা বাংলাদেশের রাজনীতির অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে এ মন্তব্যগুলো করছে।’
বিএনপির মহাসচিব বলেন, এক দলীয় শাসন দীর্ঘস্থায়ী করতে সরকার মানুষের সব অধিকার হরণ করেছে। সব প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করেছে। এজন্য এক দফা দাবি আদায়ে মাঠে নেমেছে বিএনপিসহ বিরোধী শক্তি।
সরকার মানুষকে জিম্মি করে দেশে রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করার চক্রান্ত করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই বক্তব্যের প্রেক্ষিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেনে নির্বাচন নিয়ে ভারতের এমন কোন বার্তা তারা পাননি। বরং বিএনপিই যুক্তরাষ্ট্রের আশায় বসে আছে বলে অভিযোগ তার।
শনিবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত শোক দিবসের অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন ওবায়দুল কাদের।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের দাবি করেছেন, বাংলাদেশের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে ভারতের বার্তা দেওয়া দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ নয় ।
তিনি বলেন, আঞ্চলিক রাজনীতির বিষয়ে এই ভূখণ্ডে ভারত ও আমেরিকার অভিন্ন স্বার্থ রয়েছে। তাই ভারত আমেরিকাকে কিছু বললে তারা তাদের স্বার্থে বলেছে।
তিনি বলেন, ভারত ভীতিতে সারা রাত ঘুম ভেঙে যায় বিএনপি নেতাদের। ভারতের সাথে মিত্রতা করতে গিয়েছিল বিএনপি। কিন্তু সেই মিত্রতা আর গড়ে ওঠেনি।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিদেশি বন্ধুদের সুষ্ঠু নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ইতোমধ্যেই দিয়েছে আওয়ামী লীগ। যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে অভিন্ন কৌশলগত কারণে ভারত বর্তমান সরকারকে হারাতে চায়না, এই বার্তাই যুক্তরাষ্ট্রকে দিয়েছে ভারত। এটা হস্তক্ষেপ নয়।
কোন কূটনৈতিক তৎপরতা নয়, ক্ষমতায় বসাতে পারে একমাত্র জনগণ, বলেন কাদের।