দিনে রোদ ও রাতে শীত আরও বাড়তে পারে

দিনে রোদ ও রাতে শীত আরও বাড়তে পারে

বিশেষ প্রতিনিধি ঢাকা

দেশের বেশির ভাগ এলাকাজুড়ে শীতের অনুভূতি থাকবে আজ রোববারও। সারা দেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা কিছুটা কমতে পারে। অর্থাৎ শীতের অনুভূতি বাড়তে পারে। তবে দিনে রোদ থাকতে পারে, ফলে ওই সময়ে শীত কিছুটা কমে আসবে।

শৈত্যপ্রবাহের এলাকা আরও বিস্তৃত হতে পারে। অর্থাৎ শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাওয়া এলাকা রাজশাহী, নওগাঁ, দিনাজপুর ও মৌলভীবাজারের আশপাশেও শীতল ওই আবহাওয়া ছড়িয়ে পড়তে পারে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

রোদের দেখা পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় গতকাল শনিবার দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেড়ে যায়। দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য বেড়ে যাওয়ায় শীতের কষ্ট কিছুটা কমেছে। কুয়াশাও কিছুটা কমে আসায় শীতের অনুভূতিও কমেছে। দুই দিন ধরে রাজধানীসহ দেশের বেশির ভাগ এলাকায় এ ধরনের আবহাওয়া থাকছে। দেশের যে চার জেলায় শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তা গতকালও অব্যাহত ছিল।

 

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, দুই সপ্তাহ ধরে দেশের বেশির ভাগ এলাকায় দিন ও রাতে যে সমান শীতের অনুভূতি ছিল, তা কিছুটা অস্বাভাবিক। শীতকালে দিনে রোদ থাকে, রাতে শীত নামে। এটাই স্বাভাবিক। আগামী কয়েক দিন এ ধরনের শীত অব্যাহত থাকতে পারে। তবে অনেক এলাকায় তাপমাত্রা কমে গিয়ে শৈত্যপ্রবাহের এলাকা বাড়তে পারে।

এদিকে দেশের উত্তরাঞ্চল এবং সিলেট বিভাগের বেশির ভাগ এলাকায় তীব্র শীতের কারণে জীবনযাত্রা এখনো স্বাভাবিক হয়নি। রাত থেকে নামা ঘন কুয়াশার কারণে অনেক স্থানে যানবাহন চলাচলে সমস্যা হয়েছে। বিশেষ করে মহাসড়ক এবং নদীপথে সমস্যা হয়েছে সবচেয়ে বেশি।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের হিসাবে, গতকাল দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল শ্রীমঙ্গলে ৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। রাজধানীর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ১৩ দশমিক ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বরিশাল ও চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক স্থানে দিনের তাপমাত্রা ২ থেকে ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে।

দিল্লিতে হঠাৎ কুয়াশা, কারণ কী

আবহাওয়া অধিদপ্তরের পূর্বাভাস বলছে, আগামী মঙ্গলবার থেকে দেশের আকাশে আবারও মেঘের আনাগোনা বাড়তে পারে। দেশের উপকূলীয় এলাকায় আবারও নামতে পারে বৃষ্টি। ওই বৃষ্টি দুই দিন থাকতে পারে। তারপর আবারও শীত বাড়তে পারে। দেশের বিভিন্ন স্থানে শৈত্যপ্রবাহ শুরু হতে পারে।

আবহাওয়াবিদদের হিসাবে, সাধারণত জানুয়ারি হচ্ছে বছরের সবচেয়ে শীতলতম মাস। এবারও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। বছরের এ সময়টাতে দিন ও রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে থাকে। ফলে রাতে তীব্র শীত থাকলেও দিনে রোদ ও শীত মিলেমিশে মাঝারি শীতের অনুভূতি থাকে। কিন্তু এবার রাত ও দিনের তাপমাত্রার পার্থক্য ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে নেমে আসায় শীতের অনুভূতি বেশি। তবে মাসের বাকি দিনগুলোতে শীতের স্বাভাবিক অনুভূতি বজায় থাকবে বলে মনে করছেন আবহাওয়াবিদেরা।

উড়োজাহাজ চলাচল ব্যাহত
ঘন কুয়াশার কারণে গতকাল সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে কোনো উড়োজাহাজ অবতরণ ও উড্ডয়ন করতে পারেনি। এতে বাংলাদেশ বিমান, এয়ার অ্যাস্ট্রা, ইউএস-বাংলা ও নভোএয়ারের ছয়টি উড়োজাহাজের ঢাকাগামী চার শতাধিক যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন। ঘন কুয়াশা কেটে যাওয়ায় পাঁচ ঘণ্টা পর বেলা ২টা ৪০ মিনিট থেকে বিমানবন্দরে ফ্লাইট ওঠানামা শুরু হয়।

ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে নামতে না পেরে দুটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইট সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। সকাল ৮টা ৫৫ মিনিটে কাতারের দোহা থেকে আসা ইউএস-বাংলার একটি ফ্লাইট এবং ৯টা ৪৪ মিনিটে চীনের গুয়াংজু থেকে আসা ইউএস-বাংলার আরেকটি ফ্লাইট সিলেটে অবতরণ করে। এ নিয়ে আবহাওয়ার কারণে চার দিনের ব্যবধানে সিলেটে চারটি ফ্লাইটের জরুরি অবতরণের ঘটনা ঘটল।

[প্রতিবেদন তৈরিতে সহায়তা করেছেন প্রতিনিধি, সিলেট, সৈয়দপুর ও নীলফামারী]

পরিবেশ শীর্ষ সংবাদ