টেকনোলজি ফর প্রসপারিটি’ শ্লোগানে আন্তর্জাতিক কনভেনশন সিটি বসুন্ধরা (আইসিসিবি) শুরু হলো দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতের বৃহত্তম প্রদর্শনী ‘১৫তম বেসিস সফট এক্সপো-২০১৯’। মঙ্গলবার সকাল ১০টায় ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরায় (আইসিসিবি) তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক প্রধান অতিথি হিসেবে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন।
এবারের মেলার নতুন সংযোজন উপলক্ষে নির্মিত মোবাইল অ্যাপস বেসিস এক্সপোর প্রশংসা করে জুনাইদ আহমেদ পলক বলেন, ‘বিশ্বের অন্যান্য দেশের সাথে তাল মিলিয়ে অ্যাপস, ড্রোনের মতো প্রযুক্তি পণ্য ব্যবহার করে আমরাও বিশ্বমানের মেলা আয়োজনে সক্ষম হচ্ছি। এটি একটি ইতিবাচক সংযোজন। দেশে তথ্যপ্রযুক্তির অবকাঠামো উন্নয়নে বর্তমান অবস্থান বর্ণনা করে মাননীয় প্রতিমন্ত্রী জানান, দেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১০ কোটি এবং দেশের ৯৫ শতাংশ ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। সরকার তথ্য প্রযুক্তি খাতের উন্নয়নে আন্তরিক। অবকাঠামোগত উন্নয়ন ছাড়াও দক্ষ জনশক্তি তৈরিতে ইনফো সরকার থ্রিসহ বিভিন্ন কর্মসূচি এবং প্রকল্প গ্রহণ করেছে। যার মাধ্যমে ৬ লক্ষ তরুণ তরুণীকে দক্ষ কওে তোলা হবে। এরা সহ দেশের বর্তমানে ১০ লক্ষ তরুণ-তরুণী তথ্যপ্রযুক্তির সাথে কাজ করছে। যা ২০২১ সালের মধ্যে ২০ লাখে পৌছাবে। আমরা সরকারি কাজে দেশীয় সফটওয়ার প্রতিষ্ঠানের তৈরি সফটওয়্যার দেশীয় সকল প্রতিষ্ঠানে ব্যবহার করতে বলবো। প্রয়োজনে প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো যৌথভাবে কাজ করবে। এছাড়াও দেশীয় সফটওয়ার প্রতিষ্ঠানের ওপর আস্থা বাড়াতে এবং এর ব্যবহার করতে দেশীয় টেলিকম খাত ও ব্যাংকিং খাতকে অনুরোধ করেন’।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব বলেন, ‘অন্যান্য বারের তুলনায় এবারের আয়োজনটি বেশ বড় এবং চমকপ্রদ। নতুন প্রযুক্তি প্রদর্শনে এই আয়োজন ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এমন একটি আয়োজনের সাথে স¤পৃক্ত থাকতে পেরে আমরা আনন্দিত’।
সভাপতির বক্তব্যে বেসিস সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীর বলেন, ‘এবারের বেসিস সফটএক্সপো সফটওয়্যার এবং আইটি এস সেবা প্রদর্শন এবং অশংগ্রহণকারী প্রতিষ্ঠানের সংখ্যার দিক হতে এই আয়োজন শুধু বাংলাদেশে নয় সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে এটি সবচেয়ে বড় আয়োজন। তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানসমূহের এই আগ্রহ এবং অংশগ্রহণ এটা প্রমাণ করে যে, এই শিল্প খাতের অবস্থান আশাব্যঞ্জক এবং সম্ভাবনাময়’।
বেসিস সফটএক্সপো-২০১৯ এর আহ্বায়ক ফারহানা এ রহমান বলেন, ‘এবার ১০টি পৃথক জোনে ২৫০টি প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য ও সেবা প্রদর্শন করছে। থাকছে ৩০টির মতো সেমিনার,বিজনেস লিডারশিপ মিট, আইটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প, গেমিং ফেস্ট ইত্যাদি। এছাড়াও জাপানের সাথে ব্যবসা সম্প্রসারণে ১০টি জাপানী প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সাথে বিটুবি এবং ৩টি সেমিনার ছাড়াও এক্সপোর দ্বিতীয় দিনকে জাপান দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। সুইডেনও নেদারল্যান্ডের সাথেও বিটুবি ম্যাচমেকিং সেশন অনুষ্ঠিত হবে’।
প্রদর্শনী এলাকাকে দশটি জোনে ভাগ করা হয়েছে। এছাড়াও নতুন সংযোজন ইন্ডাস্ট্রি ৪.০ জোন এবং এক্সপেরিয়েন্স জোন বাংলাদেশের তথ্যপ্রযুক্তি খাতের সক্ষমতা তুলে ধরবে। মেলায় রয়েছে উইমেন জোন, ভ্যাট জোন, ডিজিটাল এডুকেশন জোন, ফিনটেক জোন এবং বরাবরের মতো রয়েছে সফটওয়্যার সেবা প্রদর্শনী জোন, উদ্ভাবনী মোবাইল সেবা জোন, ডিজিটাল কমার্স জোন, আইটিইএস ও বিপিও জোন। এছাড়ও অনুষ্ঠিত হবে ৩০টিরও বেশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ক সেমিনার, যেখানে বক্তব্য রাখবেন শতাধিক দেশি-বিদেশি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞ। পাশাপাশি দেশি-বিদেশি ব্যবসায়ীদের জন্য থাকছে বি-টু-বি ম্যাচমেকিং সেশন, যার মাধ্যমে ব্যবসায়ীরা নিজেদের ব্যবসার প্রসার খুব সহজেই করতে পারবেন। আয়োজন করা হবে কর্পোরেট আওয়ার, জাপান ডে। লিডারশিপ মিটে অংশ নেবেন পাঁচ শতাধিক কর্পোরেট হাই অফিশিয়াল। শিক্ষার্থীদের জন্য থাকছে আইসিটি ক্যারিয়ার ক্যাম্প আর বরাবরের মতো গেমিং ফেস্ট।
তিন দিনব্যাপী এই প্রদর্শনী চলবে আগামী ২১ মার্চ পর্যন্ত। বেসিসের সভাপতি সৈয়দ আলমাস কবীরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থপ্রতিম দেব। অনুষ্ঠানে বেসিস সফটএক্সপো ২০১৯ সম্পর্কে সূচনা বক্তব্য রাখেন বেসিস সফটএক্সপো ২০১৯ এর আহ্বায়ক ও জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি ফারহানা এ. রহমান।