বহুল প্রতিক্ষীত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন আজ। বিকাল সাড়ে ৩টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের পুরাতন বাণিজ্য মেলার মাঠে এক্সপ্রেসওয়েটির উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরে সুধী সমাবেশে গুরুত্বপূর্ণ বক্তব্যে দেবেন তিনি।
এদিকে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে সুধী সমাবেশকে জনসমুদ্র পরিণত করবে আওয়ামী লীগ। নির্বাচনের আগে দলের কর্মী-সমর্থকদের বড় জমায়েতের মধ্যদিয়ে নিজেদের সাংগঠনিক শক্তির প্রদর্শন দেখাবে ক্ষমতাসীনরা। দলটির নেতারা বলছেন, আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকারের নেতৃত্বে বদলে গেছে বাংলাদেশের দৃশ্যপট। বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে পরিতর্বন হয়েছে দেশের মানুষের জীবন-যাত্রার মান। সংসদ নির্বাচনের আগে সরকারের এসব উন্নয়নচিত্র তুলে ধরতেই বড় জমায়েতের টার্গেট আওয়ামী লীগের।
জানা যায়, চলতিসহ আগামী কয়েক মাসের মধ্যে দেশের বেশকিছু মেগাপ্রকল্পের উদ্বোধনের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে সরকার। সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর-ফার্মগেট অংশের যান চলাচলের জন্য উদ্বোধন করা হবে বহুল প্রতিক্ষীত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর আগারগাঁও থেকে মতিঝিলে মেট্রোরেলের উদ্বোধন করা হবে। উদ্বোধন শেষে সাভারে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় সুধী সমাবেশ করা হবে।
এ ছাড়া পদ্মা সেতু রেলসংযোগ প্রকল্প, কক্সবাজার-দোহাজারী রেলপথ নির্মাণ, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল, খুলনা-মোংলা রেলপথ নির্মাণ এবং আখাউড়া-আগরতলা রেলপথসহ সরকারের গুরুত্বপূর্ণ আরও বেশকিছু প্রকল্পের উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে সরকারের। সবগুলো প্রকল্পের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে বড় গণজমায়েত ঘটাবে আওয়ামী লীগ। গণজমায়েতের মধ্যদিয়ে সাধারণ মানুষের কাছে তুলে ধরবেন সরকারের সার্বিক উন্নয়ন চিত্র। সংসদ নির্বাচনে ফের যেন দেশের মানুষ নৌকায় ভোট দেয়- সে কারণে এমন পরিকল্পনা নেয়া হয়েছে।
আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে, কর্নেল (অব.) ফারুক খান মানবকণ্ঠকে বলেন, বহুল প্রতিক্ষীত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধন বাংলাদেশের মানুষের জীবন-যাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এর সুযোগ-সুবধা পুরো দেশের মানুষ উপভোগ করবে। আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন সরকার সব সময় দেশ ও দেশের মানুষের কল্যাণে কাজ করে। তা ইতোমধ্যেই প্রমাণ হয়েছে।
তথ্যমতে- ঘরের দরজায় কড়া নাড়ছে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন। গত দুটি সংসদের থেকে এবার নির্বাচন চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। বিদেশিদের কূটনৈতিক তত্পরতা, মার্কিন ভিসানীতি, বিএনপি-জামায়াতের আন্দোলন, দলীয় কোন্দলন, দলীয় এমপিদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ডসহ নানামুখী সংকটের নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসাবে দেখছেন ক্ষমতাসীনরা। এমন অবস্থায় নির্বাচনের মাঠে নিরষ্কুশ জনসমর্থন চায় আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড। এ লক্ষ্যে জোরালো কর্মসূচি নিয়ে মাঠে থাকার পরিকল্পনা করা হচ্ছে। চলতি মাস থেকে পুরোদমে নির্বাচনী যাত্রা শুরু করছে দলটি।
এরই অংশ হিসাবে আজ ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের প্রথম অংশের উদ্বোধন ঘিরে মহাসমাবেশের মধ্যদিয়ে নিজেদের শক্তি জানান দেবে আওয়ামী লীগ ও দলটির সহযোগী এবং ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এছাড়া ঢাকা ও ঢাকার বাইরে অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প অর্থাৎ মেগা প্রজেক্টের উদ্বোধন ঘিরেও কয়েকটি সমাবেশের পরিকল্পনা ইতোমধ্যে নেয়া হয়েছে।
নির্বাচনী যাত্রার অংশ হিসাবে খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল ও সিলেটে বিভাগীয় সমাবেশ হবে। জেলা পর্যায়েও পালিত হবে এসব কর্মসূচি। এর বাইরে ঢাকাসহ সারাদেশে ছাত্র সমাবেশ, সুধী সমাবেশ, মিছিল, শোভাযাত্রা এবং আলোচনা সভা ও সেমিনারসহ নানা কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত রয়েছে। এসব কর্মসূচির মধ্য দিয়ে নিজেদের নির্বাচনী প্রস্তুতির পাশাপাশি সংগঠনকে শক্তিশালী ও ঐক্যবদ্ধ করা হবে। একই সঙ্গে, বিএনপি-জামায়াতের নেতিবাচক কর্মকাণ্ড তুলে ধরা এবং বর্তমান সরকারের উন্নয়ন চিত্র সাধারণ মানুষের সামনে তুলে ধরবে আওয়ামী লীগ।
এছাড়া বিএনপির আন্দোলন মোকাবিলায় প্রত্যেকটি কর্মসূচির দিন নানা বিষয় সামনে এনে মাঠে থাকবে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা। যা চলতি মাসসহ অক্টোবর, নভেম্বর, ডিসেম্বর তথা নির্বাচন পর্যন্ত এই কার্যক্রম চলবে। আওয়ামী লীগ নেতাদের ভাষ্যমতে- টানা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় থেকে দেশের সার্বিক উন্নয়ন করেছে আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের নেতৃত্বধীন সরকারের নেতৃত্বে বদলে গেছে বাংলাদেশের দৃশ্যপট। বড় বড় মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যদিয়ে পরিতর্বন হয়েছে দেশের মানুষের জীবন-যাত্রা। শহর থেকে শুরু করে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত লেগেছে উন্নয়নের ছোঁয়া। বিশ্বের বুকে আত্ম মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়েছে। দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা ধরে রাখতে আওয়ামী লীগ সরকারের বিকল্প নেই বলে মনে করেন তারা।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক বলেন, ‘বাংলাদেশের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করতে গণতন্ত্রের পথেই আমাদের হাঁটতে হবে। আমরা আমাদের কর্মসূচির মধ্য দিয়ে দলের নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে জানাতে চাই ও সম্পৃক্ত করতে চাই।’
তিনি বলেন, ‘সামনে জাতীয় নির্বাচন। এই নির্বাচনে জনগণের সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগ ফের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে চায়। কারণ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসলে দেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা অব্যহত থাকবে। জনগণ যেন নৌকায় ভোট দেয়- সে কারণে সরকারের উন্নয়ন চিত্র সাধারণ মানুষের মাঝে তুলে ধরা হবে। এছাড়া এসব সমাবেশের মধ্যদিয়ে এক দিকে যেমন দল সাংগঠনিক ভাবে শক্তিশালী হবে। অন্যদিকে সাধারণ মানুষের জনমর্থন আদায় করা সহজ হবে।’