নিজস্ব প্রতিবেদক
রাজধানীর দক্ষিণখানের আশকোনা এলাকার সড়কটি বছরজুড়েই ড্রেনের পানিতে ডুবে থাকে। সামান্য বৃষ্টি হলেই সড়কে জমে যায় কোমর পানি। ড্রেনেজ লাইন অকেজো থাকায় এই পানি ১০-১৫ দিন জমে থাকে। জলাবদ্ধতার কারণে সড়কের দুই পাশের দোকানগুলো প্রায়ই বন্ধ থাকে। খানাখন্দে ভরা সড়কটি চলা দায় এলাকাবাসীর। গত ৭ বছর সড়ক ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার কোনো উন্নয়ন হয়নি বলে জানান স্থানীয়রা।
জানা যায়, হাজি ক্যাম্প হয়ে আশকোনা-দক্ষিণখান সড়কটি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে নতুন সংযুক্ত হওয়া ৪৩ নম্বর ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়নের জন্য সড়ক অবকাঠামো ড্রেনেজ ব্যবস্থা নির্মাণ ও উন্নয়ন প্রকল্প (ফেজ-১) নেয়। যা গত বছর মার্চে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করেন। প্রকল্পে মোট বরাদ্দ ৪ হাজার ২৫ কোটি ৬২ লাখ টাকা। মোটা অঙ্কের টাকা উন্নয়ন বরাদ্দ রাখা হলেও এই ওয়ার্ডে লাগেনি কোনো উন্নয়নের ছোঁয়া।
সরেজমিন দেখা যায়, বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশন থেকে হাজি ক্যাম্প হয়ে আশকোনা-দক্ষিণখান প্রধান সড়কটি এখন দুর্ভোগের নাম। হাজি ক্যাম্প হয়ে দক্ষিণখান বাজার পর্যন্ত সড়কটিতে কোথাও কোথাও হাঁটু পানি। এতে হেঁটে চলাচল করা দায়। স্থানীয়রা ব্যাটারিচালিত ও প্যাডেলচালিত রিকশায় চলাচল করেন। আর সড়কটির বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য খানাখন্দ রয়েছে। প্রায়ই এসব গর্তে পরে রিকশা উল্টে যাচ্ছে, ঘটছে হাত-পা ভেঙে যাওয়ার মতো দুর্ঘটনা। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের এই সড়ক দিয়ে চলাচল অসম্ভব। এরমধ্যে একটু বৃষ্টি হলেই সড়কে জমে যায় কোমরপানি। এতে সড়কের দুই পাশের দোকানে পানি ঢুকে নষ্ট হচ্ছে মালামাল। সড়কে জলাবদ্ধতার কারণে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যাতায়াতে বিড়ম্বনার শিকার হন। এসব সমস্যার কারণে অতিষ্ঠ স্থানীয়রা। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনের গুরুত্বপূর্ণ দক্ষিণখানের আশকোনায় যাতায়াতের প্রধান হচ্ছে আশকোনা হাজি ক্যাম্প সড়ক। এ এলাকায় বিভিন্ন পেশার লক্ষাধিক মানুষের বসবাস। বিমানবন্দর, ভিআইপি রেলওয়ে স্টেশন ও রাজধানীতে বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বহু চাকরিজীবী এ এলাকায় বসবাস করেন। এলাকাবাসী জানান, হাজি ক্যাম্প থেকে আশকোনা বাজার পর্যন্ত সড়কটির প্রায় এক কিলোমিটার হাঁটুপানিতে সয়লাব। এ সড়কের পাশেই বঙ্গমাতা ফজিলাতুন নেছা সরকারি স্কুল অ্যান্ড কলেজ। ময়লা পানির দুর্গন্ধে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন এখানকার বাসিন্দারা। স্থানীয় মোখলেছুর রহমানসহ কয়েকজন বাসিন্দা জানান, এলাকাবাসীর এ দুর্ভোগের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট জনপ্রতিনিধি ও প্রশাসনের কোনো মাথাব্যথা নেই। দীর্ঘদিন ধরে ময়লা ও পচা পানি বেয়ে গন্তব্যে চলাচল করতে হয়। এ বিষয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধির কাছে অভিযোগ করেও কোনো প্রতিকার পাওয়া যায়নি বলেও জানান তারা। এ পরিস্থিতির জন্য স্থানীয় ওয়ার্ড কমিশনার দায়ী বলে তারা মন্তব্য করেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী খন্দকার মাহবুব আলম বলেন, ডিএনসিসিতে যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলোর উন্নয়ন কার্যক্রম চলছে। এরমধ্যে কয়েকটি সড়কের কাজ চলমান রয়েছে। পর্যায়ক্রমে এসব ওয়ার্ডের সড়ক ও ড্রেনের সংস্কার কাজ করা হবে।