নিজস্ব প্রতিবেদক ঢাকা
ধর্ষণ, ধর্ষণের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ এবং তা সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে করা এক মামলার আসামিকে পুলিশে দিয়েছেন হাইকোর্ট। আগাম জামিন চেয়ে আসামির করা আবেদন খারিজ করে আজ মঙ্গলবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
আসামির নাম মো. আমির হোসেন (৩৫)। এজাহারে আসামির ঠিকানা চকবাজারের চুড়িহাট্টা উল্লেখ রয়েছে। শুনানিকালে আসামির উদ্দেশে আদালত বলেন, ‘ফেসবুকের মাধ্যমে মেয়েটির সঙ্গে আপনি প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন, তা ঠিক আছে। কিন্তু তাঁকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আপনি ধর্ষণ করেন। ধর্ষণের ভিডিও ও স্থিরচিত্র ধারণ করেন। এই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে মেয়েটির কাছ থেকে টাকাও নেন। আপনার অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে মেয়েটি দেশের বাইরে চলে যান। দেশের বাইরে গিয়েও মেয়েটি আপনার হাত রক্ষা পেলেন না। ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দিলেন। এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করে কেউ হাইকোর্ট থেকে জামিন পেতে পারেন না।’ পরে জামিন আবেদন খারিজের আদেশ দেন আদালত।
চলতি বছরের ২১ নভেম্বর মেয়েটির বাবা চকবাজার মডেল থানায় মো. আমির হোসেনের বিরুদ্ধে ওই মামলা করেন। এতে আসামির বিরুদ্ধে মেয়েটিকে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করে নগ্ন ছবি তৈরি করে ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায়সহ পরে ইন্টারনেটে তা ছেড়ে দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়।
এই মামলায় আগাম জামিন চেয়ে আবেদন করেন আসামি। আবেদন শুনানির জন্য থাকায় আসামি আদালতে হাজির হন। আদালতে তাঁর পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী এমদাদুল হক কাজী। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানিতে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি।
পরে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কে এম মাসুদ রুমি বলেন, মেডিকেলের শিক্ষার্থী ভুক্তভোগী মেয়েটির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন আসামি। বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ করেন, ধর্ষণের স্থিরচিত্র ও ভিডিও ধারণ করে এবং এগুলো ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে টাকাও নেন মেয়েটির কাছ থেকে। ২০২২ সালের শেষ দিকে মেয়েটি বিদেশে চলে যান। এরপর ধারণ ধরা ভিডিও চলতি বছর সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন আসামি। এ ধরনের জঘন্য অপরাধ করে কেউ হাইকোর্ট থেকে জামিন পেতে পারেন না বলে উল্লেখ করেছেন হাইকোর্ট।
আদেশের বিষয়টি জানিয়ে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বলেন, হাইকোর্ট আগাম জামিন আবেদন খারিজ করে দিয়ে ওই মামলা সূত্রে আসামিকে পুলিশে সোপর্দ করার নির্দেশ দেন। এরপর পুলিশ এসে আসামিকে আটক করে নিয়ে যায়।