দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল অনুযায়ী গতকাল সংসদ সদস্য পদে মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার শেষ তারিখ ছিল। রাজনৈতিক অঙ্গনে আলোচনা ছিল পুনঃতফসিল অথবা মনোনয়ন দাখিলের সময় বাড়ানো হতে পারে, কিন্তু গতকাল সন্ধ্যায় ইসির পক্ষ থেকে নিশ্চিত করা হয়েছে— পুনঃতফসিল হচ্ছে না। সেই হিসাবে দ্বাদশ নির্বাচনে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে যারা মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন কেবল তারাই প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারবেন। এদিকে বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ রাজপথে থাকা উল্লেখযোগ্য দলগুলো ভোটে না আসায় এ নির্বাচনকে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ বলতে চাচ্ছেন না নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের একটি অংশ। এদিকে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) বলছে, এ নির্বাচন অংশগ্রহণমূলক নয়। তাই শক্ত বিরোধীদল বিহীন এ নির্বাচনে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে সর্বাধিক গুরুত্ব পাচ্ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থীরা। আওয়ামী লীগ সভাপতির ভাষণে বিষয়টি ইতোমধ্যে স্পষ্ট হয়েছে। সব প্রার্থীর নির্বিঘ্নে নির্বাচনি প্রচারণার পরিবেশ তৈরিতে বার্তা পেয়েছেন মাঠপর্যায়ের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
বিশ্লেষকরা বলছেন, অনেকটা নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতার নির্বাচনে প্রার্থীরা বিরোধী দলের সমর্থক ও সাধারণ ভোটারদের কেন্দ্রে আনতে পারবে কি-না সেটিই এখন মূল আলোচনার বিষয়। কারণ ২০১৪ সালের নির্বাচনে নিজ দলের ভোটারদেরও কেন্দ্রে আনতে পারেনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীরা। ফলে ভোটার উপস্থিতি কম থাকায় ওই নির্বাচন নিয়ে ব্যাপক সমালোচনা রয়েছে দেশে-বিদেশে। তাই এবার স্বতন্ত্র প্রার্থীরা সর্বাধিক গুরুত্ব পাবেন। আওয়ামী লীগ চাইছে শান্তিপূর্ণ ভোট আয়োজন করে সমালোচনার জবাব দিতে। কারণ স্বতন্ত্র প্রার্থিরা অধিকাংশই আওয়ামী লীগেরই প্রার্থী। তাই ২০১৪ সালের মতো দলীয় টিকিট পেলেই এমপি হওয়ার মতো পরিবেশ এবার নেই। চাপ প্রয়োগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থীদের বসিয়ে দেয়ার মাধ্যমে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ারও সুযোগ রাখা হয়নি। কারণ ২০১৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৫৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ওই নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হয়। তাই এবার দলীয় প্রধান ঘোষণা দিয়েছেন, কেউ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। সব মিলিয়ে নিজেদের মধ্যে হলেও মোটামুটি প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ ভোট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে এবার।বিস্তারিত