নির্ভার শেখ হাসিনা, আতঙ্কে নেতাকর্মীরা

নির্ভার শেখ হাসিনা, আতঙ্কে নেতাকর্মীরা

সৈয়দ বোরহান কবীর

আসিতেছে ‘আন্দোলন’
সরকারের মধ্যে খুনী মোশতাকের প্রেতাত্মারা
আওয়ামী লীগে ইল্যুশন

 

নির্ভার শেখ হাসিনা। তিনি উৎফুল্ল, প্রাণবন্ত। বিরামহীন ভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। মাঝে মধ্যে ভাবি, দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তায় তিনি কি একটু হলেও উদ্বিগ্ন হন না? দেশের অর্থনৈতিক সংকট কি তাকে কিছুটা হলেও ভাবনায় ফেলে না? আন্তর্জাতিক বিশ্বে বাংলাদেশকে নিয়ে নানামূখী ষড়যন্ত্র চলছে। এসব ষড়যন্ত্রে কি তিনি খানিকটা হলেও বিচলিত হন না? সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে পলাতক কিছু দুর্বৃত্ত তাকে সারাদিন অবিরত কুৎসিত আক্রমণ করছে। এসবে কি তিনি এতটুকুও কষ্ট পান না? আমার সব চিন্তা এক নিমিষেই উবে যায় সপ্রতিভ, আত্মবিশ্বাসী শেখ হাসিনাকে দেখলেই। তিনি একদিকে যেমন নীলকণ্ঠ, সব বিষ হজম করতে পারেন অবলীলায়। সব সমালোচনাকে উপেক্ষা করতে পারেন সহজেই। তেমনি চারপাশের কোন উদ্বেগ, উৎকণ্ঠায় যেন তাকে স্পর্শ করে না। এসব নানা ভাবনায় আষ্টেপৃষ্টে না জড়িয়ে থাকার জন্যই তিনি সম্ভবত নিজেকে নিয়ে গেছেন অন্যন্য উচ্চতায়। সারাক্ষণ সুস্থ চিন্তা করেন বলেই হয়তো নোংরামির জীবানু তাকে আক্রান্ত করতে পারে না।

কান পাতলেই শুনি, ‘দেশের পরিস্থিতি ভালো না।’ ‘কখন যে কি ঘটবে কিছু বলা যায় না।’ চায়ের আড্ডা থেকে অফিস পাড়ায়, সর্বত্র এই আলোচনা ঘুরে ফিরে আসে। নির্বাচন হবে কি? বিএনপি নির্বাচনে না আসলে কি হবে? সেই নির্বাচন কি মেনে নেবে যুক্তরাষ্ট? বাংলাদেশের ওপর কত প্রকার কি কি স্যাংশন দেবে তা নিয়েও নানারকম গল্প গুজব। আজকাল কারো সাথে দেখা হলেই প্রশ্ন করেন, ভাই আর কাকে কাকে যুক্তরাষ্ট্র স্যাংশন দিলো। ‘মার্কিন ঝড় আসছে।’ এই শিরোনামে প্রতিবেদন লিখে স্বনামধন্য একজন খ্যাতিমান সম্পাদক রীতিমতো ঝড় তুলে ফেলেছেন। আমেরিকা কাকে কাকে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, সামনে কাকে কাকে দেবে-এসব তথ্য এখন মুড়িমুড়কির মতো যত্রতত্র পাওয়া যাচ্ছে। সেদিন পাঁচতারকা হোটেলে কফি পান করতে করতে এক বুদ্ধিজীবী আমাকে ‘সুইফট কোড’ কি, সে বিষয়ে শিক্ষা দান করছিলেন। বর্তমান সরকারের জামানায় ঐ বুদ্ধিজীবী একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ছিলেন। হালুয়া রুটির ভাগ না পেয়ে এখন যেন মার্কিন নিষেধাজ্ঞার জ্যোতিষীতে পরিণত হয়েছেন। তার ভবিষ্যত বাণী যদি সত্যি হয়, তাহলে আগামী দু/একদিনের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশে অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা দেয়া শুরু করবে। এক সময় তারা নাকি ‘সুইফট কোড’ বন্ধ করে দেবে। ব্যস, আন্তর্জাতিক লেনদেনে বন্ধ হবে। ক্রেডিট কার্ড, ডেভিড কার্ড সব হয়ে যাবে প্লাস্টিক। তার বক্তব্য শুনে আমি আঁতকে উঠলাম। কি হবে এই ভাবনায় নির্ঘুম রাত কাটালাম। পরদিন সকালে উঠে টেলিভিশনের পর্দায় দেখি, প্রধানমন্ত্রী টুঙ্গীপাড়ায়। পায়ে হেঁটে নিজ বাসভবন থেকে অফিসে যাচ্ছেন। রাতে তিনি ইলিশ পোলাও রান্না করে আত্মীয় স্বজন খাইয়েছেন। সকালে আধা কিলোমিটার পথ হেঁটে তিনি মত বিনিময় সভায় যোগ দেন। সেখান প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘সামনে নির্বাচন। আগামী নির্বাচন নিয়ে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। তবে, আমাদের উদ্বিগ্ন হবার কিছু নেই।’ আমি আশ্বস্ত হলাম। তাহলে চারপাশে যা হচ্ছে তার সবটাই প্রধানমন্ত্রী জনেন। তিনি সব জানেন, সব বোঝেন। এসব ষড়যন্ত্র মোকাবেলা করার কৌশলও নিশ্চয়ই তিনি জানেন। এজন্যই তিনি নির্ভার, চিন্তাহীন। আবার ভাবি নাকি তাকে ভ্রান্তির মধ্যে রাখা হয়েছে। পরিস্থিতির গভীরতা তাকে বুঝতে দেয়া হচ্ছে না। চারপাশে চাটুকাররা বলেই যাবে সব ঠিক আছে। যেমনটি হয়েছিল ১৯৭৫ সালে। জাতির পিতা বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র তাকে আচঁ করতেও দেয়া হয়নি।

১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের আগেও দেশে-বিদেশে এরকম নানা গুজব এবং গুঞ্জন ছিলো। জিনিসপত্রের দাম হয়ে গিয়েছিল আকাশচুম্বী। পাটের গুদামে আগুন, নানা সন্ত্রাসী তৎপরতা দেশ জুড়ে সৃষ্টি করেছিল আতঙ্ক। যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস হয়ে উঠেছিল ‘কাশিমবাজার কুঠির বাড়ী।’ ষড়যন্ত্রকারীরা বঙ্গবন্ধুর চারপাশেই ছিলেন। তারা জাতির পিতাকে বুঝতে দেননি, দেশে কি হচ্ছে। দেশী-বিদেশী অনেকে বঙ্গবন্ধুকে শঙ্কার কথা বলেছিলেন। তাকে হত্যার ষড়যন্ত্র হচ্ছে- এমন বার্তাও দেয়া হয়েছিল জাতির পিতাকে। কিন্তু এসব সতর্ক বার্তাকে আমলে নেননি বঙ্গবন্ধু। আর একারণেই ৭৫ এর নারকীয় ঘটনার পর আওয়ামী লীগ ছিলো অপ্রস্তুত। এই ঘটনা তাদের কাছে ছিলো অপ্রত্যাশিত।

এখনও ফিস ফাস নানা কথা শুনি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তো শেখ হাসিনাকে প্রতিদিন শতবার হত্যা করা হচ্ছে। ইউটিউব এবং ফেসবুকে দেশের প্রধানমন্ত্রী সম্পর্কে যে সব কুৎসিত, নোংরা শব্দ ব্যবহার করা হচ্ছে, তা অকল্পনীয় অমার্জনীয়। একদা জাসদের গণবাহিনী করা এক অতি বিপ্লবীকে দেয়া হয়েছে, ডিজিটাল বাংলাদেশ দেখ ভালের দায়িত্ব। ঐ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়ে এসব আবর্জনা বন্ধের জন্য তিনি কিছুই করেননি। তাকে জিজ্ঞেস করলেই দাঁত কেলিয়ে বলেন, এসব নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা আমাদের নেই।’ অথচ পৃথিবীর দেশে দেশে ফেসবুক, ইউটিউব নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। তাদেরকে তাদের দেশের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে মোটা অঙ্কের জরিমানা গুনতে হয়েছে ফেসবুক এবং ইউটিউব কর্তৃপক্ষকে। অথচ বাংলাদেশে এসব নিয়ে প্রশ্ন করলেই এক দীর্ঘ ফিরিস্তি দিতে শুরু করেন পরিত্যক্ত গণবাহিনীর সৈনিক। সদাশয় ফেসবুক তার অনুরোধে কতগুলো কনটেন্ট সরিয়েছে তার ফিরিস্তি দিয়ে নিজেকে ‘ষ্টিভ জবস’ মনে করা এক সময় তীব্র ‘মুজিব বিদ্বেষী’ তৃপ্তির ঢেকুর তোলেন।

কদিন আগে একজন শিক্ষকের সাথে আলাপ হচ্ছিল। তিনি আমাকে বলছিলেন, এই সরকারের সবচেয়ে ক্ষতি কে করছে বলতে পারেন? আমি তাকে সরকারের কয়েকজন মন্ত্রী, উপদেষ্টা এবং ব্যাংক লুটেরা ব্যবসায়ীর নাম বললাম। তিনি বললেন, না। যে সরকার যখন ক্ষমতায় আসে তখন সেই সরকারের কিছু দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্ত্রী থাকবেই। কিছু অর্বাচীন উপদেষ্টা সরকারের জন্য ভারী বোঝা হয়ে যায় সবসময়। প্রত্যেক সরকারের আমলেই কিছু লুটেরা ব্যবসায়ী জুটে যায়। এরা নানা রকম অনৈতিক সুযোগ সুবিধা নিয়ে সরকারের বদনাম করে। এসব পুজিবাদী রাষ্ট্রে অনিবার্য নিয়তি। সব দেশে সব সরকারই এই বাস্তবতার মুখোমুখি হয়। এটি বর্তমান সরকারের আসল সমস্যা নয়। তাহলে আসল সমস্যা কি? আমি তাকে জিজ্ঞেস করলাম। তিনি বললেন ‘সোশাল মিডিয়া’। সোশাল মিডিয়ায় সরকারের বিরুদ্ধে এমন ভাবে বিরামহীন প্রচারণা চলছে, যে এটাই এখন সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করতে শুরু করেছে। সরকারের ব্যাপারে জনগণের মধ্যে আস্থার সংকট তৈরি হচ্ছে। এটি সরকার সামাল দিতে পারছে না। তার মতে, ‘সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সরকারের বিরুদ্ধে ঘৃণার ভাইরাস ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। যা ভয়ংকর। এটা এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। আসলে ষড়যন্ত্র হচ্ছে ওখানে। মানুষ বিশ্বাস করছে ব্যাংকে টাকা নেই, আমেরিকা ক্ষেপে গেছে। দ্রব্যমূল্য নিয়ে সিন্ডিকেট তারও কারণ ‘সোশাল মিডিয়া।’

তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অবিরাম মিথ্যাচার ছাড়াও সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র দৃশ্যমান। নির্বাচন এবং গণতন্ত্র নিয়ে চক্রান্ত এখন আর কোন গোপন বিষয় নয়। এনিয়ে সরকার এবং আওয়ামী লীগের কোন সুনির্দিষ্ট রূপ পরিকল্পনা নেই। শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের কোন নেতাই জানে না, তাদের কৌশল কি? কিভাবে তারা আগামী নির্বাচন করতে চায়। আওয়ামী লীগের কিছু নেতা ‘বকাউল্লাহ’য় পরিণত হয়েছেন। বেসামাল বক্তব্য রাখা ছাড়া তাদের কোন কাজ নেই। যেহেতু তাদের গন্তব্য নির্দিষ্ট নয়, কৌশল অজানা এজন্য তাদের বক্তব্য গুলোও এলোমেলো। কখনো তারা ‘তলে তলে’ আপোষের কথা বলছেন। আবার কখানো কারো ‘মাথায় ইউরেনিয়াম ঢেলে’ দিতে চান। তবে এসব অসংলগ্ন কথার নেপথ্য কারণ হলো ভয় এবং আতঙ্ক। অন্ধকারে ভয় পেলে মানুষ যেমন নিজেই নিজের সঙ্গে কথা বলে। চিৎকার করে, গান ধরে, তেমনি আওয়ামী লীগের কিছু নেতা, আতঙ্কে চিৎকার চেঁচামেঁচি করছেন। তাদের এই আতঙ্ক বিরোধী আন্দোলনের জন্য নয়। মার্কিন ভিসানীতির কারণেও নয়। তাদের ভেতর ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছে সোশাল মিডিয়া। ফেসবুকে আর ইউটিউব। তারা প্রতি রাতে বিদেশে পলাতকদের অবিশ্রান্ত বমি গলদকরণ করেন। রাতে দুঃস্বপ্ন দেখেন। সকালে বেসামাল বক্তৃতা দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কারণেই তারা মনে করছে সরকার চাপে আছে। সরকার নড়বড়ে। কিছু একটা হলেই তাদের পালাতে হবে? পালাবে কোথায়?

মার্কিন ভিসানীতি নিয়ে চলছে হৈ চৈ। ভাবখানা এমন, বাংলাদেশের ৯০ ভাগ নাগরিক নিয়মিত যুক্তরাষ্ট্রে যান। সেখানে বাজার হাট করেন। বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের একমাত্র ঠিকানা যুক্তরাষ্ট্র। বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ভিসার জন্য যারা আবেদন করেন, তাদের প্রায় ৭০ ভাগই প্রত্যাখাত হন। আর যারা যুক্তরাষ্ট্রে বাড়ি-ঘর সম্পদ বানিয়েছেন, তাদের প্রায় সবাই গ্রীনকার্ড পেয়েছে অথবা মার্কিন নাগরিকত্ব গ্রহণ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের স্বার্থ রক্ষায় সব কিছু করে। কাজেই ভিসা নীতি বা স্যাংশন দিয়ে কি হবে, তা সময়ই বলে দেবে। কিন্তু এসব নিয়ে মাতম উঠেছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। একদিকে চলছে চরিত্র হননের খেলা। অন্যদিকে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে। আর এর প্রভাব পড়েছে পুলিশে, প্রশাসনে। ভিসানীতির কারণে নয়, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অপপ্রচারের জন্যই এই আতঙ্ক। এভাবে সর্বত্রই সরকারকে ভয় গ্রাস করছে। সচিবালয়ে কাজ হচ্ছে না। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী চুপসে গেছে। আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ‘ভাই সব ঠিক আছে তো’ এই প্রশ্ন বার বার করছে।

আগামী নির্বাচনকে বানচাল করতে উঠে পরে লেগেছে একটি গোষ্ঠী। প্রধানমন্ত্রী নিজেও ষড়যন্ত্রের কথা বলেছেন। তবে বরাবরই তিনি সাহসী, আত্মবিশ্বাসী। ষড়যন্ত্রে ভয় পাবার কিছু নেই বলে তিনি নেতাকর্মীদের আশ্বস্ত করেছেন। আমার প্রশ্ন হলো, শেখ হাসিনা যেভাবে ভাবছেন, দলের অন্য নেতারা কি ঠিক একই ভাবে ভাবছে। শেখ হাসিনা যেমন নির্ভীক। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় প্রস্তুত। দলের নেতা এবং কর্মীরা কি তেমন? না। না থাকার কারণ, আদর্শিক বিচ্যুতি। শেখ হাসিনার যে নীতি নৈতিকতার মান, আদর্শিক অবস্থান তার ধারে কাছেও নেই আওয়ামী লীগের নেতারা। শেখ হাসিনা দেশের কথা ভাবেন। নেতারা নিজের কথা ভাবেন। শেখ হাসিনা চান জনগণের ভাগ্য পরিবর্তন করতে। নেতারা ব্যস্ত নিজেদের ভাগ্যের চাকা ঘোরাতে। গত ১৫ বছরে আওয়ামী লীগের পাতি উপনেতারাও যেভাবে বিত্তশালী হয়ে উঠেছেন, তা অবিশ্বাস্য। এদের চেহারা চকচকে এবং নাদুস নুদুস হয়েছে। এরা এখন মিছিলই করতে পারেন না, আন্দোলন করবে কিভাবে? সাধারণ মানুষ চোখের সামনে আওয়ামী নেতাদের ফুলে ফেপে ওঠা দেখেছেন। অবৈধ সম্পদ গড়তে গিয়ে এরা জনবিচ্ছিন্ন হয়েছেন। জনগণ এদের পছন্দ করে না। এদের চোর লুটেরা মনে করে। সে কারণেই বিএনপির এক গর্জনে এরা ভয় পায়। যুক্তরাষ্ট্রের এক ঘোষণায় এরা আতঙ্কে উঠেন। শেখ হাসিনার তেমন কিছু নেই। গত ১৫ বছরে তার সম্পদের বাড়বাড়ন্ত নেই। পা টা তিনি মাটিতেই রেখেছেন। চরম শত্রুও বুকে হাত দিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনতে পারবে না। জনগণের সঙ্গে সম্পর্কটা তিনি মজবুত রেখেছেন। একারণেই তিনি নির্ভার। যারা আওয়ামী লীগে এখনও শেখ হাসিনার সত্যিকারের অনুসারী। তার আদর্শের পথে চলেন। সততার সাথে রাজনীতি করেন, তারাও ভয়হীন, উদ্বেগহীন। কিন্তু যাদের ভেজাল আছে, উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন, সুবিধাভোগী তারা ক্রমশ আতঙ্কিত হচ্ছেন। নির্বাচনের চার মাস আগে আওয়ামী লীগের এই দুই ধারা ক্রমশই দৃশ্যমান হচ্ছে। আর স্পষ্ট হচ্ছে শেখ হাসিনা ছাড়া আওয়ামী লীগের কেউ নেই, কিছু নেই। কথায় শেখ হাসিনার জন্য গলা ফাটিয়ে স্লোগান দেয়ার লোক আওয়ামী লীগে অসংখ্য। কিন্তু তার আদর্শ অনুসরণ করা ত্যাগী, সৎ কর্মীর সংখ্যা বিলীন প্রায়।

সৈয়দ বোরহান কবীর, নির্বাহী পরিচালক, পরিপ্রেক্ষিত

মতামত শীর্ষ সংবাদ