নিজস্ব প্রতিবেদক, ঢাকা ও গাজীপুর
পোশাকশিল্পে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, হামলা ও পুলিশের কাজে বাধা দেওয়ার অভিযোগে ৩৭টি মামলা হয়েছে। ঢাকা, গাজীপুর ও সাভারের আশুলিয়ায় পোশাকশিল্প এলাকার থানাগুলোতে এসব মামলা করা হয়।
এর মধ্যে গাজীপুরে সবচেয়ে বেশি ২২টি মামলা হয়েছে। আশুলিয়া থানায় হয়েছে ৯টি মামলা।
রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী, মিরপুর ও কাফরুল থানায় ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১৪ হাজারের বেশি পোশাককর্মীকে আসামি করা হয়েছে। গাজীপুরে ২২টি মামলায় ১২ হাজার শ্রমিক আসামি।
সংশ্লিষ্ট থানার পুলিশ সূত্র বলেছে, পোশাক কারখানায় ভাঙচুর, গাড়িতে অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুর এবং পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগে এসব মামলা হয়।
ক্ষতিগ্রস্ত কারখানার মালিকপক্ষ, পুলিশ ও ভাঙচুরের শিকার গাড়ির কর্তৃপক্ষ এসব মামলার বাদী।
গাজীপুরে ২২ মামলায় ১২ হাজার আসামি
পোশাক শ্রমিক আন্দোলনে এ পর্যন্ত ১২৩টি কারখানা কম-বেশি ভাঙচুর করা হয়েছে। গত ২৩ অক্টোবর থেকে গত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত ১৮ দিনে এসব কারখানায় হামলা চলে। এসব ঘটনায় করা ২২টি মামলায় ১২ হাজারের বেশি শ্রমিককে আসামি করা হয়েছে।
গতকাল সকাল পর্যন্ত গ্রেপ্তার হয়েছে ৮৮ জন। বন্ধ রয়েছে ১৭টি পোশাক কারখানা। দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুরের কোনাবাড়ীতে শ্রমিক বিক্ষোভের সময় ভাঙচুর করা পোশাক কারখানা তুসুকা গার্মেন্টস পরিদর্শনে এসে শিল্প পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) মো. জাকির হোসেন খান সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
ডিআইজি বলেন, গাজীপুরে সবচেয়ে বেশি নাশকতা হয়েছে কোনাবাড়ীতে। ওই গ্রুপ এখানে ভুল বুঝিয়ে নিরীহ শ্রমিকদের আন্দোলনে যেতে বাধ্য করছে।
মদদদাতাদের বেশির ভাগ বহিরাগত। সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। যারা ধ্বংসাত্মক কাণ্ডের সঙ্গে জড়িত, শুধু তাদেরই গ্রেপ্তার করা হবে।
পরিদর্শনকালে গাজীপুর শিল্পাঞ্চল পুলিশ-২-এর পুলিশ সুপার সারোয়ার আলমসহ শিল্প পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
আশুলিয়ায় ৯ মামলা
সাভার প্রতিনিধি জানান, শিল্পাঞ্চল সাভার ও এর পার্শ্ববর্তী ধামরাই উপজেলার প্রায় ১৩০টি পোশাক কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে কর্তৃপক্ষ। কারখানা ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় আশুলিয়া থানায় ৯টি মামলা হয়েছে।
শ্রমিকরা কারখানায় ঢুকে কাজ না করায় কারখানা কর্তৃপক্ষ এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গতকাল সকাল ১০টার দিকে এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন শিল্প পুলিশ-১-এর পুলিশ সুপার মোহাম্মদ সারোয়ার আলম। তিনি বলেন, গত বুধ ও বৃহস্পতিবারের তুলনায় আজকের (গতকাল) পরিস্থিতি অনেকটাই ভালো। শান্তিপূর্ণভাবে কাজ চলছে বেশির ভাগ কারখানায়। তবে ১৩০টি পোশাক কারখানা শ্রম আইনের ১৩(১) ধারায় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে