মিয়া আরেফি ও হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ আমলে নেওয়ার অনুমোদন

মিয়া আরেফি ও হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধ আমলে নেওয়ার অনুমোদন

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সেই কথিত উপদেষ্টা জাহিদুল ইসলাম ওরফে মিয়া আরেফি ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধে জড়িত থাকার তথ্য পেয়েছে সরকার। ঢাকার জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গত বৃহস্পতিবার তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অপরাধ আমলে নেওয়ার বিষয়ে অনুমোদন দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে।

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের আইন-২ শাখার জ্যেষ্ঠ সহকারী সচিব জোসেফা ইয়াসমিন রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে ওই প্রজ্ঞাপনে স্বাক্ষর করেন। এতে বলা হয়, ১ নভেম্বর ঢাকা জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের (মিয়া আরেফি ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দী) বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৮৬০–এর অধ্যায় ৬–এর অন্তর্ভুক্ত ১২৪(ক) ধারার অপরাধ আমলে নেওয়ার লক্ষ্যে ফৌজদারি কার্যবিধি, ১৯৯৮ সালের ৯৬ ধারার বিধান মোতাবেক সরকারের অনুমোদন দেওয়া হলো।

দণ্ডবিধির ১২৪(ক) ধারায় বলা হয়েছে, ‘যদি কোনো ব্যক্তি উচ্চারিত বা লিখিত কথা বা উক্তি দ্বারা, কিংবা চিহ্নাদি দ্বারা, কিংবা দৃশ্যমান প্রতীকের সাহায্যে কিংবা অন্য কোনোভাবে বাংলাদেশে আইনানুসারে প্রতিষ্ঠিত সরকারের প্রতি ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা করার চেষ্টা করে কিংবা বৈরিতা উদ্রেক করে বা করার চেষ্টা করে তাহা হইলে সেই ব্যক্তি যাবজ্জীবন বা অন্য কোনো হ্রস্বতর মেয়াদের জন্য দীপান্তর দণ্ডে দণ্ডিত হইবে এবং তৎসহ তাকে জরিমানায়ও দণ্ডিত করা যাইবে।’

এ বিষয়ে জানতে আজ শনিবার রাতে যোগাযোগ করা হলে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান  বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে তাঁদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহী অপরাধে জড়িত থাকার বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। যেহেতু তিনি (মিয়া আরেফি) বিদেশে থাকেন। এ নিয়ে কোনো আইনি জটিলতা আছে কি না, তা আইন মন্ত্রণালয় দেখবে।

গত ২৮ অক্টোবর সংঘর্ষের কারণে বিএনপির মহাসমাবেশ পণ্ড হওয়ার পরপর জাহিদুল ইসলাম ওরফে মিয়া আরেফি নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে গিয়ে নিজেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের উপদেষ্টা পরিচয় দিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় সেখানে লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী ও বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেন উপস্থিত ছিলেন। পরদিন ঢাকায় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মিয়া আরেফিকে আটক করে পুলিশ। ওই দিনই ‘মিথ্যা পরিচয়ে অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গের’ অভিযোগে মিয়া আরেফি, চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী ও বিএনপির নেতা ইশরাক হোসেনের বিরুদ্ধে পল্টন থানায় মামলা করেন মহিউদ্দিন শিকদার নামের এক ব্যক্তি। ওই মামলায় ডিবির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মিয়া আরেফিকে পাঁচ দিন রিমান্ডে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন আদালত। তিনি বর্তমানে কারাগারে।

এদিকে গত মঙ্গলবার অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দীকে সাভার থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন ডিবি পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আদালত তাঁকে আট দিন রিমান্ডে নিয়ে জিজজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন। তিনি কারাগারে আছেন।
এই মামলার তদন্তসংশ্লিষ্ট ডিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অনুমোদন পাওয়ায় মিয়া আরেফি ও অবসরপ্রাপ্ত লেফটেন্যান্ট জেনারেল হাসান সারওয়ার্দীর বিরুদ্ধে পল্টন থানায় হওয়া মামলার সঙ্গে এখন রাষ্ট্রদ্রোহ অপরাধের ধারা যুক্ত হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ