নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় বাড়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন একজন নির্বাচন কমিশনার। ৩০ নভেম্বর মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ সময় রেখে নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করেছিল। তবে দলগুলোর দাবির পরিপ্রেক্ষিতে মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় দু-তিন দিন বাড়ানো হতে পারে। অন্যদিকে বিএনপিকে ইঙ্গিত করে নির্বাচন কমিশনার মো. আনিছুর রহমান গতকাল সিলেটে বলেছেন, দলটি যদি নির্বাচনে আসে, তা হলে নির্বাচনের তফসিল পরিবর্তনের বিষয়টি বিবেচনা করা হতে পারে।
সংসদ নির্বাচনে আচরণবিধি প্রতিপালন নিশ্চিত করার ৩৮ দিনের জন্য ৮০২ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। ২৮ নভেম্বর
থেকে ৪ জানুয়ারি পর্যন্ত এসব ম্যাজিস্ট্রেটরা মাঠে দায়িত্ব পালন করবেন। এদিকে সংসদ নির্বাচনের প্রার্থীরা স্থানীয় সরকারের কোনো সুযোগ-সুবিধা তো দূরের কথা মেয়র, চেয়ারম্যানদের পদমর্যাদাও ব্যবহার করতে পারবেন না। স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় দেশের সব মেয়র, চেয়ারম্যানকে এমন নির্দেশনা দিয়ে এক নির্বাহী আদেশ জারি করেছে, যার অনুলিপি পাঠানো হয়েছে নির্বাচন কমিশনেও। স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব মুহাম্মদ ইবরাহিম সম্প্রতি নির্বাহী আদেশটি জারি করেছেন। এতে ১০টি নির্দেশনা প্রতিপালনের জন্য বলা হয়েছে। একই সঙ্গে নির্দেশনা অমান্য করলে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছে।
নির্দেশনাগুলো হলো- নিজ নিজ এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষার্থে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দেওয়া; নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে নির্বাচন কমিশন সময়ে সময়ে যেসব আদেশ বা নির্দেশ জারি করেছে কিংবা করবে, তা প্রতিপালন; নির্বাচনি মিছিল, সভা ও প্রচারণা যাতে অবাধ, শান্তিপূর্ণ ও বিধি অনুযায়ী হয়, সেদিকে লক্ষ্য রাখা; কোনো নির্বাচনি অফিস বা প্রতীক বা পোস্টার নষ্ট করার যে কোনো প্রচেষ্টা রোধে সামাজিক প্রতিরোধ গঠনে সহায়তা করা; সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদে এমন কোনো উন্নয়ন স্কিম গ্রহণ ও বাস্তবায়ন করবে না, যা জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কোনো প্রাণ ভোট প্রাপ্তিতে বা প্রচারণার পক্ষে ব্যবহৃত হতে পারে; সিটি করপোরেশন, পৌরসভা, জেলা পরিষদ, উপজেলা পরিষদ কিংবা ইউনিয়ন পরিষদের কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে অনুদান বা অনুদানের প্রতিশ্রুতি দিতে পারবে না, যা কোনো প্রার্থীর ভোট প্রাপ্তি বা প্রচারণার কাজে প্রভাব বিস্তার করবে; স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কোনো অফিস, যানবাহন এবং অন্যান্য সম্পত্তি কোনো প্রার্থীর নির্বাচন বা প্রচারণার কাজে কোনোভাবেই ব্যবহার করা যাবে না। মাশুল পরিশোধ করেও ব্যক্তিগত কাজে কোনো যানবাহন ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া যাবে না; স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা বা কর্মচারীরা কোনো প্রার্থীর নির্বাচনি কাজে বা প্রচারণায় অংশ নিতে পারবেন না; ভোট কেন্দ্র নির্মাণসহ নির্বাচন সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সব কাজে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সহায়তা প্রয়োজন হলে স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান তা প্রদান করবে; এবং স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা তাদের পদমর্যাদা, সরকারি সুযোগ-সুবিধা ইত্যাদি কোনো প্রার্থীর নির্বাচনি কাজে ব্যবহার করতে পারবেন না।
সিইসির সঙ্গে আবার বসতে চায় ইইউ : প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালের সঙ্গে নির্বাচনের আগে আরেকবার বৈঠক করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন (ইইউ)। ঢাকায় নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি সিইসিকে চিঠি পাঠিয়ে এ আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। চিঠিতে সিইসিকে ইইউ রাষ্ট্রদূত লিখেছেন, নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এই নির্বাচন উপলক্ষে আমরা ইতোমধ্যে আপনাদের সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদান করেছি। নির্বাচন কমিশনের চলমান এ কাজের জন্য আমরা আপনাদের প্রশংসা করি। চিঠিতে জানানো হয়, নির্বাচন কমিশনের বর্তমান কর্মযজ্ঞ নিয়ে আরও বিস্তারিত জানতে আপনার দফতরে ইইউ মিশনের প্রধানদের সঙ্গে একটি যৌথ সভায় অংশ নেওয়ার সুযোগ চাই। ২৭ নভেম্বর বিকাল ৩টায় বৈঠকের জন্য আপনার সময় হবে? এ বিষয়ে আপনার প্রতিক্রিয়া ও আলোচনার জন্য আমরা উন্মুখ হয়ে আছি।