২০০৯ সালেও বেসিক ব্যাংকের পরিচিতি ছিল দেশের ভালো ব্যাংকগুলোর অন্যতম হিসেবে। সেই রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংক এখন একটি চরম দুর্বল আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত হয়ে একীভূত হওয়ার তালিকায় নাম লিখিয়েছে। বেসরকারি খাতের সিটি ব্যাংকের সঙ্গে এটিকে একীভূত করার উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একজন রাজনীতিবিদকে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ দেওয়ার পর মাত্র পাঁচ বছরেই একটি ব্যাংক কীভাবে লুটপাটের শিকার হতে পারে, তার টেক্সটবুক উদাহরণ বেসিক ব্যাংক।
একসময় ভালো ব্যবসায়ীরা ছিলেন বেসিক ব্যাংকের গ্রাহক। দক্ষ ব্যবস্থাপনা ও ভালো সুযোগ-সুবিধার কারণে অনেক মেধাবী শিক্ষার্থীর আগ্রহ থাকত ব্যাংকটিতে কর্মী হিসেবে যোগ দিতে। তাই এমন একটি ব্যাংক কেন দুর্বল হয়ে আরেকটি ব্যাংকে বিলীন হতে চলেছে, এটিই বড় প্রশ্ন।
বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে আপত্তি জানিয়ে কোনো একটি সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে বেসিক ব্যাংক।
বেসিক ব্যাংককে একটি বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে—এ ঘোষণার পর আরও বেশি আস্থার সংকটে পড়েছে ব্যাংকটি। এরই মধ্যে ব্যাংকটি থেকে দুই হাজার কোটি টাকার বেশি আমানত তুলে নিয়েছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান। এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সহায়তা নিয়ে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ব্যাংকটি। তবে বেসরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত হতে আপত্তি জানিয়ে কোনো একটি সরকারি ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার জন্য সরকারের কাছে আনুষ্ঠানিক চিঠি দিয়েছে বেসিক ব্যাংক।
বেসিক ব্যাংককে ডোবানোর কাজ শুরু হয় ২০০৯ সালে সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আবদুল হাই ওরফে বাচ্চুকে চেয়ারম্যান নিয়োগ দেওয়ার মাধ্যমে। ব্যাংকটিতে অপরাধ চলছে জেনেও তাঁর মেয়াদ বাড়ানো হয়। ২০০৯-১৪ সালে তাঁর মেয়াদে নজিরবিহীন অনিয়মের মাধ্যমে ব্যাংকটির অর্থ লুটে নেওয়া হয়েছে সবার চোখের সামনেই। বাংলাদেশ ব্যাংক, অর্থ মন্ত্রণালয় ও সরকারি বিভিন্ন সংস্থা চেয়ে দেখেছে, কেউ অনিয়ম ঠেকায়নি। এমন সংঘবদ্ধ আয়োজন করে ব্যাংক লুট খুব একটা দেখা যায় না।বিস্তারিত