রাজপথে ফের মুখোমুখি আ.লীগ-বিএনপি

রাজপথে ফের মুখোমুখি আ.লীগ-বিএনপি

আজ জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে আওয়ামী লীগের সমাবেশ
নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ের সামনে বিএনপির সমাবেশ
কর্মসূচি পাল্টা কর্মসূচিতে উত্তপ্ত রাজপথ। গত ১০ ডিসেম্বর থেকেই রাজধানীতে পাল্টাপাল্টি কর্মসূচিতে রাজনৈতিক অঙ্গনে উত্তাপ ছড়াচ্ছে। দিন যত যাচ্ছে ততই বাড়ছে উত্তাপ-উত্তেজনা। নির্বাচনকালীন সরকার ইস্যুতে এই বিপরীতমুখী অবস্থান ক্রমেই কঠোর অবস্থানে যাচ্ছে। টানা ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগ দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার অধীনে ভোট আয়োজনে অনড়। অন্যদিকে টানা ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকা বিএনপি কোনোভাবেই শেখ হাসিনার অধীনে সুষ্ঠু ভোট হতে পারে বলে বিশ্বাস করছে না। ফলে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকার প্রতিষ্ঠার দাবিতে ধারাবাহিক কর্মসূচিতে রয়েছে তারা। আজও একই দাবিতে রাজধানীতে বড় ধরনের শোডাউন করবে বিএনপি ও তার রাজনৈতিক মিত্ররা। অন্যদিকে গত ১৬ অক্টোবর ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ঘোষণা দিয়ে রেখেছেন ১৮ অক্টোবর (আজ) তারা দলীয় কার্যালয় ও বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে অবস্থান করবে, নেতাকর্মীদের এদিন রাজপথ দখলে রাখার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। অর্থাৎ রাজপথে আজ মুখোমুখি হচ্ছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।

গত ১৬ অক্টোবর রাজধানীতে পৃথক দুটি যুব সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। একটির আয়োজক ক্ষমতাসীনরা অন্যটির আয়োজক বিরোধী দল বিএনপি। একইদিন দুটি সমাবেশ হলেও কোনো ধরনের অপ্রীতিকর কোনো ঘটনা ঘটেনি। আজকেও মুখোমুখি হচ্ছে ক্ষমতাসীন দল ও বিরোধীরা। বিএনপি পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী ১৮ অক্টোবর নয়াপল্টনে সমাবেশ করবে। এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে দলটির মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। গতকাল মঙ্গলবারই দেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা থেকে লোকজন এসে ঢাকায় অবস্থান নিয়েছেন। সঙ্গত কারণেই বিশ্লেষকরা ধারণা করছেন, বিএনপি আজ বড় ধরনের শোডাউন দেখাচ্ছে। এদিকে পিছিয়ে থাকতে চাচ্ছে না ক্ষমতাসীনরাও, তারাও বড় ধরনের শোডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দলটির পক্ষ থেকে আজ রাজপথ দখলে নেয়ার সিদ্ধান্ত হয়। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দলের নেতাকর্মীদের ওইদিন রাজধানীতে জড়ো হওয়ার নির্দেশনা দেন। ১৬ অক্টোবর রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে যুবলীগ আয়োজিত সমাবেশ থেকে তিনি এমন নির্দেশনা দেন।

তিনি বলেন, ‘১৮ তারিখ ঢাকার গুলিস্তানে বায়তুল মোকাররম মসজিদের দক্ষিণ গেটে আমরা সমবেত হব।’ আওয়ামী লীগ ৭ অক্টোবর থেকে ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত কর্মসূচির বিস্তারিত সূচি নির্ধারণ করেছে। ৭ অক্টোবর শিক্ষক সমাবেশের মধ্য দিয়ে এ কর্মসূচি শুরু হয়। ১৮ তারিখ ঢাকায় এক জনসভার মধ্য দিয়ে এই ধারাবাহিক আয়োজনের সমাপ্তি ঘটবে। জানা গেছে, ১৮ অক্টোবর বায়তুল মোকাররম জাতীয় মসজিদের দক্ষিণ গেটে যৌথভাবে এ শান্তি সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী লীগ। এরপর ২০ অক্টোবর তেজগাঁওয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে প্রতিনিধি সভা অনুষ্ঠিত হবে। পরে ২৫ অক্টোবর বাড্ডা ইউলুপের সামনে শান্তি ও উন্নয়ন সমাবেশ করবে ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগ।

আজ ১৮ অক্টোবর ঢাকায় যে বড় সমাবেশ হচ্ছে তাতে দেশের সব জেলা থেকে লোকজনকে ঢাকায় আনার পরিকল্পনা ছিল না বিএনপির। তবে উচ্ছ্বাস থেকে অনেকেই ঢাকায় প্রবেশ করেছেন, আজ সকালে অনেকে প্রবেশ করবেন। বিএনপির টার্গেট হচ্ছে শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হলে ২৪ অক্টোবরের পর ঢাকায় আরেকটি বড় সমাবেশের আয়োজন করা। ওই সমাবেশের পর থেকে আর পেছনে ফেরার সময় নেবে না বিএনপি। আজ দুই দলের এই সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশও ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে। সমাবেশের দিন পুলিশ বরাবরের মতো ঢাকার প্রবেশ পথগুলোতে তল্লাশি চালাবে। ঢাকার ভিতরেও থাকবে তল্লাশি চৌকি। জানা গেছে, নয়াপল্টনে সমাবেশ করতে এবার পুলিশ বাধা দেবে না। বিএনপি নেতারা বলছেন, পূজার পর চূড়ান্ত আন্দোলন শুরু করা হবে।

মুখোমুখি সমাবেশ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর অন্যতম সদস্য অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম বলেন, শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধী দল সমাবেশ করতে চাইলে কোনো সমস্যা নেই, কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করতে চাইলে জনগণ ছাড় দেবে না। অন্যদিকে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সাবেক বিরোধী দলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবেদিন ফারুক বলেন, বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও নির্বাদলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠা না হওয়া পর্যন্ত গণতান্ত্রিক উপায়ে আন্দোলন চলবে। কোনো বাধাই জনগণের আন্দোলন ঠেকাতে পারবে না।

রাজনীতি শীর্ষ সংবাদ