নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপির সমাবেশের দিনে রাজধানীর কাকরাইলে ভেস্ট পরে বাসে আগুন দেওয়া যুবক যুবদল নেতা বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। সোমবার (৩০ অক্টোবর) রাজধানীতে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন তিনি। হারুন বলেন, শনিবার (২৮ অক্টোবর) ওই অঞ্চলের সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করা হয়েছে। ২০১৩-১৪ সালে সহিংসতার সঙ্গেও জড়িত ছিল সে।
কাকরাইলে প্রেস লেখা ভেস্ট পরে গাড়িতে আগুন দেওয়া যুবকের নাম রবিউল ইসলাম নয়ন, তিনি যুবদলের ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব। ২০১৩-১৪ সালেও বাসে আগুন দেয়ার একাধিক ঘটনায় নয়নকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। ২০১৬ সালে গুলি করে ঢাকা মেডিকেলে নিহত ভেবে ফেলে রাখা তৎকালীন ছাত্রদল নেতা রবিউলকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবদলের সদস্য সচিব মনোনীত করা হয়। তখন এ নিয়ে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হয়েছিল। নয়ন মাগুরা থেকে স্কুল জীবন শেষ করে ঢাকায় এসে ছাত্রদলের রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। পর্যায়ক্রমে তার সাহসী নেতৃত্বের কারণে দলের হাইকমান্ড তাকে সদস্য সচিব পদে মনোনীত করে। গত ২৮ অক্টোবরের ফুটেজ দেখে তাকে শনাক্ত করার পর গোয়েন্দারা তার খোঁজে নেমেছে বলে জানান হারুন অর রশীদ।
এদিকে পুড়িয়ে দেওয়া বাসটির চালক বলেন, আমি যে বাসটি চালাচ্ছিলাম তাতে পুলিশ কর্মকর্তারা ছিলেন। তারা নেমে যাওয়ার পর আমি গাড়িটি পার্ক করি। তারা আমার বাস থেকে নেমে যাওয়ার পর কালো পোশাক (ভেস্ট) পরা একজন ব্যক্তি বাসে ওঠে। তারপর পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেয়।
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টন ও আশপাশের এলাকা পরিণত হয় রণক্ষেত্রে। অর্ধশতাধিক যানবাহনে আগুন দেওয়াসহ অন্তত আটটি পুলিশ বক্সে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। এরইমধ্যে একটি বাসে আগুন দেওয়ার পর ওই বাসের চালক জানান, ভেস্ট পরা এক যুবক তার বাসে আগুন দিয়েছে। এরপরেই প্রশ্ন ওঠে আগুন দেওয়া ব্যক্তি গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য কিনা। ওই চালক আরও জানান, তার গাড়ি দিয়েই পুলিশ সদস্যদের বহন করে নিয়ে আসা হয়েছিল।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ প্রধান হারুন বলেন, পুলিশ বিষয়টি গুরুত্বসহকারে অনুসন্ধান শুরু করে। গাড়িতে আগুন দেওয়াসহ পুলিশের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সংঘর্ষের ফুটেজ বিশ্লেষণের পর আমরা নিশ্চিত হয়েছি, বাসে আগুন দেওয়া যুবক যুবদলের ঢাকা দক্ষিণের সদস্য সচিব। তাকে খোঁজা হচ্ছে।
গত ২৮ অক্টোবর রাজধানীর নয়াপল্টন ও জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের দক্ষিণ গেটে বিএনপি ও ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের পূর্বঘোষিত সমাবেশ ছিল। বিএনপির মহাসমাবেশ শুরুর আগেই কাকরাইলে বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ শুরু হয়। সংঘর্ষের একপর্যায়ে টিয়ারশেল ও সাউন্ড গ্রেনেড ব্যবহার করে বিএনপি নেতাকর্মীদের পল্টন এলাকা থেকে হটিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় বিএনপির নেতাকর্মীদের নিন্ম হামলায় পুলিশের এক সদস্য নিহত হন। এ ছাড়া বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি ভাঙচুর ও আগুন দেয় তারা।