গত ২ মার্চ। রাতে চট্টগ্রাম শহরের নূপুর মার্কেট এলাকার এক ব্যবসায়ীকে কাজীর দেউড়ির এপোলো শপিং সেন্টারের সামনে থেকে ‘পুলিশ পরিচয়ে’ অপহরণ করা হয়। পরে তাকে একটি বাসায় আটকে রেখে বিভিন্ন অপত্তিকর ছবি তুলে তা প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে দুই লাখ টাকা দাবি করে। ওই ব্যবসায়ী বিভিন্নভাবে সংগ্রহ করে ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়। পরে ওই ব্যবসায়ী বিষয়টি পুলিশকে জানান। এরপর অভিযানে নামে পুলিশ। পুলিশ একে একে গ্রেফতার করে পাঁচজনকে। তারা হলো- মো. দিদারুল ইসলাম ওরফে দিদার (৩৫), ফাতেমা ইয়াসমিন নিশি (২৮), বিথিত মাহমুদ মোস্তফা সিফা (২৩), মো. আনোয়ার হোসেন ওরফে আনু (৪৪) ও রাকিব আল ইমরান (২৬)। পুলিশ তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে তাদের অপরাধের কাহিনী। পুলিশ জানায়, তারা কখনো পুলিশ, কখনো সাংবাদিক পরিচয় দেয়। তাদের টার্গেট ব্যবসায়ী। ব্যবসায়ীদের বন্ধু বানিয়ে জিম্মি করে। এরপর নারীদের দিয়ে অশ্লীল ছবি তোলে। এরপর ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে টাকা আদায় করে নেয়। এই ভয়ঙ্কর চক্রটি পুলিশের খাতায় অশ্লীল চক্র নামে পরিচিত। রাজধানী ঢাকা, বন্দরনগরী চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন এলাকায় এই অশ্লীল চক্র সক্রিয়। সংশ্লিষ্টরা জানান, তারা বন্ধু বানাতে না পারলে জোর করে অপহরণ করে নিয়ে যায়। গত পাঁচ বছরে এ ধরনের বেশ কয়েকটি ঘটনা ঘটিয়েছে তারা। সে সময় তারা গ্রেফতারও হয়েছিল। তাদের বিরুদ্ধে অপহরণ ও মুক্তিপণ আদায়ের অভিযোগে মামলাও রয়েছে।
পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা স্বীকার করেছে, তারা বাসায় অবস্থান নিয়ে নিশি ও সিফা বিভিন্ন জনের মোবাইল নম্বর ও ফেসবুক আইডি সংগ্রহ করে হোয়াটস অ্যাপ, ইমো ও সরাসরি ফোনে যোগাযোগ করে বন্ধুত্ব গড়ে তোলে। পরে ওই ব্যক্তিকে প্রলোভন দেখিয়ে বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাদের দলের কেউ কেউ ‘সাংবাদিক’ পরিচয়ে বাসায় ঢুকে আপত্তিকর ছবি তোলে এবং তা প্রকাশের হুমকি দিয়ে টাকা আদায় করে।
গ্রেফতার দিদার, রাকিব ও পলাতক কামরুল মিলে গত ২ মার্চ ওই ব্যবসায়ীকে বহনকারী অটোরিকশাটি থামিয়ে তাকে ধরে নিয়ে চশমাহিলের একটি বাসায় আটকে রাখে। বাসাটি দিদার ও নিশি স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ভাড়া নিয়েছিল। ওই বাসায় নিয়ে আটকে রেখে সিফার সঙ্গে ওই ব্যবসায়ীর আপত্তিকর এবং ইয়াবা দিয়ে ছবি তোলে। কামরুল নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দিয়ে ছবিগুলো বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ করার হুমকি দিয়ে দুই লাখ দাবি করে।
পুলিশ জানায়, এ ধরনের ঘটনা ঘটছে অহরহ। কিন্তু সামাজিক অবস্থানের কারণে অনেকেই মুখ খোলে না। যে কারণে এই অপরাধের মাত্রা বাড়ছে। এ অবস্থা থেকে নিজেদের রক্ষা পেতে হলে সচেতনতার বিকল্প নেই। প্রেমের মতো সম্