যুক্তরাষ্ট্রসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশের যুদ্ধবিরতির আহ্বান কেবল প্রত্যাখ্যানই নয়, বরং হামলার মাত্রা আরও বাড়িয়েছে ইসরায়েল।
সম্প্রতি গাজার স্কুল, হাসপাতালের কাছাকাছি এলাকা এমনকি অ্যাম্বুলেন্সে পর্যন্ত হামলা চালানো হয়।
সিএনএনের শুক্রবারের প্রতিবেদনে জানানো হয়, গাজা শহরের আল-শিফা হাসপাতালের বাইরে একটি অ্যাম্বুলেন্সে হামলার দায় স্বীকার করেছে ইসরায়েল। এ ঘটনায় অন্তত ১৫ জন নিহত হয়েছে ও ৫০ জন আহত হয়েছে।
১৫ থেকে ২০ জন গুরুতর আহত ব্যক্তিকে নিয়ে রাফা ক্রসিংয়ের দিকে যাওয়ার সময় আল-শিফা হাসপাতালের গেটে এ হামলার ঘটনা ঘটে।
ইসরায়েলের দাবি, হামাস সদস্যরা অ্যাম্বুলেন্সটি ব্যবহার করছিল। তাই তাদের লক্ষ্য করে এ হামলা চালানো হয়।
এ ছাড়া গাজার উত্তরাঞ্চলীয় একটি বিদ্যালয়ে ইসরায়েলের হামলায় ২০ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন। বিদ্যালয়টিকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল।
শনিবার ভোরে গাজায় ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস–নিয়ন্ত্রিত স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় এসব তথ্য জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে বলা হয়, ‘গাজার উত্তরাঞ্চলে আল সাফতাউয়ি এলাকায় বাস্তুচ্যুতদের জন্য অস্থায়ী আশ্রয়শিবির হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছিল- এমন একটি বিদ্যালয়কে সরাসরি হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে। এরপর হামলায় শহীদ হওয়া ২০ জন এবং আহত হওয়া কয়েকজনকে গাজা সিটির আল শিফা হাসপাতালে আনা হয়েছে।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, ‘বিদ্যালয়টিকে লক্ষ্য করে ট্যাংক থেকে সরাসরি কয়েকটি গোলা ছোড়া হয়েছে।’
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় এ পর্যন্ত ৯ হাজার ২২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
ইসরায়েল জানিয়েছে, হামাসের ১ হাজার ৪০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন। এ ছাড়া দুই শতাধিক ব্যক্তিকে ইসরায়েল থেকে ধরে গাজায় নিয়ে জিম্মি করে রেখেছে হামাস।
সংঘাত নিরসনে আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্র ও আরব নেতারা
এদিকে ফিলিস্তিন ও ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে আলোচনা করতে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ কূটনীতিক ও আরব নেতারা গতকাল শনিবার বৈঠক করেছেন। গাজায় ইসরায়েলের অব্যাহত হামলার মধ্যে জর্ডানে বৈঠকে বসেন তারা।
বৈঠকে যোগ দিতে যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন ইতোমধ্যে জর্ডানে পৌঁছেছেন। ইসরায়েল সফর শেষে শনিবার স্থানীয় সময় বেলা ১১টার দিকে জর্ডানের একটি বিমানবন্দরে পৌঁছেন তিনি। গত তিন সপ্তাহের মধ্যে এটি ব্লিঙ্কেনের তৃতীয় মধ্যপ্রাচ্য সফর। শুক্রবার ইসরায়েল সফরের মধ্য দিয়ে তিনি এ সফর শুরু করেন।
হামাস-ইসরায়েল সংঘাত নিয়ে এই সফরে অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন বেশ কয়েকজন আরব নেতা ও মন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। জর্ডানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহ ও কাতারের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার বৈঠকের কথা রয়েছে। এরই মধ্যে তিনি লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।
ব্লিঙ্কেন জর্ডান, লেবানন, কাতার, সৌদি আরব, মিসর ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গেও আলোচনা করবেন।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ফিলিস্তিনি শরণার্থীদের জন্য জাতিসংঘের সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএর (ইউএন রিলিফ অ্যান্ড ওয়ার্কস এজেন্সি ফর প্যালেস্টাইন রিফিউজিস ইন দ্য নিয়ার ইস্ট) কমিশনার জেনারেল ফিলিপ লাজারিনীর সঙ্গে বৈঠক করবেন। গাজায় নিয়োজিত কর্মীদের সঙ্গেও ভিডিও ফোনে কথা বলবেন।
এর আগে অক্টোবর মাসে ব্লিঙ্কেন ইসরায়েল, জর্ডান, কাতার, বাহরাইন, সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত ও মিসর সফর করেন।