অর্থ পাচার মামলায় বহুধাপ বিপণন প্রতিষ্ঠান ইউনিপে টু ইউ-এর চেয়ারম্যানসহ ছয় কর্মকর্তাকে ১২ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একই সঙ্গে আসামিদের ২ হাজার ৭০২ কোটি টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করেছেন আদালত। রায় ঘোষণার ১৮০ দিনের মধ্যে রাষ্ট্রের অনুকূলে এই টাকা জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৩ এর বিচারক আবু সৈয়দ দিলজার হোসেন আজ বুধবার এই রায় দেন। দণ্ডিত আসামিরা হলেন—ইউনিপে টু ইউ-এর চেয়ারম্যান শহিদুজ্জামান শাহীন, ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ মুনতাসির হোসেন, নির্বাহী পরিচালক মাসুদুর রহমান, ব্যবস্থাপক জামশেদ রহমান, উপদেষ্টা মঞ্জুর এহসান চৌধুরী এবং ইউনিল্যান্ডের পরিচালক আরশাদ উল্লাহ। দণ্ডিতদের মধ্যে মুনতাসির, জামশেদ ও আরশাদ আদালতে হাজির ছিলেন। রায় ঘোষণার পর তাঁদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিরা পলাতক আছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আদালত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
রায়ে আদালত বলেন, অর্থ পাচার আইনের অপরাধ আসামিদের বিরুদ্ধে প্রমাণিত হওয়ায় প্রত্যেক আসামি ১২ বছর সশ্রম কারাদণ্ডে দণ্ডিত হবেন। আবার ছয় আসামিকে ২ হাজার ৭০২ কোটি ৪১ লাখ ১১ হাজার ৭৮৪ টাকা অর্থদণ্ডে দণ্ডিত করা হলো। অর্থদণ্ডের সব টাকা রাষ্ট্র পাবে।
আদালতের রায়ে আরও বলা হয়, মামলা সংক্রান্ত বিভিন্ন হিসাবে অবরুদ্ধ আছে ৪২০ কোটি ১৪ লাখ ২৯ হাজার ৬৬৩ টাকা। এই টাকা রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। বহুধাপ বিপণন প্রতিষ্ঠান ইউনিপে টু ইউ-এর নামে এবং আসামিদের পরিচালিত সম্পত্তি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
স্বল্প সময়ের মধ্যে অধিক মুনাফার লোভ দেখিয়ে টাকা জমা নিয়ে তা নিজেদের হিসাবে স্থানান্তর করার অভিযোগ এনে ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি এই মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। মামলাটি তদন্ত করে ছয়জনের বিরুদ্ধে ওই বছরের ২৬ জুন আদালতে অভিযোগপত্র দেন দুদকের উপপরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। অভিযোগপত্র আমলে নিয়ে ইউনিপে টু ইউর চেয়ারম্যানসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে ২০১৫ সালের ৬ জুলাই বিচার শুরু করেন আদালত। অভিযোগপত্রে উল্লেখ করা ২৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ২৩ জনের সাক্ষ্য নেন আদালত।
মামলায় বলা হয়, দুদকের অনুসন্ধানে প্রতীয়মান হয়েছে যে, সোনা বিনিয়োগের নামে আসামিরা প্রতারণা ও জালিয়াতির মাধ্যমে গ্রাহকের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ টাকা সংগ্রহ করে। পরে ওই টাকার উৎস গোপন করার জন্য ব্যক্তিগত ও প্রতিষ্ঠানের নামে একাধিক হিসাবে তা স্থানান্তর ও রূপান্তর করেন আসামিরা।