সিরাজগঞ্জে চাঞ্চল্যকর গৃহবধু হত্যা মামলা স্বামীসহ ৪ সহোদরের ফাঁসি

যৌতুকের দাবীতে ১৮ বছর আগে ঘটে যাওয়া সিরাজগঞ্জ শহরের আলোচিত এক গৃহবধু হত্যা মামলার রায়ে স্বামীসহ ৪ সহোদর ভাইয়ের বিরুদ্ধে ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। আজ দুপুরে আসামীদের অনুপস্থিতিতে সিরাজগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক ফজলে খোদা মো. নাজির এ রায় প্রদান করেন। ফাঁসির রায়ের পাশাপাশি এক লাখ টাকা জরিমানাও করা হয়েছে।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলেন, শহরের মুজিব সড়কে অবস্থিত শীলা জুয়েলার্সের মালিক মৃত সতীশ চন্দ্র রায়ের ছেলে ও নিহতের স্বামী শ্রী সুবীর কুমার রায়, তার ভাই ডা. সুশীল কুমার রায়, সুনীল কুমার রায় ও মনোরঞ্জন কুমার রায়।

আদালতের বিশেষ পিপি শেখ আবদুল হামিদ লাভলু জানান, ১৯৯৯ সালে সিরাজগঞ্জ শহরের মুজিব সড়কস্থ শীলা জুয়েলার্সের মালিক মৃত সতীশ চন্দ্র রায়ের ৪র্থ ছেলে সুবীর কুমার রায়ের সঙ্গে টাঙ্গাইল শহরের সাহাপাড়ার গোপীনাথ বিশ্বাসের মেয়ে সুমী রাণীর বিয়ে হয়। বিয়ের সময় ৫ লাখ টাকা যৌতুকের মধ্যে আড়াই লাখ টাকা পরিশোধ করা হয়। বাকি টাকার জন্য শ্রী সুবীর রায় ও তার পরিবারের সদস্যরা সুমী রাণীকে নির্যাতন করতে থাকে। পরবর্তীতে সুমীর পরিবার ৫০ হাজার টাকা পরিশোধ করেন।

অবশিষ্ট টাকার জন্য সুমীর ওপর নির্যাতনের মাত্রা আরও বাড়তে থাকে। এ অবস্থায় ২০০১ সালের ১২ই জানুয়ারী সন্ধ্যায় সুবীর কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যরা সুমী রাণীকে গলা টিপে ও মারপিট করে হত্যা করেন। অতপর: সুমী রাণী গলায় ফাঁস দিয়ে আত্বহত্যা করেছে মর্মে সুবীর কুমার রায়ের ছোট ভাই মনোরঞ্জন রায় থানায় সাধারন ডায়রি করেন।

ময়নাতদন্তে সুমী রাণীকে হত্যা করা হয়েছে মর্মে প্রতিবেদন পাওয়ায় সদর থানার এসআই মনিরুল ইসলাম বাদী হয়ে ২০০১ সালের ১৫ই জানুয়ারী হত্যা মামলা দায়ের করেন। এরপর নিহতের বাবা গোপীনাথ বিশ্বাসও সুবীর কুমার রায় ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর সুবীর কুমার রায় ও তার ৩ ভাই বসতবাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। তারপর থেকে তারা আর নিজ বাড়িতে ফিরে আসেনি। আসামীদের পক্ষে আদালতে রাষ্ট্র নিযুক্ত স্টেট ডিফেন্স হিসাবে এড. এসএম জাহাঙ্গীর আলম মামলা পরিচালনা করেন।

শীর্ষ সংবাদ সারাদেশ