নিজস্ব প্রতিবেদক
অবরোধের তৃতীয় ও শেষ দিন আজ বৃহস্পতিবার রাজধানী ঢাকার অভ্যন্তরে গণপরিবহনের চলাচল আগের দুই দিনের তুলনায় কিছুটা বেড়েছে। তবে গত দুই দিনের মতো আজও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো গন্তব্যের উদ্দেশে বাস ছাড়ছে না।
সড়কে অফিসগামী মানুষের উপস্থিতি বেড়েছে। ব্যক্তিগত যানবাহনের (প্রাইভেট কার) সংখ্যাও গত দুই দিনের চেয়ে তুলনামূলক বেশি দেখা গেছে। কর্মস্থলে যেতে কাউকে কাউকে বাসের জন্য অপেক্ষা করতে দেখা যায়।
আজ সকাল সোয়া ৯টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত রাজধানীর মোহাম্মদপুর, শ্যামলী, কল্যাণপুর, টেকনিক্যাল মোড় ও গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায়।
আরও পড়ুন
তিন পুলিশকে কুপিয়ে জখমের ঘটনায় ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার ১০
মতিঝিলে যাওয়ার জন্য কল্যাণপুরে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবী রাবেয়া আক্তার। সকাল সাড়ে আটটার দিকে কথা হয় তাঁর সঙ্গে। অবরোধের মধ্যে গত দুই দিনও তিনি কর্মস্থলে গেছেন বলে জানান।
বাসের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা। কল্যাণপুর, ঢাকা, সোয়া ৯টা, ২ নভেম্বর
বাসের জন্য যাত্রীদের অপেক্ষা। কল্যাণপুর, ঢাকা, সোয়া ৯টা, ২ নভেম্বরছবি: ড্রিঞ্জা চাম্বুগং
আজকের পরিস্থিতি সম্পর্কে রাবেয়া আক্তার বলেন, ‘গত দুই দিনের চেয়ে আজ বাসের সংখ্যা আরেকটু বেশি। কিছু বাসে যাত্রী ভরা দেখতে পেলাম। কল্যাণপুরে মাঝেমধ্যে জটলাও সৃষ্টি হচ্ছে।’
তবে গত দুই দিনের মতো আজও গাবতলী বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো গন্তব্যের উদ্দেশে বাস ছাড়ছে না। টার্মিনালে দূরপাল্লার যাত্রীদের উপস্থিতিও তেমন একটা নেই। গতকাল বুধবারের মতো আজও গাবতলী টার্মিনালের বেশির ভাগ বাস কোম্পানির টিকিট বিক্রির কাউন্টার বন্ধ দেখা গেল।
গাবতলী টার্মিনালে বিভিন্ন বড় বড় বাস কোম্পানির টিকিট বিক্রির একাধিক কাউন্টার রয়েছে। তবে এসব কাউন্টারের সব কটি খোলা না রেখে একটি-দুটি করে খোলা রাখা হয়েছে। টার্মিনালে কয়েকজন যে যাত্রী আসছেন, তাঁরা ওই সব কাউন্টারে গিয়ে বাস ছাড়ার বিষয় নিয়ে খোঁজখবর নিচ্ছেন।
কোনো কোনো কাউন্টার থেকে যাত্রীদের বলে দেওয়া হচ্ছে, বিকেল চারটার পর গাড়ি ছাড়া হবে। আবার কেউ কেউ বলছেন, দুপুরের পর পরিস্থিতি বুঝে গাড়ি ছাড়ার সিদ্ধান্ত নেবেন।
যশোরের মনিহারে যেতে ছোট বোনের শাশুড়িকে সঙ্গে নিয়ে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসেছেন ব্যবসায়ী বিল্লাল হোসেন। আজ সকাল পৌনে ৯টার দিকে তাঁদের সঙ্গে কথা হয়।
বিল্লাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, হানিফ পরিবহন থেকে জানানো হয়েছে, তারা বিকেল চারটার পর গাড়ি ছাড়বে। অন্যদের কেউ কেউ বেলা দুইটার দিকে গাড়ি ছাড়বে বলে জানিয়েছেন। কিন্তু কেউ অগ্রিম টিকিট বিক্রি করেননি। আরও কিছুক্ষণ পরিস্থিতি দেখে গাড়ি না পেলে ঢাকার লালবাগের বাসায় আবার ফিরে যাবেন বলে জানান তিনি।
গত মঙ্গলবার থেকে টানা তিন দিনের সড়ক, রেল, নৌপথসহ সর্বাত্মক অবরোধ কর্মসূচি পালন করছে বিএনপি। একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে দলটির জোটসঙ্গী ও সমমনা দলগুলো। এ ছাড়া জামায়াতে ইসলামীও আলাদাভাবে একই কর্মসূচি ঘোষণা করেছে।
২৮ অক্টোবর ঢাকায় বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে হামলা-সংঘর্ষের পর দলটি গত রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতালের ডাক দেয়। এরপর এক দিন বিরতি দিয়ে তিনি দিনের অবরোধের ডাক দেয় দলটি।