নিজস্ব প্রতিবেদক
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত অংশ গ্রহণ করছে না। এজন্য আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া মন্ত্রী এবং এমপিদের স্বস্তিতে থাকার কথা। কিন্তু তারা মোটেও স্বস্তিতে নেই। বরং তারা আতংকে আছেন। অনেক মন্ত্রী এমপি চাচ্ছেন ২০১৪ বা ২০১৮ সালের মতো বিনা শ্রমে আবার নির্বাচিত হতে। কিন্তু সেই সুযোগ তারা এবার পাচ্ছেন না । স্বতন্ত্র প্রার্থীরা তাদের চোখ রাঙাচ্ছে।
অন্তত ১০০ আসনে আওয়ামী লীগের বর্তমান মন্ত্রী এবং এমপিরা বড় ধরনের চ্যালেঞ্জর মুখে। অন্য সময়ে নির্বাচনে প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলা রক্ষকারী বাহিনী বর্তমান এমপিদের পক্ষে কাজ করে। কিন্তু এবার প্রশাসন এবং আইন শৃঙ্খলারক্ষাকারী বাহিনীও মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। ইতিমধ্যে নির্বাচন কমিশন, সব ওসি এবং এক বছরের বেশী সময় থাকা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বদলির আদেশ দিয়েছেন।
শুধু তাই নয়, জেলা প্রশাসকরা কঠোর নজরদারীতে আছেন। ইতিমধ্যে দুইজন জেলা প্রশাসককে বদলী করেছে নির্বাচন কমিশন। এর ফলে নির্বাচনে সহজ বিজয় পেতে ক্ষমতাসীন দলের সংসদ সদস্যরা যে বাগান সাজিয়েছিলেন, সেই বাগান তছনছ হয়ে গেছে। তাছাড়া আওয়ামী লীগের টিকেট না পেয়ে যারা বিদ্রোহী প্রার্থী হয়েছেন, তারাও ক্ষমতাসীন দলের স্থানীয় পর্যায়ের প্রভাবশালী নেতা। তাদের সাথেও প্রশাসন এবং পুলিশের ঘনিষ্ট সম্পর্ক রয়েছে। মন্ত্রী এবং এমপিদের অনেকেই গত ৫ বছরে এলাকায় নানা কারণে বিতর্কিত হয়েছে। কারো কারো সাথে এলাকার যোগাযোগও কম ছিলো। এবার যখন তারা নির্বাচনের মাঠে নামছেন, তখন তারা এলাকায় জনপ্রিয় আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থীদের চ্যালেঞ্জের মুখে পরছেন। সাধারণ মানুষও নতুন মুখ চায়। যারা এতোদিন কথা দিয়ে কথা রাখেনি, ভোটের মাধ্যমে তার প্রতিশোধ নিতে চায়। এই নির্বাচন সেই সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বহু স্থানেই আনুষ্ঠানিক প্রচারের আগেই স্বতন্ত্র প্রার্থীদের পক্ষে জোয়ার এসেছে।
এদিকে আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড থেকেও জানিয়ে দেয়া হয়েছে যে, নিজের জনপ্রিয়তা এবং যোগ্যতাতেই প্রার্থীদের জয়ী হয়ে আসতে হবে। তাই বিএনপি-জামায়াত না এলেও ঝুঁকির মধ্যে আছেন অন্তত ১০০ বর্তমান এমপি। এরকম পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বিপদে আছে গত দুটি নির্বাচনে যারা ভোট ছাড়া এমপি হয়েছেন তারা। এলাকায় বিতর্কিত হয়েও যারা আবার টিকেট পেয়েছেন, এই নির্বাচন তাদের জন্য কঠিন পরীক্ষা।