গরমে সবচেয়ে বেশি দেখা দেয় পানিশূন্যতা। তাই পানিশূন্যতা রোধ করতে হলে প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে। শরীরের পানির অপর্যাপ্ততা থেকে অনেক সমস্যার কারণ হতে পারে। যেমন মুখে ব্রণ, দানা দানা ওঠা, বমি বমি ভাব, পেটের সমস্যা থেকে শুরু করে রক্তচাপের সমস্যা, ত্বকের ও চুলের শুষ্কতা, শরীরের দুর্বলতা ইত্যাদি।
তাই প্রতি ২.৫ লিটার থেকে ৩.৫ লিটার পানি পান করতে হবে। আর পানি হতে হবে অবশ্যই বিশুদ্ধ পানি। গরমে আর একটি সমস্যা দেখা দেয় তা হলো বদহজম। এর ফলে দেখা দেয় ডায়রিয়া, বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া, এসিডিটি, পেটফাঁপা, চুকা ঢেঁকুর ওঠা ইত্যাদি। তাই গরমে খাবার নির্বাচনের ক্ষেত্রে সতর্ক হতে হবে।
প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি খেতে হবে। গরু ও খাসির মাংস, পোলাও, বিরিয়ানি, বোরহানি, কাবার ইত্যাদি খাবার না খাওয়াই ভালো। ভাজা-পোড়া খাবার কম খেতে হবে। রান্নায় কম তেল ও মসলা ব্যবহার করতে হবে। শাকসবজি ও ছোট মাছ খাওয়া ভালো। সবজির মধ্যে কাঁচা পেঁপে, লাউ, কুমড়া, সবুজ শাক, ডাঁটা ইত্যাদি খেতে পারেন। খাওয়ার সময় চেষ্টা করতে হবে খাবার যেন ভরাপেট না হয়। সালাদ খেতে পারেন বেশি করে।
মৌসুমি ফল যেমন তরমুজ, আনারস, বাঙ্গি জাতীয় রসালো ফল খেতে পারেন। এতে শরীরের পানির চাহিদাও পূরণ হবে। মনে রাখতে হবে, বাইরের কিংবা দোকান রেস্টুরেন্টের ফলের রস না খেয়ে ঘরে বিভিন্ন রকম ফল কিনে সেই ফল দিয়ে জুস বানিয়ে খেতে পারেন। এ ক্ষেত্রে দেশীয় ফল দিয়ে জুস বানিয়ে খেলে বেশি উপকার পাওয়া যায়। গরমে ডাবের পানি খেতে পারেন।
সব সময় বাসায় তৈরি করা খাবার গ্রহণ করতে চেষ্টা করুন। রাস্তার পাশে খোলা খাবার একদমই খাবেন না। এতে ধুলাবালি সহ্য অন্যান্য জীবাণু বেশি থাকে এই গরমে। কারণ গরমে অণুজীবের বংশবৃদ্ধি দ্রুত হয়। তাই খাবার দ্রুত হয়ে যায়। বাসায় রান্নাকৃত খাবার সংরক্ষণেও সতর্ক থাকতে হবে। গরমে চা, কফি, ক্যাফেইন ইত্যাদি না খেয়ে বরং দই, মাঠা, লাচ্ছি, বিভিন্ন ফলের রস যা ঘরে তৈরি ইত্যাদি খেতে পারেন।
গরমে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মানুষের শরীরের ও মনের সুস্থতা বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই শরীরে প্রোটিনের চাহিদা মেটাতে প্রাণিজ প্রোটিন না খেয়ে উদ্ভিজ প্রোটিন খাওয়ার চেষ্টা করুন।
যদি এসিডিটি না থাকে তাহলে পাঁচমিশালি ডাল দিতে পারেন। আর যদি ডাল রান্না করার আগে ৫ মিনিট ভিজিয়ে রাখতে পারেন, তবে ডাল থেকে এসিডিটি হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়। গরমে সঠিক খাদ্যাভ্যাস মেনে চলুন, সুস্থ থাকুন।