এক সময় কম্পিউটার ছিল শুধুই একটা ধাতব বাক্সের মতো। না ছিল মনিটর, না ছিল কি-বোর্ড কিংবা মাউস। তখনকার কম্পিউটার ছিল অনেকটা ঢাল-তলোয়ারহীন নিধিরাম সর্দার। সেই কম্পিউটারে কী বোর্ড আর মনিটার যোগ করেন অ্যাপলের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা স্টিভ ওয়াজনিয়াক, যিনি স্টিভ জবসের ঘনিষ্ট বন্ধু।
২৯ জুন ১৯৭৫। ওজনিয়াকের বাড়িতে ডাক পড়ে স্টিভের। সেখানে গিয়ে তো স্টিভের চোখ ছানাবড়া! কী তৈরি করেছেন তাঁর বন্ধু! ঘর ভর্তি ছড়ানো ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, শোল্ডারিং আয়রন, একটা খোলা টেলিভিশন মনিটর আর একটা টাইপ রাইটার।
ওজনিয়াক স্টিভকে বলেন কাগজহীন টাইপরাইটারে একটা কিছু টাইপ করতে।
স্টিভ টাইপ করলেন আর অবাক হয়ে দেখলেন তিনি যা টাইপ করছেন সেগুলো টেলিভিশন মনিটারে লেখা হয়ে ভাসছে। কম্পিটার প্রযুক্তিতে সে এক মাহেন্দ্রক্ষণ! এখন এই যুগে এসে আমরা কেউ কীবোর্ড আর মনিটর ছাড়া কম্পিউটার কল্পনা করতে পারি না। এই কীবোর্ড-মনিটরের জন্ম হয়েছিল সেদিন ওজনিয়াকের ঘরে। ওজনিয়াক বলেছেন, সেটা ছিল পার্সোনাল কম্পিউটারের জন্য ইউরেকা মোমেন্ট।
ওজনিয়াক কম্পিউটারের সঙ্গে সেদিন সত্যিকারের টিভির মনিটার জুড়ে দিয়েছিলেন। আর কি-বোর্ড হিসেবে ব্যবহার করেছিলেন বাজারে প্রচলিত টাইপরাইটার। ওজনিয়াকের এই বুদ্ধিই কম্পিউটার প্রযুক্তি সম্পূর্ণ বদলে দেয়।
নতুন এই কম্পিউটার তৈরির পর স্টিভ জবস তাঁর বাবার গ্যারেজে কিছুটা জায়গা চেয়ে নেন। সেখানে বসানো হয় কম্পিউটার তৈরির সরঞ্জাম।
শুরু হয় কম্পিউটর তৈরি, যেটা সদ্য বানিয়েছেন ওজনিয়াক। ওজনিয়াকের সেই কম্পিউটারের যন্ত্রপাতিগুলো ছিলো ছড়ানো-ছিটানে। দুই বন্ধু সেগুলোকে একটা একটা বাক্সে আবদ্ধ করার চেষ্টা করেন। কারণ স্টিভের ব্যাবসায়ী-বুদ্ধি চাগিয়ে উঠেছে তখন। বন্ধুর তৈরি কম্পিউটারটিকেও তিনি বিক্রি করতে চান। তাঁরা সেই কম্পিউটারের নাম দেন অ্যাপল।
সূত্র: ন্যাশনাল জিওগ্রাফি