বাংলাদেশ-ভারতের চার জেলা সীমান্তে সোনা চোরাচালান ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ঝিনাইদহ, যশোর, কুষ্টিয়া ও চুয়াডাঙ্গা সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত ঘটছে বন্দুকযুদ্ধ। একই রেশে কয়েকদিন আগে ঝিনাইদহে গুলি করে হত্যা করা হয়েছে দুজনকে। এদিকে কলকাতায় এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি) মাঝেমধ্যে আটক করছে শত শত কোটি রুপি। পশ্চিমবঙ্গের একজন মন্ত্রী ও তার বান্ধবী আটক হয়েছিলেন দুর্নীতির দায়ে। কিন্তু সোনার চালান আটক হলেও বাংলাদেশের রাঘববোয়ালরা রয়ে যাচ্ছে ধরাছোঁয়ার বাইরে। তাদের চিহ্নিত করলেও ব্যবস্থা নেওয়া হয় না। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, স্বর্ণ চোরাচালানের সঙ্গে জড়িত কেবল বহনকারীই আইনের আওতায় আসে। মূল হোতারা রয়ে যায় ধরাছোঁয়ার বাইরে। দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি না হওয়া ও চোরাচালানে জড়িত গডফাদারদের আইনের আওতায় আনতে না পারার জন্যই সোনা চোরাচালান বাড়ছে।
অপরাধ বিশেষজ্ঞরা বলছেন, গডফাদারদের আটক করতে পারলেই সোনা চোরাচালান রোধ করা সম্ভব হতো। অথচ পাশের দেশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গে দুর্নীতির দায়ে সাবেক শিল্পমন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।
সীমান্ত সূত্রগুলো বলছেন, দুবাই, মালয়েশিয়া, আফ্রিকা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশ থেকে বিমানে দেশে আসে সোনার চালান। পরে ঢাকা থেকে ট্রেন অথবা বাসে করে একটি গ্রুপ সোনা নিয়ে যায় দক্ষিণ-পশ্চিম সীমান্ত এলাকায়। সীমান্তে নির্ধারিত স্থানে সোনার চালানটি হাতবদল হয়ে চলে যায় স্থানীয় এজেন্টের হাতে। স্থানীয় এজেন্টরা সেই সোনার চালান সীমান্ত পার করে পৌঁছে দেয় ভারতে। সোনার বিক্রির টাকায় এপারে আসে মাদকদ্রব্য, আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন ধরনের চোরাচালান পণ্য। সোনা চোরাচালানের আধিপত্য বিস্তার নিয়ে এসব অঞ্চলে অসংখ্য গ্রুপের সৃষ্টি হয়েছে। গ্রুপগুলোর মধ্যে সংঘর্ষও ঘটে। ১৭ জানুয়ারি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলায় ‘স্বর্ণ চোরাচালান নিয়ে দ্বন্দ্বের জের’ ধরে গোলাগুলিতে দুজন নিহত হন। উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের পলিয়াটিপাড়ায় এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন বাঘাডাঙ্গা গ্রামের শামীম ইসলাম (৩৫) ও মন্টু মন্ডল (৫০)। স্বর্ণ চোরাচালানের আধিপত্য বিস্তার নিয়েই তাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এমন খুনোখুনির ঘটনা সীমান্ত এলাকাগুলোয় এখন অহরহ।বিস্তারিত