অনুমোদিত পাঁচ কোম্পানির বোতলজাত ও জারের পানি মানহীন ও পানের উপযোগী নয় বলে আদালতে প্রতিবেদন দিয়েছে বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইন্সটিটিউশন (বিএসটিআই)। এগুলো হলো- ফ্রুটস অ্যান্ড ফ্লেভার লিমিটেডের ‘ইয়ামি ইয়ামি’, সিনহা বাংলাদেশ ট্রেডস লিমিটেডের ‘একুয়া মিনারেল’, ক্রিস্টাল ফুড অ্যান্ড বেভারেজের ‘সিএফবি’, ওরোটেক ট্রেড অ্যান্ড টেকনোলজির ‘ওসমা’ এবং শ্রী কুণ্ডেশ্বরী ঔষধালয় লিমিটেডের ‘সিনমিন’।
হাইকোর্টের নির্দেশে ১৫টি কোম্পানির জার ও বোতলজাত পানি পরীক্ষা করে এ প্রতিবেদন দিয়েছে বিএসটিআই। সোমবার বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চে প্রতিবেদনটি উপস্থাপন করা হয়। ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মো. মোখলেসুর রহমান এটি উপস্থাপন করেন।
আইনজীবী শাম্মী আক্তারের করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত পানি পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতে শাম্মী আক্তারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মো. জে আর খান রবিন।
তিনি বলেন, বাজারে থাকা বোতলজাত ও জারের পানি পরীক্ষার করে প্রতিবেদন দিতে বলেছিলেন আদালত। বিএসটিআই ১৫টি বোতলজাত ও জারের পানি পরীক্ষা করে দেওয়া প্রতিবেদনে জানিয়েছে, পাঁচটি ব্র্যান্ডের পানি মানহীন বা পানের অনুপযোগী।
গত ৪ জানুয়ারি থেকে ১৭ জানুয়ারি বিএসটিআই বাজার থেকে ২২টি নমুনা সংগ্রহ করে। তার মধ্যে ১৫টি নমুনা পরীক্ষা করে তারা প্রতিবেদন দিয়েছে। এদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তা আগামী ২৪ ফেব্রুয়ারি মধ্যে জানাতে বলেছেন আদালত। বাকি ৭টি নমুনার প্রতিবেদনও দিতে বলা হয়েছে। এছাড়া প্রতি দুই সপ্তাহে একবার বাজার থেকে পানির নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা অব্যাহত রাখতে বিএসটিআইকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের ২২ মে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় ‘প্রতারণার নাম বোতলজাত পানি’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই প্রতিবেদনটি যুক্ত করে ২৭ মে হাইকোর্টে জনস্বার্থে রিট আবেদন করেন আইনজীবী শাম্মী আক্তার।
এরপর ৩ ডিসেম্বর আদালত প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বাজারে থাকা অবৈধ-অনিরাপদ জার ও বোতলজাত পানির সরবরাহ বন্ধের নির্দেশ দেন। বিএসটিআই ও আইন শৃঙ্খলাবাহিনীকে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়।
ওই আদেশের পর বিএসটিআই কী কী পদক্ষেপ নিয়েছে, সে বিষয়ে ১৫ দিনের মধ্যে অ্যাটর্নি জেনারেলের মাধ্যমে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়। এছাড়া প্লাস্টিক বোতল ও জারে বিশুদ্ধ পানি সরবরাহে সরকারের ব্যর্থতা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না- তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন আদালত।
খাদ্য সচিব, স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদফতরের মহাপরিচালক, ওয়াসার ব্যবস্থাপনা পরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট সাত জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
এরপর গত ১৪ জানুয়ারি আদালত বিএসটিআইকে পানি পরীক্ষা করে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলে। সে অনুযায়ী সোমবার আদালতে বিএসটিআইয়ের প্রতিবেদন উপস্থাপন করা হয়।