আন্তর্জাতিক ডেস্ক
সম্প্রতি এক আদালতে জীবনের ভয়াবহ অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা করেছেন ৭২ বছর বয়সি এক নারী। হৃদয়বিদারক সাক্ষ্যে আদালতে প্রকাশিত হলো বছরের পর বছর ধরে নিজের স্বামীর হাতে ঘটে যাওয়া এক ভয়াবহ নির্যাতনের কাহিনী।
জিসেল পেলিকট নামে ফ্রান্সের ওই নারী জানান, তার স্বামী ডমিনিক পেলিকট প্রায় এক দশক ধরে তাকে অচেতনন করে অর্ধশতাধিক পুরুষকে ধর্ষণের সুযোগ করে দিয়েছিলেন।
জিসেল জানান, তার স্বামী খাবার বা মদে ঘুমের ওষুধ মিশিয়ে তাকে অচেতন করতেন এবং পরে অনলাইন চ্যাটের মাধ্যমে বিভিন্ন পুরুষের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাদের বাড়িতে এনে তাকে ধর্ষণ করতে বলতেন।
তিনি জানান, ভয়ঙ্কর এ ঘটনা তার সঙ্গে অন্তত ১০০ বার ঘটেছে এবং ডমিনিক সেগুলোর ভিডিও করেও রাখতেন।
পরে পুলিশ তার কম্পিউটার থেকে প্রায় ২০ হাজার ছবি ও ভিডিও উদ্ধার করেছে। যেখানে এসব নির্যাতনের প্রমাণ রয়েছে।
জিসেল আদালতে বলেন, আমাকে স্রেফ একটা পুতুলের (সেক্সটয়) মতো ব্যবহার করা হয়েছে। আমি আমার নিজের পরিচয় হারিয়েছি। আমি জানি না কখনও নিজেকে আবার ফিরে পাব কিনা।
৭২ বছরের এই নারী জানান, ধর্ষণের সময় এক ব্যক্তি এইচআইভি-তে আক্রান্ত ছিলেন এবং তিনি তাকে ছয়বার ধর্ষণ করেছেন। আমার জীবন চরম ঝুঁকিতে ছিল, কিন্তু এক মুহূর্তের জন্যও কেউ থামেনি।
এ ঘটনার তদন্তের সময় পুলিশ জিসেলের স্বামীর কম্পিউটার থেকে প্রমাণগুলো উদ্ধার করে।
মূলত ২০২০ সালে একটি সুপারমার্কেটে নারীদের স্কার্টের নিচে ভিডিও করার সময় ডমিনিক পেলিকট ধরা পড়ার পর, পুলিশ তার বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তারপরই মূলত এমন ভয়াবহ ঘটনা সামনে আসে।
জিসেলের এ মামলায় তার স্বামী ডমিনিক পেলিকটসহ আরও ৫০ জন পুরুষকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। অভিযুক্তদের বয়স ২৬ থেকে ৭৪ বছরের মধ্যে।
মামলার মূল অভিযুক্ত ডমিনিক এবং ১৪ জন অভিযুক্ত তাকে ধর্ষণের কথা স্বীকার করেছেন। তবে অপর ৩৫ জন পুরুষ দাবি করেছেন, জিসেল নিজেই এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছিলেন।
জিসেলের স্বামী ও অন্য অভিযুক্তদের মধ্যে কয়েকজন আদালতে তাদের দোষ স্বীকার করলেও, বাকিরা নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন। সূত্র: এনডিটিভি