নিজস্ব প্রতিবেদক।
বুধবার সারাদেশে সকাল–সন্ধ্যা ব্লকেড কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন কোটা বিরোধী আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার বিকেলে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ ঘোষণা দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক নাহিদ ইসলাম।
এসময় নাহিদ ইসলাম দাবি করেন, এটি কোটা বাতিলের আন্দোলন নয়, বাস্তবতার সাথে সমন্বয় রেখে কোটার যৌক্তিক সংস্কার চায় শিক্ষার্থীরা। ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, প্রতিবন্ধী ও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোটা থাকতে পারে উল্লেখ করে ৫% কোটাকে যৌক্তিক বলে দাবি করেন তিনি।
নাহিদ ইসলাম জানান, কোটা বাতিলের সিদ্ধান্ত নির্বাহী বিভাগ থেকেই আসতে হবে। কমিশন গঠনের মাধ্যমে কোটা সংস্কারের সিদ্ধান্ত নিলেই আন্দোলন থেকে সরে আসবে শিক্ষার্থীরা।
সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে গত কয়েকদিন ধরেই রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন শহরে সড়ক আটকে বিক্ষোভ করছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের অবরোধে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ মানুষ।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিধি-১ শাখা নবম গ্রেড এবং ১০ম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সরাসরি নিয়োগে মুক্তিযোদ্ধা কোটা বাতিল করে একটি পরিপত্র জারি করা করে। এতে নারী কোটা ১০ শতাংশ, মুক্তিযোদ্ধা কোটা ৩০ শতাংশ এবং ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল বলে ঘোষণা করা হয়।
পরে ওই পরিপত্র চ্যালেঞ্জ করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান ও প্রজন্ম কেন্দ্রীয় কমান্ড কাউন্সিলের সভাপতি অহিদুল ইসলাম তুষারসহ সাতজন হাইকোর্টে একটি রিট দায়ের করেন। ওই রিটের শুনানি শেষে গত ৫ জুন সরকারের জারি করা পরিপত্র অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেয় হাইকোর্ট। এতে সরকারি চাকরিতে আবারও কোটা ফিরে আসে।
বিষয়টি আপিলে গেলে গত ৯ জুন হাইকোর্টের রায় বহাল রেখে বিষয়টি আপিল বিভাগের বেঞ্চে শুনানীর জন্য পাঠান চেম্বার বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম। ৪ জুলাই আপিল বেঞ্চ জানায়, হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশের পর মামলাটির শুনানি শুরু হবে। বুধবার শুনানীর জন্য দিন ধার্য করা হয়েছে।
মূলত হাইকোর্টের রায় ঘোষণার পর থেকেই আবারও কোটা সংস্কারের দাবিতে জোর আন্দোলন শুরু করেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা।
এর মধ্যে গত সোমবার চলমান শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলন নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন সরকারের ৫ মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রী। এতে অংশ নেন দলের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সামছুন্নাহার চাঁপা এবং তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাত। অবশ্য বৈঠকে কি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তা নিয়ে গণমাধ্যমকে কিছু জানাননি তারা