মাগুরা প্রতিনিধি
মাগুরায় সেনাবাহিনীর ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে ভুক্তভোগীর শ্রীপুর থানায় করেছেন অভিযোগ। অভিযোগের পরে সেই প্রতারককে শ্রীপুর নিজ বাড়ি থেকে গতকাল রাতে (২০ অক্টোবর) আটক করেছে শ্রীপুর থানা পুলিশ।
এর আগে উপজেলার সরদার কালিনগর গ্রামের সাইফুল ইসলাম ও তার ভাইদের বিরুদ্ধে সেনাবাহিনীর ভূয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগে শ্রীপুর থানায় অভিযোগ দেন ভুক্তভোগীরা।
এ ঘটনায় শ্রীপুর থানার ওসি ইনচার্জ কাঞ্চন কুমার রায় বলেন, ভুক্তভোগীদের অভিযোগের জেরে আইন গত ভাবে ব্যাবস্থা নেয়া হয়েছে। মধুখালির জান নগরের বিকাশ সরকারের ছেলে বিজন সরকারের অভিযোগের ভিত্তিতে মোঃ সাইফুল ইসলাম আছাদ(৩৫) পিতা মৃত আরব আলী, শিমুল শেখ (২৮) পিতা মৃত্যু আরব আলী, রুবেল হোসেন (২৯) পিতা লুৎফর রহমান, তাজন হোসেন (৩৩)পিতা বদিয়ার রহমানসহ অজ্ঞাত দুই থেকে তিনজনকে আসামি করা হয়। পেনাল কোড ১৮৬০ এর ১৭০/১৭১/৪০৬/৪২০ সরকারি কর্মকর্তার পরিচয় ও পোশাক ব্যবহার করে,অপরাধ মূলক বিশ্বাসভঙ্গ প্রতারণা ও টাকা আত্মসাতের অপরাধে অভিযুক্ত মোঃ সাইফুল ইসলাম আছাদকে আটক করা হয়েছে,আর বাকি আসামি পালাতক রয়েছে, তাদেরকে আটকের আইনি প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে।
মাগুরায় সেনাবাহিনীর ভুয়া নিয়োগপত্র দিয়ে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ
অভিযোগ পত্র ও ভুয়া নিয়োগ পত্র থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বেসামরিক পদে নিয়োগ পত্র দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল পরিমাণ অর্থ। ভুক্তভোগীকে প্রদান করা ১০-০৯-২৩ এই নিয়োগ পত্রে দেখা যায় “প্রদানকারী সংজ্ঞায় নাম ব্যবহার করা হয়েছে সেনা সদর এডি সেকশন পি এ পরিদপ্তর এর নাম”।
আরো দেখা যায়, নিয়োগের স্থান দেখানো হয়েছে যশোর ক্যান্টনমেন্ট,প্রার্থীর নাম ব্যবহার করা হয়েছে অপূর্ব বিশ্বাস,পিতা অখিল বিশ্বাস সাং সমাধি নগর মধুখালি ফরিদপুর। ভূয়া এই নিয়োগপত্রে অপূর্ব বিশ্বাসকে অফিস অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। এবং আগামী ২৫-১০-২৩ সকাল ৯ ঘটিকায় মৌলিক বেসামরিক প্রশিক্ষণের জন্য উপস্থিত থাকার ও নির্দেশ দিয়েছেন লেঃ কর্নেল প্রসর্ন ১( প্লাটুন এন্ড এডমিন) শাখা পূর্ত পরিদর্শক ও প্রমান্য প্রকৌশলী সেক্টর। সীলমোহর করেছেন বিএ,৪৮৩২,কর্নেল মোঃ রফিকুল হাসান প্রধান প্রশিক্ষক।
ভুক্তভোগী অপূর্ব বিশ্বাস বলেন, একটা সরকারি চাকরির আশায় বাড়ি,মাটের জমি ,ও ফসল বিক্রি করে ৯লাখ টাকা দিয়েছি সাইফুল ও তার ভাইদের হাতে, তারা টাকা নিয়ে আমাদের কে একটা ভূয়া নিয়োগ প্রএ ধরিয়ে দেয়। ২১ই অক্টোবর শনিবার বিকালে আরেক ভুক্তভোগী বিজন কুমার বিশ্বাস জানান, সাইফুল নিজেকে সেনা কর্মকর্তা ও তার ভাই শিমুল নিজেকে আনসার বাহিনীর পরিচালক সেজে ৩/৪ জনের সিন্ডিকেটের মূল হোতা হয়ে কর্নেল সাহেবকে টাকা দিতে হবে,মর্মে চাপ প্রয়োগ করে কয়েক ধাপে টাকা হাতিয়ে নিয়ে ভূয়া নিয়োগ ধরিয়ে দিয়েছে।উচ্চপদস্থ সেনা কর্মকর্তাদের সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে প্রার্থীদের আশ্বস্ত করে আমাদের মত অসহায় লোকদের থেকে টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন।
গণমাধ্যমে ভুক্তভোগীর অভিযোগ মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম (আসাদ) পিতা মৃত আরব আলী শেখ ও মোহাম্মদ রুবেল ভুয়া পুলিশ কর্মকর্তা সেজে পুলিশ ভেরিফিকেশন করেছিলেন। এবং শাহরিয়ার নাফিস তাজন পিতা বুদিয়ার শেখ ভুয়া মেডিকেল অফিসার সেজে যশোরে মেডিকেল করেছিলেন।
স্থানীয় বাসিন্দাদের থেকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,অভিযুক্তদের কেউ সেনাবাহিনী,পুলিশ বা আনসার বাহিনীতে চাকরি করেন না। নিয়োগ বাণিজ্য সহ প্রতারণায় তাদের প্রধান ব্যবসা। আর এই প্রতারণা করে বাস ভবন সহ বাড়ির পিছনে এবং মাগুরা পারনান্দয়ালী এলাকায় ক্রয় করেছেন জমি। একাধিক প্রতারণা মামলা থাকা সত্ত্বেও ছোট ভাই রুবেলকে বিদেশে পাঠানোর জন্য পাসপোর্ট তৈরির জন্য পাসপোর্ট অফিসে ঘুরপাক করছেন প্রতিদিন।