সেনাবাহিনী-বিজিবি-র‍্যাব প্রয়োজনে কেন্দ্রের ভেতরে দায়িত্ব পালন করবে

সেনাবাহিনী-বিজিবি-র‍্যাব প্রয়োজনে কেন্দ্রের ভেতরে দায়িত্ব পালন করবে

এবারের নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের ভেতরে এবং ভোট গণনা কক্ষের শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাসদস্যদের দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। রিটার্নিং বা প্রিজাইডিং অফিসারদের চাহিদার পরিপেক্ষিতে সেনাসদস্যদের এ দায়িত্ব দেয়া হবে।

বিজিবি এবং র‍্যাবকেও এ দায়িত্ব দেয়া হতে পারে। প্রয়োজন হলে র‌্যাব-বিজিবি হেলিকপ্টার ও ডগ স্কোয়াড ব্যবহার করতে পারবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী মোতায়ন সংক্রান্ত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জারি করা পরিপত্রে এসব ব্যবস্থার বিষয় উল্লেখ করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার এ পরিপত্র জারি করা হয়।

২০১৮ সালের ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচেন ইভিএমে ভোট নেওয়া ৬টি আসনের ভোটকেন্দ্রে কারিগরি সহয়তা দেওয়ার জন্য সেনাসদস্যদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

এবার স্বশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন সম্পর্কে পরিপত্রে বলা হয়েছে, নির্বাচন উপলক্ষে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় বেসামরিক প্রশাসনকে সহায়তার জন্য ২৯ ডিসেম্বর থেকে ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত (যাতায়াত সময়সহ) ‘ইন এইড টু দি সিভিল পাওয়ার’-এর আওতায় সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন করা হবে।

ফৌজদারি কার্যবিধি ও অন্যান্য আইনের বিধান অনুসারে এবং প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জারি করা ‘ইনস্ট্রাকশন রিগার্ডিং এইড টু দি সিভিল পাওয়ার’-এর ৭ম ও ১০ম অনুচ্ছেদের বিধান অনুযায়ী সশস্ত্র বাহিনীর কার্যক্রম সম্পন্ন হবে।

রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শক্রমে প্রয়োজন অনুসারে সশস্ত্র বাহিনী মোতায়েন হবে এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সশস্ত্র বাহিনী অন্যান্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে সহায়তা দেবে।

সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা প্রতিটি জেলা-উপজেলা-মেট্রোপলিটন এলাকার নোডাল পয়েন্ট ও অন্যান্য সুবিধাজনক স্থানে অবস্থান করবে এবং প্রয়োজন অনুযায়ী রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে টহল ও অন্যান্য আভিযানিক কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।

রিটার্নিং অফিসার বা প্রিজাইডিং অফিসারের চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে ভোটকেন্দ্রের অভ্যন্তরে কিংবা ভোটগণনা কক্ষের শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য দায়িত্ব পালন করবেন। এ বাহিনীর টিমের সঙ্গে এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োজিত করা হবে।

উপকূলবর্তী এলাকায় নৌবাহিনী প্রয়োজন অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। ঝুঁকি বিবেচনায় রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে আলোচনাক্রমে প্রতিটি জেলায় নিয়োজিত সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যের সংখ্যা কমবেশি করা যাবে এবং এ বাহিনীর সদস্যরা পরিস্থিতি বিবেচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী গুরুত্বপূর্ণ সড়ক-মহাসড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে।

বিমান বাহিনী প্রয়োজনীয় সংখ্যক হেলিকপ্টার ও পরিবহন বিমান জননিরাপত্তা বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশন সচিবালয় ও বাহিনীসমূহের অনুরোধে উড্ডয়ন সহায়তা দেবে। সংশ্লিষ্ট রিটার্নিং অফিসারের নির্দেশনা অনুসারে এলাকাভিত্তিক মোতায়েন পরিকল্পনা চূড়ান্ত করা হবে।

পরিপত্রে আরও বলা হয়, ভোটকেন্দ্র প্রতি ১৫-১৭ জন নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকবেন। আনসার ভিডিপিসহ ভোটকেন্দ্রের নিরাপত্তা সদস্যরা ভোটের আগের দুই দিন ও পরের দুই দিন মিলিয়ে পাঁচ দিন নিয়োজিত থাকবেন।

মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে, পার্বত্য ও দুর্গম এলাকার সাধারণ ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১৫-১৬ জন এবং গুরুত্বপূর্ণ ভোটকেন্দ্রে সর্বোচ্চ ১৬-১৭ জন পুলিশ, আনসার ও গ্রাম পুলিশ সদস্য মোতায়েন থাকবেন। তবে রিটার্নিং অফিসাররা চাইলে সংখ্যা বাড়াতে বা কমাতে পারবেন।

নির্বাচন কমিশনের অতিরিক্ত সচিব অশোক কুমার দেবনাথ জানান, এবারের নির্বাচনে পাঁচ লাখ ১৬ হাজার আনসার সদস্য, এক লাখ ৮২ হাজার ৯১ পুলিশ ও র‌্যাব সদস্য, দুই হাজার ৩৫০ কোস্টগার্ড সদস্য এবং ৪৬ হাজার ৮৭৬ বিজিবি সদস্য দায়িত্ব পালন করবেন।

যান চলাচলে বিধিনিষেধ

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, আগামী ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৮ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত মোটরসাইকেল চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। ৬ জানুয়ারি মধ্যরাত থেকে ৭ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত ট্যাক্সি, মাইক্রোবাস, পিকআপ, ট্রাক, লঞ্চ, ইঞ্জিনচালিত নৌযান চলতে পারবে না। ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত বৈধ অস্ত্র বহন ও প্রদর্শন করতে পারবেন না কেউ। কেবল জরুরি বাহন ও ইসির অনুমতিপ্রাপ্ত যান চলতে পারবে। ভোটগ্রহণের আগের ৪৮ ঘণ্টা ও পরের ৪৮ ঘণ্টা মিছিল-মিটিং ও শোভাযাত্রা করা যাবে না।

অস্ত্র নিষিদ্ধ

আগামী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত লাইসেন্সপ্রাপ্ত সব আগ্নেয়াস্ত্র বহন ও প্রদর্শন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করেছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। বৃহস্পতিবার এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এ আদেশ লঙ্ঘনকারীদের বিরুদ্ধে দ্য আর্মস অ্যাক্ট ১৮৭৮-এর সংশ্লিষ্ট ধারার বিধানমোতাবেক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

জাতীয় শীর্ষ সংবাদ