সাশ্রয়ী মূল্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাবে—এমন পরিকল্পনা থেকে দেশে অনুমোদন দেয়া হয়েছিল অন্তত ডজনখানেক কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র। কিন্তু দিন যতই গড়াচ্ছে ততই ব্যয়বহুল হয়ে উঠছে জীবাশ্ম জ্বালানিভিত্তিক এসব প্রকল্প। আন্তর্জাতিক বাজারে কয়লার দাম বেশি থাকায় বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন খরচ বেশি হচ্ছে। তবে প্রতিবেশী ভারতসহ বিশ্বের বেশির ভাগ দেশ এখনো সাশ্রয়ী মূল্যে কয়লা থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের কিলোওয়াট প্রতি উৎপাদন খরচ কয়েকভাবে হিসাব করা হয়। তা হলো বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জ্বালানি আমদানি ব্যয়, সংশ্লিষ্ট দেশের ট্যারিফ স্ট্রাকচার এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দক্ষতা। এসব কিছুর ওপর নির্ভর করে বিদ্যুতের প্রতি কিলোওয়াট ঘণ্টা দাম হিসাব করা হয়। কয়লার খনিমুখে নির্মিত বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্ষেত্রে ব্যয় নির্ধারণের হিসাব ভিন্ন হয়।
জ্বালানি বিশেষজ্ঞ ও খাতসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, ভারতে কয়লা থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের উৎপাদন ব্যয় ৫-৮ টাকা, চীনে এ ব্যয় ৪-৬ এবং পাকিস্তানে ১০-১২ টাকা। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যয় বিশ্বে কম হবে বলে এ ধরনের বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণ করা হয় বলে জানান জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা। বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যয় অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। আগামীতে এ ব্যয় খুব বেশি তারতম্য হওয়ার সুযোগ নেই।
বাংলাদেশের বিদ্যুৎ খাত নিয়ে গতকাল একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গের গবেষণা প্রতিষ্ঠান বিএনইএফ। ‘বাংলাদেশ পাওয়ার সেক্টর অ্যাট দ্য ক্রসরোডস’ শীর্ষক এ প্রতিবেদনে গ্যাস, কয়লা ও সৌরবিদ্যুতের উৎপাদন খরচের একটি তুলনামূলক চিত্র প্রকাশ করেছে। ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ সাল নাগাদ বাংলাদেশে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের মেগাওয়াটপ্রতি ঘণ্টা উৎপাদন খরচ সর্বনিম্ন ১১০-১৫০ ডলারের মধ্যে ওঠানামা করবে। এবং সেখানে দেখানো হয়েছে, প্রতি মেগাওয়াট ঘণ্টা গড় উৎপাদন খরচ ১২৬ ডলার। প্রতিষ্ঠানটির হিসাব বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুতের দাম বাংলাদেশে প্রতি কিলোওয়াট ১৩ টাকা ৯২ পয়সা (প্রতি ডলার ১১০ টাকা ৫০ পয়সা ধরে)। বিস্তারিত